অপ্রতিরোধ্য: আজ সেমিফাইনালে নামছেন ফে়ডেরার। ছবি: রয়টার্স
পেশাদার খেলাধুলোয় চোট একটা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যে কোনও খেলোয়াড়কে যে কোনও সময় ছিটকে দিতে পারে। তাই মারে আর জকোভিচের চোটের জন্য বুধবার উইম্বলডন থেকে ছিটকে যাওয়ার মধ্যে আমি অস্বাভাবিক কিছু দেখছি না।
আসলে জানুয়ারি থেকে নভেম্বর টেনিস মরসুম চলে। বিশ্বের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে টুর্নামেন্টে খেলতে ছুটে বেড়ানো, প্র্যাকটিস ভীষণ ব্যস্ত সূচি সামলাতে হয় টেনিস খেলোয়াড়দের। ক্লান্ত হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক। চোট-আঘাত লাগাটাও।
মারের তো কোমরে চোটটা টুর্নামেন্টের আগে থেকেই ভোগাচ্ছিল। স্যাম কুয়েরির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সেটটা যদি ও জিততে পারত, তা হলে হয়তো স্ট্রেট সেটে জিতে সেমিফাইনালে উঠতে পারত। অবশ্য তার পরেও চোটের সমস্যা ওকে ভোগাতো না, সেটা বলা যায় না।
জকোভিচের সমস্যাটা আরও গভীর। কনুইয়ের চোটে দ্বিতীয় সেটেই বুধবার ওকে সরে দাঁড়াতে হলেও আমার মনে হয় মানসিক দিক থেকেও একটা সমস্যা ভোগাচ্ছে ওকে। উইম্বলডনে ওর খেলা দেখে সেই আগের জকোভিচকে খুঁজে পাইনি। আত্মবিশ্বাস হারিয়ে গিয়েছে। স্লাইস শটগুলো ম্যাড়মেড়ে লেগেছে। বল সেভাবে হিট করতে পারছে না। জানি না এই অবস্থা থেকে ওকে বার করে আনতে আগাসি কতটা সাহায্য করতে পারবে। আগাসি তো ওর নিয়মিত কোচ নয়। তা ছাড়া এই পর্যায়ে জকোভিচের মতো খেলোয়াড়কে তো আর খেলা শেখানোর কিছু নেই। বড়জোর আগাসি ওর আত্মবিশ্বাসটা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে পারে। প্র্যাকটিসে জোর দিতে পারে। তাই এই অবস্থা থেকে নিজেকে বার করে আনতে পারে একমাত্র জকোভিচই।
আরও পড়ুন: যন্ত্রণা দিত পরিবারকে করা প্রশ্নগুলো
আমার এ বারের উইম্বলডন ফেভারিট নাদাল হেরে গেলেও জাইলস মুলারের বিরুদ্ধে তবু বলগুলো হিট করছিল। দুর্ভাগ্য, প্রচুর লড়েও মুলারকে ও রুখতে পারল না। আসলে উইম্বলডন এমনই। যে দিন যে ভাল খেলবে সে-ই রাজা। বিপক্ষে যে-ই থাক না কেন।
তবে ফেডেরার যে ফর্মে খেলছে আর সেমিফাইনালিস্টের এ বার যা লাইন আপ, তাতে মনে হচ্ছে আট নম্বর উইম্বলডন জেতা থেকে ফেডেরারকে কেউ রুখতে পারবে না। ফেডেরারের সেমিফাইনালের প্রতিদ্বন্দ্বী বার্ডিচ অবশ্য সাত বছর আগে উইম্বলডনে ওকে হারিয়েছে। কিন্তু সেই বার্ডিচ এই বার্ডিচ নয়।
ফেডেরার এখন আর র্যাঙ্কিং নিয়ে ভাবছে না। ওর সামনে একটাই লক্ষ্য এখন গ্র্যান্ড স্ল্যাম। তাই সার্কিটে খুব বেছে বেছে টুর্নামেন্ট খেলছে। গত ছ’মাসে মাত্র সাতটা টুর্নামেন্ট খেলেছে। ক্লে কোর্ট মরসুমেও এই কারণেই বিশ্রামে ছিল যাতে উইম্বলডনে পুরো এনার্জি নিয়ে ঝাঁপাতে পারে। তা ছাড়া ইভান লুবিচিচ-কে কোচিং টিমে আনার পরে ফেডেরারের সার্ভিস আরও ধারালো মনে হচ্ছে।
তাই বলছি, এই ফেডেরারকে রোখার মতো কাউকে দেখছি না।