চতুর্থ গেম ৪৭ চালে ড্র থেকে দাবার বিশ্বযুদ্ধে কার্লসেন আর আনন্দকে সমান-সমান পয়েন্টে (২-২) রাখলেও, বুধবার রাতে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ‘মর্যাল ভিকট্রি’ ভারতের ভিশিরই হয়েছে।
একে তো দ্বিতীয় গেমই হেরে বারো রাউন্ডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে গোড়ার দিকে পিছিয়ে পড়ার পরে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে তৃতীয় গেমেই হারিয়েছিলেন বিশ্বসেরা কার্লসেনকে। আনন্দের আগের দিনের কার্লসেন-বধ ২০১০-এর পর প্রথম। দিনের হিসেবে পাক্কা ১৪৬২ দিনের ব্যবধানে! ফলে চব্বিশ ঘণ্টা পর কালো ঘুটি নিয়ে চতুর্থ গেম খেললেও আনন্দ সিসিলিয়ান ডিফেন্সে ওপেন করেছিলেন। বাড়তি আত্মবিশ্বাসে। অথচ যেখানে অনেক বিশেষজ্ঞ ভেবেছিলেন, চুয়াল্লিশের আনন্দ নিজের প্রায় অর্ধেক বয়সি মহাপরাক্রমী প্রতিপক্ষের (দাবা ইতিহাসের অন্যতম তরুণ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন কার্লসেনের বয়স ২৩) সঙ্গে এক বার সমতা ফেরাতে পারায় পরের গেমটা আদৌ ঝুঁকি না নিয়ে খেলবেন। বিশেষ করে কালো ঘুটি যখন তাঁর।
কিন্তু সিসিলিয়ান ডিফেন্স দাবামহলে কালো ঘুটিতেও তুলনামূলক বিচারে আক্রমণাত্মক ওপেনিং হিসেবে স্বীকৃত। বলা হয়, এতে বিপক্ষের পজিশনে ভারসাম্যহীনতা তৈরির সম্ভাবনা বেশ ভাল। যদিও তুখোড় কার্লসেন এ দিন চার ঘণ্টা লড়াই শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে বলে দেন, “বিরক্তিকর গেম হল একটা। ম্যাড়ম্যাড়েও!”
যে মন্তব্যটাও কার্লসেনের গেমসম্যানশিপের ভেতরে পড়ছে কি না তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে! কারণ, আনন্দের বিরুদ্ধে আগের বারের চেন্নাই-যুদ্ধের মতোই সোচিতেও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর আগে থেকে মনস্তাত্বিক গেম খেলা শুরু করেছেন নরওয়ের তরুণ। এখন সেটা বোধহয় আরও দরকার কার্লসেনের কাছে। যে-হেতু বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় বিশ্রাম দিনটা আনন্দেরই বেশি খোলামেলা মেজাজে কাটানোর সম্ভাবনা। প্রথম বিশ্রাম দিনটা তিনি কাটিয়েছিলেন এক গেমে পিছিয়ে থেকে। সেখান থেকে ঝলমলে উত্তরণ একটা জয় আর একটা ড্রয়ে।
বৃহস্পতিবারটা তো আনন্দেরই বেশি ফুরফুরে থাকার কথা। সেটা ঘেঁটে প্রতিপক্ষকে বিগড়োতেই কি কার্লসেনের এমন অভাবিত মন্তব্য! জানার জন্য শুক্রবার পঞ্চম গেমের পরিণতির দিকে এখন তাকিয়ে থাকতে হবে।