বিশ্বকাপ হাতে পোগবা ফাইল চিত্র
ছোট থেকেই আর্সেনালের ভক্ত। তবে সেই দলের হয়ে খেলার সুযোগ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরেই তাদের চির প্রতিপক্ষ ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলছেন ফরাসি তারকা পল পোগবা। সমকামী ফুটবলারদের সমর্থনে গলা তুলেছেন আবার মুসলিম ধর্ম নিয়ে অপপ্রচারের বিরোধিতা করেছেন। বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন। কখনও স্যার আলেক্স ফার্গুসনের সঙ্গে মতবিরোধ সামনে এসেছে, আবার ঝামেলায় জড়িয়েছেন হোসে মোরিনহোর সঙ্গেও। তবুও মাঠে বারবার নিজের জাত চিনিয়েছেন। তাঁর দূর থেকে শটে গোল করার দক্ষতাই তাঁকে বিশ্ব ফুটবলের মানচিত্রে ‘পোগবোম’ বলে পরিচিতি এনে দিয়েছে। গোল করে পপ তারকা ড্রেকের অনুকরণে করা ড্যাব-এর ভঙ্গিতে উৎসব বেশ জনপ্রিয়।
সমকামী ফুটবলারদের সমান অধিকারের জন্য সওয়াল করে পোগবা বলেছিলেন, ‘‘ফুটবলারের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চা না করে তাঁকে সম্মান দেওয়া উচিত। ফুটবল মাঠে সকলেই সমান। মাঠে একসঙ্গে চিনা, আফ্রিকান, আমেরিকান, ফরাসি ফুটবলার খেলেন। সকলেই সমান ভাবে এই খেলাটা ভালোবাসেন।’’
ইউরোপা লিগ চলাকালীন রোজা রেখেছিলেন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা পোগবা। সেইসময় সাধারণ মানুষের মধ্যে মুসলিমদের নিয়ে তৈরি হওয়া ধারণা নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করেন ইউনাইটেডের এই ফুটবলার। তিনি বলেন, ‘‘ইসলাম নিয়ে যে চিত্র মানুষের মনের মধ্যে রয়েছে, তা ঠিক নয়। অনেকেই ভাবেন ইসলাম মানেই সন্ত্রাস। তবে আসল সত্যি সেটা নয়।’’
উদ্বাস্তু পরিবারে জন্ম পোগবার। ছোট থেকেই ফুটবলার হতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর জমজ দাদা ফ্লোরেন্টিন ও মাতিহাস ফুটবলার। ফ্রান্সে জন্মালেও বিশ্বকাপ জয়ী এই তারকা তাঁর ফুটবল জীবন শুরু করেন আমেরিকায়। রুই এন ব্রি ক্লাবে। এরপর ইউএস টর্সির অনূর্ধ্ব ১৩ দলের অধিনায়ক হন পোগবা। পরে ইতালিতে এসে লে হাভরে দলের স্ট্রাইকার হিসেবে খেলতে শুরু করেন তিনি। ২০০৯ সালে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন তিনি। ২০১১ সালে সিনিয়র দলে জায়গা পেলেও খুব বেশি সুযোগ পাননি। হতাশ পোগবা ফ্রি ফুটবলার হিসেবে জুভেন্তান্সে চলে যেতে বাধ্য হন। সেখানে চার মরসুম চুটিয়ে খেলেন তিনি। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে রেকর্ড অর্থের বিনিময়ে ফের পোগবাকে দলে নেয় ইউনাইটেড। তবে ২০১৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদে খেলার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন পোগবা। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড় হয়েও প্রকাশ্যেই নিজের ইচ্ছের কথা জানিয়ে দেন তিনি। তবে তাঁর সেই ইচ্ছেও পূরন হয়নি।
১৬ বছর বয়স থেকেই ব্যক্তিগত পুষ্টিবিদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন তিনি। এখনও মরসুম শেষ হলেই ফিজিয়ো থেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে থাকেন তিনি। চোট আঘাতও তাঁকে এখনও খুব বেশি বিব্রত করতে পারেনি। তবে কিছুদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন পোগবা।
২০১৬ সালে ইউরো কাপে এডেরের করা অতিরিক্ত সময়ের গোলে হারতে হয়েছিল পল পোগবার ফ্রান্সকে। এর ঠিক দু বছর পর বিশ্বকাপ জিতে নেয় তারা। দুই দলেই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন পল। বিশ্বকাপ ফাইনালে একটি গোলও করেছিলেন তিনি।