Tokyo Olympics

Tokyo Olympics :কঠোর পরিশ্রমের ফসল তোলার এই সুযোগ মনপ্রীতদের

উদ্বোধনের পরের দিনই হকিতে আমাদের অভিযান শুরু হয়ে যাচ্ছে

Advertisement

ধনরাজ পিল্লাই

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১ ০৭:১৮
Share:

ফাইল চিত্র।

অতিমারি-আতঙ্ক আর অনেক অনিশ্চয়তা কাটিয়ে অবশেষে এক বছর পরে শুরু হল টোকিয়ো অলিম্পিক্স। বিশ্বের সব চেয়ে বড় ক্রীড়াযজ্ঞে এ বার পরীক্ষা দেওয়ার পালা খেলোয়াড়দের।
উদ্বোধনের পরের দিনই হকিতে আমাদের অভিযান শুরু হয়ে যাচ্ছে। বিশ্বসেরা ভারতীয় হকি তারকারা পাচ্ছেন, এই খেলাটায় আমাদের গৌরবের সেই সব দিন ফিরিয়ে আনার সুযোগ। আমার নিজের ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে চারটি অলিম্পিক্সে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। ভাল করেই জানি, শুরুর এই সময়টায় খেলোয়াড়দের মধ্যে কতটা উত্তেজনা থাকে। সেই সঙ্গে তাদের যুদ্ধ করতে হয় স্নায়ুর সঙ্গেও। তবু দারুণ কিছু করার ইচ্ছেটা থেকেই যায়।
আমি এই মুহূর্তে মনপ্রীত সিংহ ও রানি রামপালের নেতৃত্বে আমাদের পুরুষ ও মহিলাদের দল কী করে, দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। জানি, এই পাঁচ বছর ধরে দু’টি দলই অসম্ভব পরিশ্রম করেছে। এ বার ওদের সামনে সুযোগ নিজেদের প্রমাণ করার। মেয়েরা শনিবার খেলবে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে। আর মনপ্রীতদের প্রতিপক্ষ নিউজ়িল্যান্ড। আমার তো মনে হয়, দু’টিই যথেষ্ট কঠিন ম্যাচ।
পুরুষ বিভাগে নিউজ়িল্যান্ড ছাড়া ভারতের সঙ্গে এ বার পুল ‘এ’-তে রয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা, অলিম্পিক্সে দারুণ সফল অস্ট্রেলিয়া, শক্তিশালী স্পেন ও আয়োজক দেশ জাপান। প্রতিপক্ষ সব ক’টি দলই যথেষ্ট ভাল এবং যে কোনও সময় অঘটন ঘটাতেই পারে। আমাদের কিন্তু সামনের দিকে বেশি দূর পর্যন্ত না তাকিয়ে, একটা করে ম্যাচ নিয়ে ভেবেই নিজেদের তৈরি করতে হবে।
সবাই জানে, আন্তর্জাতিক আসরে আর্জেন্টিনা আর অস্ট্রেলিয়া বারবার নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। ওরা যে অসম্ভব শক্তিশালী, তা না বললেও চলে। আমি কিন্তু বলব, কম যাবে না এমনকি জাপানও। মনে রাখবেন, ওরা চেনা পরিবেশে নিজেদের মাঠে খেলবে। যে কোনও ম্যাচে জাপানিরা তাই চালকের আসনে থাকলে আমি অন্তত অবাক হব না। সঙ্গে নিউজ়িল্যান্ড আর স্পেনও যথেষ্ট প্রতিভা সম্পন্ন দল।
বোঝাই যাচ্ছে, এ বারও আমাদের কাজ কতটা কঠিন। তবু আমি বলব, মনপ্রীতদের দলটা বেশ ভাল। তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার সুন্দর একটা মিশেল রয়েছে ভারতীয় দলে। মানতেই হবে, হকির দক্ষতা আর শারীরিক সক্ষমতায় এই দলটা শেষ ক’বছরে দারুণ উন্নতি করেছে। আমাদের দলে রয়েছে এমন দশ জন, যারা এই প্রথম অলিম্পিক্সে খেলবে। ওদের মধ্যে থেকেই পাঁচ জন অন্তত আমার মনে হয় পার্থক্য গড়ে দিতে পরে। যারা অন্যদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে।
আমাদের আছে মনপ্রীতের মতো আগ্রাসী মিডফিল্ডার। বছরের পর বছর ধরে খেলে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে সত্যিকারের একজন ঠান্ডা মাথার স্থিতধী অধিনায়ক হয়ে উঠেছে মনপ্রীত। ভারতের গোলরক্ষক পি আর সৃজেশের আবার এটা এটা তৃতীয় অলিম্পিক্স। ও কিন্তু আমাদের দলের একটা স্তম্ভ। সঙ্গে ওর অভিজ্ঞতা একটা বড় শক্তি ভারতের। প্রয়োজনে উপযুক্ত পরামর্শও ওর কাছ থেকে পেয়ে যাবে অন্যরা।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বেশির ভাগ গোলই করছে পেনাল্টি কর্নার থেকে। এই অলিম্পিক্সেও তাই অনেক কিছু নির্ভর করবে হরমনপ্রীত সিংহ ও রুপিন্দর পাল সিংহর মতো প্রতিভাবানদের উপরে। দু’জনই দুরন্ত ড্র্যাগফ্লিকার। অভিজ্ঞতার দিক থেকে আমাদের ফরোয়ার্ড লাইন হয়তো একটু পিছিয়ে থাকবে। কিন্তু ব্যাপারটা নিশ্চয়ই পুষিয়ে দেবে মনদীপ সিংহ ও ললিত উপাধ্যায়ের মতো সুদক্ষ খেলোয়াড়েরা। ওদেরকে কিন্তু অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে।
শেষ করছি ভারতীয় দলের সৌভাগ্য কামনা করে। শেষ পাঁচ বছরের পরিশ্রম থেকে ফসল তোলার এই তো সুযোগ মনপ্রীত, রানিদের। (টিসিএম)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement