নাগপুরে বিরাট-প্রস্তুতি। ছবি: উৎপল সরকার
হাই বন্ধুরা! আশা করি আজ ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ম্যাচ উপভোগের জন্য আপনাদের পপকর্ন আর ঝাঁঝালো ঠান্ডা পানীয় ঠিকঠাক রাখা আছে। হ্যাঁ, অবশ্যই এটা মার্চ মাস চলছে— মানে অ্যাকাউন্টস আর ব্যালান্সশিটগুলো মিলিয়েটিলিয়ে বন্ধ রাখার ব্যস্ততা সবার। কিন্তু আমাকে যদি বিশ্বাস করেন, তা হলে দয়া করে আজকের সন্ধেটায় ওই সব হিসেবনিকেশ শিকেয় তুলে রাখুন। তার বদলে সেজেগুজে উঠুন প্রতিভাবান নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ফেভারিট ভারতের লড়াইয়ের সাক্ষী থাকতে। আমি আজ ব্যক্তিগত ভাবে খুশি হতাম, ল্যাপটপের কিবোর্ডে নিজের আঙুলগুলো নাচানোর বদলে নাগপুরের পিচে নীল পোশাকে নাচতে পারলে। কিন্তু এটাই জীবন...
নিউজিল্যান্ডের কথা ভাবলেই আমার মন দু’টো মানুষের দিকে চলে যাচ্ছে। যাদের একজন ক্রিকেট মাঠ ছেড়ে চলে গিয়েছে। অন্যজন এই পৃথিবী ছেড়েই! এই বিশ্বকাপে আমার বন্ধু এবং আমার প্রাক্তন কেকেআর সতীর্থ ব্রেন্ডন ম্যাকালামকে আমি মিস করব। ভারতীয় উইকেটে ও দুর্দান্ত কার্যকর হতে পারত। একই সঙ্গে নেতা হিসেবে নিউজিল্যান্ড ড্রেসিংরুমের স্তম্ভ হয়ে উঠত।
অন্য ভদ্রলোকটি অবশ্যই প্রয়াত মিস্টার মার্টিন ক্রো। যিনি বাইশ গজে প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে খুব কমই পরাস্ত হলেও লিম্ফোমার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পরাস্ত হয়েছেন। আমার মনে পড়ছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের ২০১৫ বিশ্বকাপ ফাইনালের আগের দিন মার্টিন ক্রো একটা দুর্দান্ত কলাম লিখেছিলেন রস টেলর আর মার্টিন গাপ্টিলের উদ্দেশ্যে। দু’জনকে তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন, ‘দুই সন্তান যাদের আমি কখনও পাইনি।’ দুর্ভাগ্যক্রমে মিস্টার ক্রো-র ‘দুই সন্তান’ সে দিন টিমকে বিশ্বকাপ জেতাতে পারেনি, কিন্তু এ বার ফের সেই সুযোগ পেয়েছে।
রিংয়ের অন্য কোণে ভারতীয় টিম। ওরাও আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে। ঘরের মাঠের সুবিধে ওদের দিকে। আর নাগপুরের পিচ এ পর্যন্ত যেমন খেলেছে তাতে ঘরের মাঠের সুবিধেটা ভারতীয় দলের পাওয়াটা হয়তো আরও নিশ্চিত। বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে আফগানিস্তান-জিম্বাবোয়ে ম্যাচে পিচটা পাউডারের মতো শুকনো ছিল। যেটা ভারতের জন্য আদর্শ উইকেট।
আমি বরাবর মেনে এসেছি, ক্রিকেটে বোলাররা ম্যাচ জেতায়। সেটা যে ফর্ম্যাটের ক্রিকেটই হোক। ভারতীয় বোলাররা ফর্মে আছে। এখন সময় নিজেদের স্নায়ুকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। কারণ, কখনওসখনও হার্দিক পাণ্ড্য বা বুমরাহর মতো তরুণ ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে মাতামাতি, উন্মাদনা এগুলো আসল কাজের চেয়ে বড় হয়ে ওঠার আশঙ্কা থাকে। ভারত কঠিন গ্রুপে পড়েছে। অস্ট্রেলিয়া আর পাকিস্তানের দিকে। যা টুর্নামেন্টকে আরও জমজমাট করেই তুলবে।
সুতরাং সোজা হয়ে বসুন। হালকা থাকুন। আর পপকর্নের মুচমুচে আওয়াজের পাশাপাশি ঝাঁঝালো ঠান্ডা পানীয়ের বন্যা বইতে দিন!