বদলে সায় নেই, চার দিনের টেস্টের বিপক্ষে কোহালি

শনিবার বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে সাংবাদিক বৈঠকে বিরাট কোহালির কাছেও জানতে চাওয়া হয়, চার দিনের টেস্ট নিয়ে তাঁর কী মত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৫৮
Share:

মগ্ন: পেশির জোর বাড়ানোর অনুশীলন অধিনায়কের। পিটিআই

সব ধরনের ক্রিকেটে সমান দক্ষতার সঙ্গে রান করলেও টেস্টের প্রতি তাঁর অদ্ভুত ভালবাসা। তা স্বীকারও করেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি। কিন্তু বর্তমানে টেস্ট নিয়ে নানা সংস্কার শুরু হয়েছে। ২০১৫-এ শুরু হয় দিনরাতের টেস্ট। গত বছর নভেম্বরে ভারতে প্রথম বার যা আয়োজন করেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এ বার আইসিসি-র প্রস্তাব, পাঁচ দিনের পরিবর্তে টেস্ট শুরু হোক চার দিনের।

Advertisement

২০২৩ থেকে ২০৩১ মরসুমে যে টেস্ট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ হবে, সেখানেই চার দিনের টেস্ট শুরু করার পরিকল্পনা আইসিসি-র। শনিবার বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে সাংবাদিক বৈঠকে বিরাট কোহালির কাছেও জানতে চাওয়া হয়, চার দিনের টেস্ট নিয়ে তাঁর কী মত। ভারত অধিনায়কের সাফ উত্তর, ‘‘আমি একেবারেই চার দিনের টেস্টের পক্ষে নই। সীমিত ওভারের ক্রিকেটের সংস্কার হয়েছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এসে গিয়েছে। ১০০ বলের ক্রিকেট নিয়েও আমার আগ্রহ ছিল না। কিন্তু দিনরাতের টেস্ট ছাড়া আর কোনও সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।’’ যোগ করেন, ‘‘চার দিনের টেস্ট শুরু হলে তিন দিনের টেস্টের প্রস্তাব আসবে। বুঝতে পারছি না, এই প্রস্তাব কোথায় শেষ হবে। এ রকম হতে থাকলে এক দিন টেস্ট ক্রিকেটটাই উঠে যাবে।’’

কয়েক দিন আগেই অস্ট্রেলীয় টেস্ট অধিনায়ক টিম পেন বলেছিলেন, ‘‘চার দিনের টেস্ট হলে এ বারের অ্যাশেজের একটি ম্যাচেরও ফল হত না। কারণ, প্রত্যেকটি ম্যাচই শেষ হয়েছে পঞ্চম দিনে।’’ অফস্পিনার নেথান লায়ন বলে দিয়েছিলেন, ‘‘প্রচণ্ড হাস্যকর সিদ্ধান্ত। চার দিনের টেস্ট মানতে পারব না। প্রথমত সব চেয়ে সমস্যা হাবে বৃষ্টি। দ্বিতীয়ত, অধিকাংশ ম্যাচই নিস্ফল থাকবে।’’ কিংবদন্তি পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রাও চার দিনের টেস্টের বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘‘পাঁচ দিনের টেস্টই আমার পছন্দ। এক দিন কমানোর কোনও মানেই হয় না।’’

Advertisement

সব ধরনের ক্রিকেটে সফল হলেও ভারত অধিনায়ক এখনও পছন্দ করেন, টেস্টের সকালের দু’ঘণ্টা। প্রাণবন্ত পিচে তাঁকে কোনও পেসার পরীক্ষায় ফেললে খুশিই হন। এই পরিস্থিতি সামলেই ২০১৪-১৫ অস্ট্রেলিয়া সফরে চারটি সেঞ্চুরি করে ফিরেছিলেন। এ ধরনের সুযোগের অপেক্ষাতেই থাকেন ভারত অধিনায়ক। কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে বার করে নিয়ে আসা অভ্যেসের মতো হয়ে গিয়েছে তাঁর কাছে। দিনরাতের টেস্ট শুরু হওয়ার পর থেকে সকালের দু’ঘণ্টা ব্যাটসম্যানদের পিচ কামড়ে পড়ে থাকার যে চেষ্টা, তা দেখা যায় না। বরং রাতে নৈশালোকে দ্বিতীয় নতুন বল সামলাতে সমস্যায় পড়েন ব্যাটসম্যানেরা। এ বার টেস্টের একটি দিন কমিয়ে দিলে অনেক পরীক্ষাই হারিয়ে যেতে পারে।

বিরাট জানিয়ে দেন, টেস্টে পরীক্ষামূলক পরিবর্তনের বিরোধী তিনি। মন্তব্য, ‘‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টেস্টের চেয়ে বড় পরীক্ষা আর কোথাও হয় না। ক্রিকেটের ঐতিহ্যের সঙ্গে আপস করা উচিত না।’’

আজ থেকে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হলেও নেটে ব্যাট করার সময় কোনও রকম খারাপ শট নিতে দেখা গেল না তাঁকে। নবদীপ সাইনির প্রথম বল স্ট্রেট ড্রাইভ করলেন। ব্যাট ও বলের আওয়াজ এতটাই মধুর যে, র‌্যাফের স্লোগান ভেদ করেও শোনা গেল। স্পিনারদের বিরুদ্ধেও একই রকম সাবলীল। টেস্টে যে মনঃসংযোগ ও দৃঢ়তা নিয়ে নেটে প্রবেশ করেন, টি-টোয়েন্টির প্রস্তুতিতেও একই ফর্মুলা। যুজবেন্দ্র চহালকে স্টেপ আউট করে কভার অঞ্চলের উদ্দেশে খেললেন। স্লগ সুইপ করলেন কুলদীপ যাদবকে। ওয়াশিংটন সুন্দরের হাওয়ায় ভাসানো ডেলিভারিকে স্টেপ আউট করে এমনই আক্রমণ করলেন যে, অল্পের জন্য কানের পাশ দিয়ে চলে গেল চহালের। সাইটস্ক্রিনে বিরাটের শট আছড়ে পড়ার পরে আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রার্থণা করলেন ভারতীয় লেগস্পিনার। বিরাটের শট যদি তাঁকে খুঁজে নিত, তা হলে রবিবার মাঠে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যেত কি না সন্দেহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement