ছন্দে: প্রস্তুতি নেওয়ার ফাঁকে হাল্কা মেজাজে সুয়ারেস। মঙ্গলবার। টুইটার
অলিভিয়ের জিহুর বাইসাইকেল কিকের সৌজন্যে চেলসির কাছে প্রথম লেগে ০-১ হেরেছিল আতলেতিকো দে মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ষোলোয় আজ, বুধবার ফিরতি লেগে মুখোমুখি এই দুই দল। খেলা স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে অর্থাৎ চেলসির ঘরের মাঠে। দিয়েগো সিমিয়োনের ক্লাব ইউরোপের সেরা টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে সব চেয়ে বেশি নির্ভর করছে সম্ভবত লুইস সুয়ারেসের উপরে।
বার্সেলোনা থেকে নতুন ক্লাবে খেলতে গিয়ে মরসুমের শুরুটা কিন্তু ভালই করেছিলেন উরুগুয়ান তারকা। যদিও পরের দিকে তেমন সাফল্য পাননি। নতুন ক্লাবে প্রথম ২১ ম্যাচে সুয়ারেস গোল করেন ১৬টি। লা লিগায় প্রথম ২০টি ম্যাচে আতলেতিকো হেরেছে মাত্র একটিতে। যাতে সুয়ারেসের বড় অবদান রয়েছে। এখন ফুটবল মহলের বড় আগ্রহ আতলেতিকো ২০১৪-র পরে প্রথম বার স্পেনের লিগ জিততে পারে কি না তা নিয়ে। চেলসির বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অঘটন কিছু ঘটে কি না, সেটা নিয়েও উৎসাহ কম নয়। পরিসংখ্যান যদিও বলছে, লা লিগায় দুরন্ত শুরু করলেও শেষ আট ম্যাচের তিনটিতে সিমিয়োনের দল জিতেছে। আর এই সময়ে ক্লাব গোল করেছে মাত্র দু’টি। রিয়াল মাদ্রিদ আর অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিরুদ্ধে।
পরিস্থিতি যাই হোক, চেলসি যে সুয়ারেসকেই সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন থোমাস তুহেল। ইংল্যান্ডের পরিবেশে এই উরুগুয়ানা তারকা সবসময়ই দারুণ সফল। লিভারপুলে চার মরসুমে ১৩৩ ম্যাচ খেলে তিনি গোল করেছিলেন ৮২টি। স্বভাবতই তাঁকে নিয়ে চেলসি ম্যানেজারকে বলতে শোনা গেল, ‘‘জন্মগত স্ট্রাইকার বলতে যা বোঝায়, সুয়ারেস হচ্ছে ঠিক তাই। গোল করার ওই রকম মরিয়া চেষ্টা করতে আমি খুব কম স্ট্রাইকারকেই দেখেছি। কখনও ও নিজের উপর সন্তুষ্ট থাকে না।’’ তুহেল প্রাক্তন বার্সা স্ট্রাইকারের এতটাই ভক্ত যে, প্যারিস সাঁ জারমাঁতে থাকতে তিনি চেষ্টা করেছিলেন তাঁর দলে ৩৪ বছরের এই তারকাকে বার্সেলোনা থেকে সই করাতে। ‘‘প্যারিসে সত্যিই ওর খেলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। আমরা শুনেছিলাম ও যে কোনও মুহূর্তে ক্লাব ছাড়তে পারে। বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারকে সই করাতে কে আগ্রহী হবে না? হ্যাঁ আমিও প্রচণ্ড আগ্রহী ছিলাম,’’ বলেন তুহেল।
তাঁর স্বপ্ন অবশ্য সত্যি হয়নি। সুয়ারেস শেষপর্যন্ত স্পেনেই থেকে যান। আর আতলেতিকোর জার্সি পরেন বলেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে তাঁর ব্যর্থতাই কামনা করছেন তুহেল। পাশাপাশি আতলেতিকোর ম্যানেজার সিমিয়োনের মন্তব্য, ‘‘শুধু চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নয়, লুইসের উপস্থিতি মানে দলে একজন অভিজ্ঞকে পাওয়া। ওর নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতাও দারুণ। ও আসায় আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আমাদের প্রতিপক্ষও সব সময় চাপে থাকছে। আশা করছি চেলসির ক্ষেত্রেও ফিরতি লেগে সেটাই হবে।’’
বার্সেলোনা থেকে এক রকম ‘বাতিল’ হয়েই সুয়ারেস এই মরসুমে সই করেছেন আতলেতিকোয়। তাই পুরনো ক্লাবকে জুতসই জবাব দিতে তাঁকে ট্রফি জিততেই হবে। একটুর জন্য লা লিগা খেতাব হাতছাড়া হলে বা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলো থেকে ক্লাব ছিটকে গেলে উরুগুয়ান তারকার কাছে সেটা হবে বিরাট একটা ধাক্কা। ‘‘আমি লড়াই ভালবাসি। সব সময় নিজেকে প্রমাণ করতে চাই। এ বার এমন একটা ক্লাবে সই করেছি যারা অনেক বছর বড় কোনও ট্রফি জেতেনি। তাই এই ক্লাবকে ট্রফি দেওয়াই একমাত্র লক্ষ্য,’’
বলেছেন সুয়ারেস।
এ দিকে, চেলসি বনাম আতলেতিকো ম্যাচ নিয়ে যখন রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি, তখন শেষ ষোলোর অন্য ম্যাচে বেশ খানিকটা পিছিয়ে থেকেই বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে লাজ়িয়ো। ২০০৭-’০৮ মরসুমের পরে প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলতে নামা ইটালির ক্লাব প্রথম লেগে বায়ার্নের কাছে ১-৪ হেরেছে। তাই বুধবার সব অর্থেই এগিয়ে থাকবেন রবার্ট লেয়নডস্কিরা।