অরুণার সঙ্গে আনন্দ। —ফাইল চিত্র।
কী বলা যায় একে, ‘দ্য কুইন্স গ্যাম্বিট’?
চৌষট্টি খোপের লড়াইয়ে তিনি চিরকাল নেপথ্যে থাকেন। আরেকজনের বহু লড়াইয়ের আগে পিছন থেকে সব কিছু সামলাতে গিয়ে তাঁর শরীরে চাপ পড়েছে, এমনটাও অতীতে দেখা গিয়েছে। এ বার আর নেপথ্যে নয়। ‘দ্য কুইন্স গ্যামবিট’-এ নেমে পড়লেন অরুণা আনন্দ! গজ-বোড়ে-মন্ত্রীর লড়াইয়ের পাঠ নিচ্ছেন পাঁচবারের বিশ্বজয়ী বিশ্বনাথন আনন্দের স্ত্রী। একটি ওয়েবসাইটের অভিনব লাইভ শো-তে দাবা শিখতে দেখা যাবে তাঁকে। সোমবার সন্ধে সাতটায় যে শো শুরু হওয়ার ঠিক আগে উত্তেজনা অরুণার কণ্ঠে। আনন্দবাজার ডিজিটালকে ফোনে বললেন, ‘‘আমি আগে কখনও দাবা খেলা শিখিনি। এই শো-এর জন্য আমাকে কিছুটা শিখতে হয়েছে। ভিশির কাছেই শিখছি। এই শো’য়ের মধ্যে দিয়ে আরও কিছুটা শিখতে পারব। এটাই এই শো’যের উদ্দেশ্য।’’
দেশের দাবা মহল জানে, আনন্দের সাফল্যের পিছনে অন্যতম বড় ভূমিকা রয়েছে অরুণার। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের অনেক আগে থেকে আনন্দ যাতে পুরোদস্তুর দাবায় মনঃসংযোগ করতে পারেন, তার জন্য পরিবারের সব দায়িত্ব থেকে স্বামীকে অব্যাহতি দেন তিনি। সে সব সময় ছেলে অখিলের দায়িত্বও ছিল তাঁর উপর। চেন্নাইয়ে ম্যাগনাস কার্লসেনের সঙ্গে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের টক্করের আগে দেখা গিয়েছিল আনন্দের উপর যাতে বাড়তি চাপ তৈরি না হয়, তার জন্য প্রাণপাত করছেন অরুণা। সেটা করতে গিয়ে তাঁর ওজন অনেকখানি কমে গিয়েছিল। কিন্তু নেপথ্যচারিণী হঠাৎ প্রকাশ্যে কেন? অরুণার কথায়, ‘‘যারা দাবা খেলা জানে না, তাদের সেই খেলাটা শেখানো হবে। অন্তত একেবারে প্রাথমিক একটা ধারণা দেওয়া যাবে। আমিও জানি না। কিন্তু শিখছি। মনে হয় এই শো’টা উপভোগ্য হবে।’’
আরও পড়ুন: রোহিতের শেষ দুই টেস্টে খেলার সম্ভাবনা বাড়ছে
আরও পড়ুন: নেতা কোহালির নতুন কীর্তি
টুইটারে যে ভিডিয়োটি শেয়ার করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, কালো ঘুঁটি নিয়ে অরুণা একটি চাল দিলেন। আনন্দকে তারিফ করে বলতে শোনা যায়, ‘বাঃ, দুর্দান্ত।’ মজা করে এর পর দর্শকদের প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বলেন, ‘এই একটা চাল খেলতে অনেক সময় নিল’! তার পর এই শো’ সম্পর্কে আনন্দের উক্তি, ‘আমার রানিকে এই খেলাটা শেখাচ্ছি। যে সব কাপ্ল শিখতে আগ্রহী, তাঁরা এতে অংশ নিতে পারেন। কারণ, দাবা হল রাজা-রানির খেলা। একজন দক্ষ পার্টনারই অন্য পার্টনারের থেকে সেরাটা বের করে আনতে পারে।’
লকডাউন এবং তার পর আনলকের প্রক্রিয়া শুরু হলেও ‘নিউ নর্মাল’ থেকে ‘নর্মাল’ হয়নি জীবন। অনেকেই বাড়িতে থেকে নানা রকম সমস্যার মুখে পড়ছেন। সেখানে এই ধরনের প্রয়াস অনেকটাই সেই সমস্যা কাটাতে সাহায্য করতে পারে বলে মনে করছেন অরুণা। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু দাবা খেলা শেখা নয়, আমার মনে হয় পরিবারের সঙ্গে খুব সুন্দর সময়ও এই ভাবে কাটানো সম্ভব। এটাই এই শো’টার উদ্দেশ্য। যেখানে দাবাটা শেখার সঙ্গে খেলাটা নিয়ে গল্প করার মধ্যে দিয়ে অনেকে সুন্দর সময় কাটাতে পারেন।’’
এই না হলে সত্যিকারের কাপ্ল!