প্রতিজ্ঞা: ছোট থেকেই জোরে বোলার হওয়ার স্বপ্ন উমেশের। ফাইল চিত্র
যখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট শুরু করেন, তখনও জানতেন না এসজি-র টেস্ট বলকে ঠিক কী ভাবে কাজে লাগাতে হয়। দু’বছর লেগে যায় সেটা রপ্ত করতে। সেই উমেশ যাদবই এখন ভারতীয় দলের প্রধান স্ট্রাইক বোলার।
উমেশ নিজেই অকপটে স্বীকার করেছেন এই কথা। বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘টেনিস বল ও রবার বলেই ক্রিকেট শুরু করি আমি। কুড়ি বছর বয়স পর্যন্তও জানতাম না সিজনড বল দিয়ে কী ভাবে বোলিং করতে হয়।’’
টেস্টে যাঁর ৯২ উইকেট আর ওয়ান ডে-তে ৯৮, তিনি এই কথা বললে তো অবাক লাগারই কথা। তা হলে কী ভাবে লাল চেরিকে কাজে লাগানো শিখলেন? ‘‘তখন কোচেরা খুব সাহায্য করেছিলেন আমাকে। ওখান থেকেই আমার অ্যাকশন নিয়ে কাজ করা শুরু। বিশেষ করে বাঁ হাতের পজিশন নিয়ে কাজ শুরু তখন থেকেই। আমার গতিই যে আমাকে ভাল জায়গায় নিয়ে যাবে, সেই বিশ্বাস ছিল।’’
দেখতে দেখতে ৩৩টি টেস্ট ও ৭০টা ওয়ান ডে খেলা হয়ে গিয়েছে নাগপুরের উমেশের। গত ১২ মাসে যা পারফর্ম করেছেন তিনি, তার পরে এখন তাঁকে নিয়ে আর কারও কোনও প্রশ্নই নেই। বলের গতি নিয়ে কোনও আপসেই যেতে রাজি নন উমেশ। বরং আরও বাড়াতে চান, উমেশ নিজেই জানিয়েছেন সে কথা। ‘‘ছোট থেকেই জোরে বল করতে চেয়েছি আমি। যদিও যেখান থেকে উঠে এসেছি আমি, সেখানে সাধারণত ফাস্ট বোলার তৈরি হয় না। কিন্তু জোরে বল করা নিয়ে অনেক কিছু শিখেছি আমি। ১৩০-১৩৫ কিমি গতিতে বোলিং তো অনেকেই করে। কিন্তু আমি জানতাম ১৪০ কিমিতে বল করতে পারলে অন্য রকম কিছু করে দেখাতে পারব। তাই সে দিকেই জোর দিই আমি।’’
আরও পড়ুন: সীতা-বন্দির বন দেখে নামছে ভারত
কিন্তু শুধু বলের গতি বজায় রেখে গেলেই যে হবে না, জোর দিতে হবে ফিটনেসের উপরেও, তাও বুঝতে পারেন উমেশ। এই ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য, ‘‘শরীরের সক্ষমতা বজায় রাখতে না পারলে যে লম্বা দৌড়ে থাকা যাবে না, সেটা বুঝতে পারি। তাই সে দিকেও জোর দিই। কী ভাবে ম্যাচের পরে শরীরকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা যাবে, সেটাও শিখি। ইঞ্জিনের জন্য যেমন তেল জরুরি, তেমনই ফিটনেস আমার জন্য জরুরি।’’
উমেশ ছাড়াও ভারতীয় পেস ব্রিগেডে রয়েছেন মহম্মদ শামি, ভুবনেশ্বর কুমার ও ইশান্ত শর্মারা। এই সঙ্গীরা দলে থাকায় তিনি উপকারই পাচ্ছেন বলে জানান উমেশ। বলেন, ‘‘যে কোনও উইকেটে আমরা ভাল বোলিং করতে পারি। আমাদের মধ্যে সম্পর্কও খুব ভাল। দলে আমাদের জায়গা নিয়ে কোনও চিন্তায় থাকতেও হয় না কাউকে। প্রত্যেকেই ভাল বোলার। তবে একটা সময়ে আমরা আমাদের লেংথ নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলাম। ঘরের মাঠে এসজি টেস্ট বল নিয়ে বোলিং করতাম এখন কোকাবুরা নিয়ে বল করি। এই বলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। কিন্তু মানিয়ে নিয়েছি আমরা।’’