টেস্ট সিরিজে ক্রিকেটের প্রতিটা বিভাগে ভারতীয়দের দাপটের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি নিউজিল্যান্ড। ০-৩ সিরিজ হারের সেই জবরদস্ত ধাক্কা কেন উইলিয়ামসনরা কতদূর কাটিয়ে উঠতে পারে, বা আদৌ পারে কি না, তার পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ থেকে।
এটা ঠিক যে টেস্ট ক্রিকেটের তুলনায় ওয়ান ডে ক্রিকেটটা অন্য খেলা। কিন্তু সাদা বল আর রঙিন পোষাকে নতুন লড়াইয়ে নামার আগে বিধ্বস্ত কিউই টিমের মনোবল চাঙ্গা করে তুলতে হলে ক্যাপ্টেন উইলিয়ামসন আর কিউই টিম ম্যানেজমেন্টকে বাড়তি চেষ্টা করতে হবে। দু’টো তথ্য দেখলে কিছুটা ভরসা পেতেই পারে নিউজিল্যান্ড।
প্রথম, চলতি বছরের শুরুতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে ওরা ভারতের মাটিতেই হারিয়েছিল।
দ্বিতীয়, এক দিনের ক্রিকেটে ওরা গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট। এই ফর্ম্যাটের সঙ্গে টিমের মর্যাদা জড়িয়ে আছে। ওয়ান ডে সিরিজটা তাই ওদের জন্য সম্মান রক্ষার লড়াইও।
ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ড টিমে ফিরছে টিম সাউদি আর কোরি অ্যান্ডারসন। যে দু’জনের উপস্থিতি টিমকে কিছুটা তরতাজা করে তুলবে।
আমার ধারণা, ধর্মশালায় যদি ওয়ান ডে-র আদর্শ পাটা উইকেট হয়, তা হলে কিন্তু লড়াইটা আর টেস্ট সিরিজের মতো একপেশে থাকবে না। বরং ধোনির ভারতকে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে নিউজিল্যান্ড। এমনিতে ধর্মশালার মাঠ ছোট বলে এখানে চার ছয় বেশি হয়। বলা যায় ব্যাটসম্যানরা শট খেলে ভাল দাম পেয়ে থাকে। তা ছাড়া সমুদ্রতট থেকে ধর্মশালা বেশ কিছুটা উঁচুতে বলে তুলে মারলে বল অনেক দূরে গিয়ে পড়ে। তাই বড় রান তোলা কঠিন নয়। অন্য দিকে, এখানকার আবহাওয়ায় বলের মুভমেন্ট ভাল হয় বলে সাধারণত সিম বোলাররা সাহায্য পেয়ে থাকে। আর পিচের কারণে বাউন্সটাও ভাল পাওয়া যায়।
আজও ধর্মশালায় এই কন্ডিশনগুলো খেটে গেলে কিন্তু ভারতকে রীতিমতো লড়াইয়ের মুখে ফেলবে নিউজিল্যান্ড। তবে পিচ যদি শুকনো থাকে আর বল ঘুরবে বলে মনে হয়, তা হলে কেন উইলিয়ামসনরা ভারতীয় স্পিনারদের কী ভাবে সামলায়, তার উপরই সব কিছু নির্ভর করবে।
ধর্মশালার মতো পাহাড়ি জায়গায় শিশির একটা বড় ফ্যাক্টর হতে পারে। বিশেষ করে বছরের এই সময়টায়। তাই টসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
ভারত অবশ্য এই ফর্ম্যাটে এমন এক ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে মাঠে নামছে যার কাছে এগুলোর কোনওটাই নতুন নয়। বরং নিজের অভিজ্ঞতার জোরে সামান্যতম একটা সুযোগও কী করে পুরোপুরি টিমের কাজে লাগাতে হয়, সেটা মহেন্দ্র সিংহ ধোনির খুব ভাল ভাবে জানে। ওয়ান ডে সিরিজে চোটের কারণে কে এল রাহুল আর শিখর ধবনকে পাচ্ছে না ভারত। এই ম্যাচে তো সুরেশ রায়নাকেও পাবে না ধোনি। তা সত্ত্বেও ভারতীয় ব্যাটিংকে কিন্তু দারুণ দেখাচ্ছে। শুরুতে রোহিত, তার পর বিরাট, রাহানে, ধোনি, মণীশ পাণ্ডে। সঙ্গে হার্দিক পাণ্ড্য আর অক্ষর পটেলের মতো অলরাউন্ডার। সব মিলিয়ে জমাট ব্যাটিং ইউনিট। বোলিং আক্রমণকে অবশ্য কোনও ভাবেই সেরা বলা যাচ্ছে না। শামি, অশ্বিন, জাডেজার মতো সেরা অস্ত্রদের বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে এই সিরিজে। ওদের অনুপস্থিতিতে ভারতীয় বোলিংয়ের নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্বটা এখন উমেশ যাদবের উপর থাকছে। যাকে সাহায্য করবে বুমরাহ আর ধবল কুলকার্নি।
অশ্বিন-বিহীন ভারতের এই বোলিং আক্রমণকে উইলিয়ামসনের টিম কী ভাবে সামলায়, সেটা দেখার আগ্রহ রইল।