মা লক্ষ্মী শাস্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় দলের মুখ্য প্রশিক্ষক রবি শাস্ত্রী। ফাইল চিত্র
সে ৩৬ বছর আগের কথা। ১৯৮৫ সালের ১০ জানুয়ারি মুম্বই বনাম গুজরাতের মধ্যে চলা রঞ্জি ট্রফির ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে এক ওভারে ছয় ছক্কা মেরে কীর্তি গড়েছিলেন রবি শাস্ত্রী। যদিও ছেলের এমন কীর্তির কথা তাঁর মা লক্ষ্মী শাস্ত্রী নাকি জানতেন না! গর্বের কথা পাড়ার এক ভেলপুরিওয়ালার কাছ থেকে শুনেছিলেন। এত বছর পরে সেটা জানালেন লক্ষ্মী দেবী।
সেই ম্যাচে বিপক্ষের তিলক রাজের এক ওভারে ছয়টা ছয় মেরেছিলেন বিরাট কোহলী, রোহিত শর্মাদের এখনকার প্রশিক্ষক। এমন নজির গড়ে তিনি ছুঁয়েছিলেন স্যর গ্যারি সোবার্সকে। তবে শুধু এক ওভারে ছয় ছক্কা মেরে তিনি ক্ষান্ত ছিলেন না। সেই ম্যাচে মাত্র ১২৩ বলে ২০০ রানে অপরাজিত ছিলেন শাস্ত্রী। মেরেছিলেন ১৩টা চার ও ১৩টা ছয়।
ভারতের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এক ওভারে ছয় ছক্কা মারার সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ফাইল চিত্র।
গত ২৭ মে ৫৯ বছরে পা দিয়েছেন রবি শাস্ত্রী। ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে দেশের একটি প্রথম সারির সংবাদপত্রকে লক্ষ্মী দেবী বলেন, “রবি ঘরে ফিরে ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করতে পছন্দ করত না। যদিও মা হিসেবে ওর কাছ থেকে ক্রিকেটের ব্যাপারে জানতে চাইতাম। কারণ আমি একজন ক্রিকেট পাগল। সেই দিন সন্ধেবেলা ঘরে ফেরার পর রবির কাছ থেকে দিনের বিবরণ জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ও জবাব দিচ্ছিল না। বরং পরের দিন সকালে মাঠে যাওয়ার জন্য জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখছিল। তবে অনেকক্ষণ ধরে জোরাজুরির পর ও আমার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘সন্ধে ৭:৩০ মিনিটের মারাঠি খবর দেখে নিও।’ এর কিছুক্ষণ পর ঘরের কিছু জিনিস আনতে পাড়ার দোকানে গিয়েছিলাম। সেই দোকানে যাওয়ার সময় এক ভেলপুরিওয়ালা রবির কীর্তির কথা জানান।”
বছর খানেক আগে একটি ইউ টিউব চ্যানেলে রবি শাস্ত্রীকে সেই ঘটনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখন তিনি বলেন, “সেই ইনিংস খেলার পর বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করছিলাম। একজন কম বয়সী ছেলে এমন কীর্তি গড়লে কীভাবে উপভোগ করা যেতে পারে সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। আমিও তেমন ভাবেই মাঠের মুহূর্তগুলো উপভোগ করছিলাম। ঘরে ফিরতেই মা বরাবরের মতো জিজ্ঞেস করেন দিনটা কেমন গেল? আমি মজা করে বলছিলাম, ‘মাত্র ৫ রান করেছি।’ আমার কথা শুনে মা হেসে বলে, ‘হ্যাঁ তোমার ৫ রানের কথা পাড়ার ভেলপুরিওয়ালার কাছ থেকে শুনেছি।’ মায়ের কাছ থেকে সেটা শুনে ফের বলেছিলাম, ‘হ্যাঁ ৫ রানের থেকে বেশি করেছি।’ এরপর দুজনেই খুব জোরে হাসতে শুরু করেছিলাম।”