পর্যবেক্ষণ: বাংলা কোচ অরুণ লালের সঙ্গে লক্ষ্মণ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
শনিবার বাংলার অনুশীলন শেষে দেখা গেল অভিনব দৃশ্য। লাইন দিয়ে মাটিতে শুয়ে পড়লেন মনোজ তিওয়ারি, অভিমন্যু ঈশ্বরনেরা। স্পিকারে চালানো হল বিশেষ মন্ত্র। ক্রিকেটারদের নির্দেশ দেওয়া হল, ‘‘কানে যা শুনবে, ঠিক সেটাই দেখার চেষ্টা করবে।’’ নির্দেশ দিলেন ভিভিএস লক্ষ্মণ।
রঞ্জি ট্রফির আগে বাংলার ক্রিকেটারদের মানসিক দৃঢ়তা বাড়িয়ে তুলতে এই বিশেষ ক্লাস আয়োজন করলেন লক্ষ্মণ স্বয়ং। এর আগে কখনও এই ধরনের ক্লাস করেননি বাংলার ক্রিকেটারেরা। লক্ষ্মণের পরামর্শ, এ বার থেকে প্রত্যেক দিন এ ভাবেই মনঃসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করুক বাংলার ক্রিকেটারেরা।
লক্ষ্মণের বিশেষ ক্লাস করে অভিভূত অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন। বললেন, ‘‘শুনেছি ভারতীয় দলের প্রত্যেক ক্রিকেটার নাকি এই ক্লাস করে। লক্ষ্মণ স্যরের সৌজন্যে আমরাও এই ক্লাস করে উপকৃত।’’ যোগ করেন, ‘‘প্রস্তুতি ঠিক মতো হলেও বাকিদের চেয়ে মানসিকতায় কখনও পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। লক্ষ্মণ স্যর জানিয়েছেন, এ ভাবে প্রত্যেক দিন মনঃসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করলে দৃঢ়তা বাড়বে।’’
আরও পড়ুন: সৌরভ অধ্যায় বাড়ানোর উপর জোর, শ্রীনি কি আইসিসিতে
চলছে ক্রিকেটারদের বিশেষ ক্লাস। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
এ ছাড়াও দলের প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে লক্ষ্মণ জানতে চান, কোথায় সমস্যা হচ্ছে। কেউ বললেন, মানসিকতায়। কারও বক্তব্য টেকনিক নিয়ে। প্রত্যেকের সমস্যাই মন দিয়ে শুনলেন ভারতীয় ক্রিকেটের ‘ভেরি ভেরি স্পেশ্যাল’ ব্যক্তিত্ব। ঈশ্বরন বলছিলেন, ‘‘লক্ষ্মণ স্যরের ক্লাস করে অনেকটা স্বস্তি অনুভব করছি।’’
রঞ্জির প্রাথমিক দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারই অনুশীলনে উপস্থিত ছিলেন। তবে দেখা যায়নি অশোক ডিন্ডাকে। না আসার কারণ দলকে এখনও জানাননি তিনি। কারও সঙ্গে যোগাযোগও করেননি। কোচ অরুণ লাল বলছিলেন, ‘‘ডিন্ডার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও খবর নেই। তবে রঞ্জির নকশা থেকে এখনও ওকে সরিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’ যোগ করেন, ‘‘ডিন্ডা খেলবে কি না, তা ও নিজে এবং নির্বাচকেরা ঠিক করবেন। এমনিতে আমাদের পেসার বিভাগ ভারতের অন্যতম সেরা। ফিটনেস বাড়িয়ে ঈশান পোড়েল দারুণ ছন্দে রয়েছে। নতুন প্রতিভা আকাশ দীপের গতি আমাদের অস্ত্র। তৃতীয় পেসারের জায়গায় মুকেশ কুমার রয়েইছে।’’ অরুণের কথাতেই স্পষ্ট, ডিন্ডাকে ছাড়াই বাংলার পেস বিভাগ সাজিয়ে ফেলেছেন তিনি।
কোচ যদিও উদ্বেগে দলের ব্যাটিং নিয়ে। বলছিলেন, ‘‘সেই বিজয় হজারে ট্রফি থেকে ব্যাটিং বিপর্যয় শুরু হয়েছে। মুস্তাক আলি ট্রফিতেও তার প্রভাব দেখা গিয়েছে। রঞ্জিতে আশা করব, উইকেট কামড়ে দাঁড়িয়ে থাকার মানসিকতা দেখাতে পারবে ব্যাটসম্যানেরা।’’