গত এক দশকে প্রথম বার র‌্যাঙ্কিংয়ে পাঁচের বাইরে

ফরাসি ওপেনে অন্য নাদালকে দেখলে কিন্তু অবাক হব না

ক্লে কোর্টে রাফায়েল নাদালের এই দশা দেখার পর একটা গেল গেল রব উঠছে। অ্যান্ডি মারের কাছে রবিবার মাদ্রিদের হারটা ওকে র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম পাঁচের বাইরে নিয়ে গেল। গত এক দশকে যেটা দেখেনি টেনিস বিশ্ব। মাস খানেক আগেও নোভাক জকোভিচের কাছে ওর ঘর-বাড়ি হয়ে ওঠা মন্টে কার্লো মাস্টার্সে হেরেছিল নাদাল। সব মিলিয়ে এ মরসুমে ক্লে কোর্টে এই নিয়ে চারটে ম্যাচ হারল ও।

Advertisement

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৫ ০৩:১১
Share:

মাদ্রিদে হারের পর। ছবি: এএফপি।

ক্লে কোর্টে রাফায়েল নাদালের এই দশা দেখার পর একটা গেল গেল রব উঠছে। অ্যান্ডি মারের কাছে রবিবার মাদ্রিদের হারটা ওকে র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম পাঁচের বাইরে নিয়ে গেল। গত এক দশকে যেটা দেখেনি টেনিস বিশ্ব। মাস খানেক আগেও নোভাক জকোভিচের কাছে ওর ঘর-বাড়ি হয়ে ওঠা মন্টে কার্লো মাস্টার্সে হেরেছিল নাদাল। সব মিলিয়ে এ মরসুমে ক্লে কোর্টে এই নিয়ে চারটে ম্যাচ হারল ও। শেষ কবে নাদালকে ক্লে-তে এত হতশ্রী দেখেছি মনে করতে পারছি না। ইন্টারনেটে দেখলাম ২০০৩ এর পর এ রকম খারাপ ফর্ম দেখা যায়নি।

Advertisement

অনেকে বলছেন, ফরাসি ওপেনের দু’সপ্তাহ আগে ফ্যাব ফোরের দু’জনের কাছে হারটা ‘নাদাল-যুগ’ শেষ হওয়ারই ইঙ্গিত। আমার কিন্তু তা মনে হয় না। আমার মনে হচ্ছে, ফরাসি ওপেনে কিন্তু অন্য নাদালকে দেখা যাবে।

প্রশ্ন উঠবে, তা হলে মাদ্রিদে কেন হারল নাদাল? কেনই বা ইদানীং এত খারাপ খেলছে, তাও আবার ক্লে কোর্টে? আসলে গত এক বছরে কবজি আর অ্যাপেন্ডিক্স অস্ত্রোপচারের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর কোর্টে ফিরেও নিজের ছন্দটা ফিরে পায়নি। আত্মবিশ্বাস এখন তলানিতে ঠেকেছে। রবিবার মাদ্রিদে তাই যে নাদালকে দেখেছি তার সঙ্গে তাই ‘ক্লে কোর্টের সম্রাট’কে মেলানো যায় না। ওর সেই আগ্রাসন, বিষাক্ত শটগুলো তো দেখাই গেল না। লেংথ শটগুলোতেও সেই গতি নেই, তাই আরও সহজে খেলে দিতে পারছে প্রতিপক্ষ। দেখেশুনে মারতে পারছে। সবচেয়ে বড় কথা, তিন বছর আগের নাদাল আর এই নাদাল এক নয়। এই নাদালকে আমরা ক্লে কার্টে হারাতে পারি, এটা মাথায় রেখেই এখন ওর বিরুদ্ধে খেলতে নামছে অন্যরা। অনেক বেশি আক্রমণ করছে। আগে যেটা কল্পনা করার সাহসও দেখাত না কেউ।

Advertisement

তবে ফরাসি ওপেন শুরু হওয়ার আগে এই হারটা এক দিক থেকে নাদালের জন্য শাপে বরই হল। রোলাঁ গারোয় ওর কাঁধে চেপে থাকা ফেভারিটের চাপটা এখন কমবে। অনেক খোলা মনে খেলতে পারবে। সঙ্গে নিজের ভুল-ত্রুটিগুলো শুধরে নিতে সপ্তাহ দুয়েক সময়ও পেয়ে গেল। তাই এখন যে নাদালকে আপনারা দেখছেন, সেই নাদালকে কিন্তু ফরাসি ওপেনে দেখবেন না। হ্যাঁ, অতীতের মতো ও রকম অপ্রতিরোধ্য হয়তো হবে না, কিন্তু এ রকম নড়বড়েও দেখাবে না।

তা ছাড়া ক্লে কোর্টে এ মরসুমে ওর রেকর্ড যতই খারাপ হোক, ফরাসি ওপেনে যখন ম্যাচ লম্বা হতে থাকবে, নাদালও ছন্দে ফিরবে। বিশেষ করে পাঁচ সেটের মতো ম্যারাথন লড়াইয়ে কিন্তু অ্যাডভান্টেজ সব সময় নাদালের দিকে থাকে। অক্লান্ত ভাবে দীর্ঘ ম্যাচগুলোয় লড়াই করতে পারে বলেই। ওকে এই ম্যাচগুলোয় থামানো সহজ নয়। ম্যাচ যত লম্বা হয় ওকে ততটাই চনমনে লাগে। তাই ফরাসি ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে ওর সামনে জকোভিচ, ফেডেরার বা মারে যেই পড়ুক, নাদালের থেকে তার উপর চাপটাই বেশি থাকবে। জিনিয়াসরা তো ঠিক সময়েই জ্বলে ওঠে।

তাই এই অবস্থার পরেও ফরাসি ওপেন ট্রফিটা যদি আরও একবার নাদালের হাতে ওঠে, আমি অন্তত অবাক হব না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement