আইএসএলে প্রথম গোল করে ডুডুর হুঙ্কার।
ডেভিড ত্রেজেগুয়ের একটা মেসেজ-ই ডুডু ওমাগবেমিকে তাতিয়ে দিয়েছিল!
দুর্দান্ত গোল। আটলেটিকো দে কলকাতার ডিফেন্সে ত্রাস সৃষ্টি করাই শুধু নয়, মাঠে জোড়া বিশ্বকাপার থাকা সত্ত্বেও ম্যান অব দ্য ম্যাচের সম্মান—এ যেন এলাম, দেখলাম, জয় করলামের মতো ব্যাপার।
এই সাফল্যের রহস্য কি? ম্যাচের পর সেটা নিজেই ফাঁস করে দিলেন ডুডু। বলে দিলেন, “ত্রেজেগুয়ে সকালে একটা মেসেজ করেছিল। সেখানে লিখেছিল, ‘নিজের সেরাটা দাও। গোল করো। ম্যাচ জিততেই হবে।’ বিশ্বকাপজয়ীর কাছ থেকে এরকম মেসেজ পেলে তো নিজের আত্মবিশ্বাসটাই বেড়ে যায়।”
আটলেটিকোর বিরুদ্ধে গোল করে সেলিব্রেশন করতে চেয়েছিলেন যুবভারতীতে উপস্থিত লাল-হলুদ সমর্থকদের সঙ্গে। হেডে অসাধারণ গোল করে টিমকে এগিয়ে দেওয়ার পর অভ্যস্ত ভঙ্গিতে ছুটে গিয়েছিলেন গ্যালারির দিকেও। কিন্তু এ দিন আর তাঁর সঙ্গে উন্মাদনার জোয়ারে ভাসল না সল্টলেক স্টেডিয়াম। যা দেখে হতাশ ডুডু। ম্যাচের পর বলছিলেন, “খুব খারাপ লাগছিল এটা দেখে যে, গোলের পর গ্যালারির একটা লোকও হাত তুলে অভিনন্দন জানাল না।”
ত্রেজেগুয়ে ছিলেন না। স্বভাবতই তাঁর উপর বাড়তি দায়িত্ব ছিল। পাশাপাশি নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদটাও ছিল ষোলো আনা। এর সঙ্গেই পুণে সিটিকে হাল্কা করে নেওয়াটাও তাতিয়ে দিয়েছিল বলে দাবি করলেন ডুডু। “আমাদের গুরুত্ব না দেওয়াটা প্লাস পয়েন্ট হয়েছে। ভাল খেলার জেদ বাড়িয়ে দিয়েছিল। কোচ সেটাই টিম মিটিং-এ বলেছিলেন।”
ডুডু-র পারফরম্যান্সে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত তাঁর সতীর্থ গ্রিসের বিশ্বকাপার কোস্তাস কাতসুরানিস। বলে দিলেন, “ডুডু দুরন্ত ফুটবলার। এ দিন ওর প্রথম একাদশে থাকাটা টিমের শক্তি বাড়িয়েছে।”
এবং কী আশ্চর্য যে ফ্রাঙ্কো কলোম্বা তাঁর উপর আগে আস্থা রাখতে না পারলেও, এ দিন কিন্তু উচ্ছ্বসিত। “ডুডু খুব ভাল স্ট্রাইকার। দারুণ গোল করেছে।” আর ডুডুর আসল ক্লাব ইস্টবেঙ্গলের কোচ আর্মান্দো কোলাসো এ দিন খেলা দেখতে এসেছিলেন যুবভারতীতে। ম্যাচের পর বলে গেলেন, “ডুডুর খেলা দেখে আমি মুগ্ধ। ওর এই ফর্মটা ইস্টবেঙ্গলেও কাজে লাগবে।” কিন্তু নিয়মিত প্রথম একাদশে সুযোগ পান না বলে ডুডু যেন কিছুটা অভিমানী। “কোচ এত দিন হয়তো আমাকে সঠিক ভাবে চিনে উঠতে পারেননি। এ দিনের পর কোচ নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন ডুডু কী?” কথাগুলো বলার সময় যেন সেই অভিমানটাই বেরিয়ে এল।
ডুডু কলকাতাকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আর কোস্তাসের গোলটা একেবারে কোণঠাসা করে দিয়েছিল হাবাসের দলকে। আটলেটিকোর গোলকিপার শুভাশিস রায়চৌধুরি বলছিলেন, “গোলটা বুঝে ওঠার আগেই হয়ে গেল। বাঁক খেয়ে গোলে ঢুকল।” আর যাঁর গোল নিয়ে বিপক্ষ কিপারের এই হাহুতাশ, সেই কোস্তাস আবার বলে গেলেন, “আগে এ রকম গোল অনেক করেছি। এটা স্পেশ্যাল নয়। তবে আটলেটিকোকে হারিয়ে আইএসএলের এই জয়টা এখনও পর্যন্ত সেরা সাফল্য।”
ছবি: উত্পল সরকার