সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতের কোচ মাতোস ও অধিনায়ক অমরজিৎ। —নিজস্ব চিত্র।
তিন মুখ তিন রকম!
এক জনের মুখে বিপক্ষের প্লেয়ারের প্রশংসা। আর সেই প্রশংসিত খেলোয়াড়ের মুখে তখন হতাশা। আর তাঁরই দলের কোচ তখন আফসোসে ডুবে!
ভারতের প্রথম ম্যাচের শেষে এই তিন মুখই বুঝিয়ে দিল, ম্যাচের সেরা আসলে তিনি-ই। ধিরাজ মইরাংথেম। হ্যাঁ, হেরে গেলেও ভারতীয় এই খেলোয়াড়ের প্রশংসাতেই পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন সকলে। আমেরিকা দলের কোচও তার বাইরে নন।
মাঠের মধ্যেই ভারতীয় কোচ মাতোসকে দেখা যাচ্ছিল, আবেগ আর ধরে রাখতে পারছেন না। বার বার তা বাইরে বেরিয়ে পড়ছিল। সাংবাদিক সম্মেলনে অবশ্য অনেকটাই স্থির দেখাল তাঁকে। দলের খেলা নিয়ে কোনও বিরক্তি নেই। বরং ছেলেদের খেলায় তিনি খুশি। শুধু ফলটা মেনে নিতে পারছেন না! ৩-০ না হলে একটা আশা থাকত। মাতোসের কথায়, ‘‘যদি ম্যাচের ফলটা ৩-০ না হয়ে ২-১ থাকত, তা হলে খেলার চেহারাটাই হয়তো বদলে যেত।’’
আরও পড়ুন
খেলায় পরাজয়, কিন্তু মন জয় ভারতের
এক নম্বর দল হিসেবে জিতেই বিশ্বকাপ শুরু ঘানার
এমন ফল তো হতেই পারত! যদি না আনোয়ারের শট ক্রসবারে লেগে ফিরত। মাতোসের আফসোস হওয়াটাই তো স্বাভাবিক।
আমেরিকার কোচ হয়তো এটাকেই তাঁদের সৌভাগ্য বলে ধরে নেবেন। মার্কিন কোচ হ্যাকওয়ার্থ অবশ্য আটকে থাকলেন ভারতের গোল রক্ষণেই। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, গোলের ব্যবধান আরও বাড়়াবেন। কিন্তু সেই স্বপ্নে জল ঢেলে দিয়েছেন ধিরাজ মইরাংথেম। হ্যাকওয়ার্থ বলছিলেন, ‘‘আজকের ম্যাচের সেরা ধিরাজই। ও একাই বাঁচিয়ে দিয়েছে একাধিক নিশ্চিত গোল। দুটো স্টপারও ভাল খেলেছে।’’ ইউএস কোচকে কিন্তু ধিরাজের সঙ্গে সঙ্গে প্রশংসা করতে হয়েছে মাতোসের ১২তম প্লেয়ারেরও। যা দেখে অবাক বিদেশি কোচ। তিনি বলেন, ‘‘বড়় দলের ম্যাচ হলে এক রকম। কিন্তু, অনূর্ধ্ব-১৭র ম্যাচে এ রকম গ্যালারি! আমি বিশ্বের কোথাও আজ পর্যন্ত দেখিনি।’’ বাজিমাত করল মাতোসের ১২তম প্লেয়ার।
ধিরাজ অবশ্য এত প্রশংসার পরেও হতাশ। জয়টা যে আসেনি! ম্যাচও যে ড্র রাখা যায়নি। তা হলে আর ভাল খেলে কী লাভ?
খেলা শুরুর আগে ওয়ার্ম আপ ভারতীয় দলের।
কথায় আছে গোলের নীচে দাঁড়়িয়ে পুরো মাঠটাকে পরখ করা যায়। ধিরাজ হয়তো সেটাই করছিলেন। তাই সাংবাদিকদের সামনে বলে দিলেন, ‘‘এই টেম্পোটাই আমাদের ধরে রাখতে হবে। যে পেসে আমরা খেলেছি এটাই খেলে যেতে হবে।’’ ধিরাজই দলের হয়ে জানিয়ে গেলেন, তাঁদের এখন লক্ষ্য এই পেস ধরে রেখেই ভুল-ত্রুটি শুধরে নেওয়া। আর, উন্নতি করা। এটাও ঠিক এই ভারতীয় দলকে দেখে কোথাও মনে হয়নি আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। সেটাই আরও এক বার এক কথায় বললেন। একই রকম দৃঢ়তায় বললেন, ‘‘আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলামই।’’
যেটা বললেন না, এখনও তাঁরা ততটাই আত্মবিশ্বাসী।