জয়ের উল্লাস প্রণয়ের। ফাইল ছবি
সৈয়দ মোদী, প্রকাশ পাড়ুকোন, পুল্লেলা গোপীচাঁদ — কেরিয়ারের তুঙ্গে থাকার সময়েও এঁরা কেউ সফল হননি। কিন্তু কিদম্বি শ্রীকান্ত, এইচএস প্রণয়রা সেটাই করে দেখালেন। ৭৩ বছরের খরা অবশেষে মিটল। টমাস কাপের ইতিহাসে প্রথম বার ফাইনালে উঠল ভারত। ৪৩ বছর আগে শেষ বার কোনও পদক এসেছিল। বৃহস্পতিবারই পদক নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন শ্রীকান্তরা। শুক্রবার তাঁরা আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলেন নিজেদের। শক্তিশালী ডেনমার্ককে হারিয়ে ফাইনালে উঠে গেল ভারত।
এ দিন ব্যাঙ্ককে মালয়েশিয়ার মতো ডেনমার্ককেও ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে ভারত। মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে যাঁরা জিতেছিলেন, ডেনমার্কের বিরুদ্ধে তাঁরাই ভারতকে জয় এনে দিলেন। প্রথম ম্যাচে নেমেছিলেন লক্ষ্য সেন। তিনি এ দিনও হেরে গেলেন। ১৩-২১, ১৩-২১ লক্ষ্য হেরে যান ভিক্টর অ্যাক্সেলসেনের কাছে। এর পর নেমেছিলেন ডাবলস জুটি সাত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডি এবং চিরাগ শেট্টি। তাঁরা ২২-২০, ২১-২৩, ২২-২০ গেমে হারিয়ে দেন কিম অস্ট্রুপ এবং ম্যাথিয়াস ক্রিশ্চেনসেনের জুটিকে।
তৃতীয় ম্যাচে নেমেছিলেন শ্রীকান্ত। তিনি অ্যান্ডার্স অ্যান্টনসেনকে ২১-১৮, ১২-২১, ২১-১৫ গেমে হারিয়ে ভারতকে এগিয়ে দেন। চতুর্থ ম্যাচে আবার স্কোর সমান হয়ে যায়। অ্যান্ডার্স রাসমাসেন এবং ফ্রেডেরিক সোগার্ড জুটির কাছে ১৪-২১, ১৩-২১ গেমে পরাজিত হন কৃষ্ণ প্রসাদ গর্গ এবং বিষ্ণুবর্ধন গৌড়। ভারতকে বাঁচানোর দায়িত্ব ফের এসে পড়েছিল সেই এইচএস প্রণয়ের কাছেই। তিনি শেষ ম্যাচে ১৩-২১, ২১-৯, ২১-১২ গেমে রাসমাস জেমকে-কে হারিয়ে ভারতকে ফাইনালে তুলে দেন। নতুন ইতিহাস তৈরি করল ভারতীয় দল।
টেনিসের ডেভিস কাপ এবং ফুটবল বিশ্বকাপ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৩৯ সালে ব্রিটেনের ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় স্যর জর্জ অ্যালান টমাস এই প্রতিযোগিতার সূচনা করেছিলেন। প্রথম দিকে মাত্র কয়েকটি দেশ নিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে দেশের সংখ্যা বাড়তে থাকে। প্রথম দিকে শুধু পুরুষদের প্রতিযোগিতা হলেও ১৯৮৪ সাল থেকে মেয়েদেরও একই ধাঁচে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। নাম দেওয়া হয় উবের কাপ। প্রথম দিকে তিন বছর অন্তর এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হলেও ১৯৮৪ সাল থেকে তা দু’বছর অন্তর আয়োজন করা হচ্ছে।
টমাস কাপে সব থেকে সফল দেশ ইন্দোনেশিয়া। ২৯ বার খেলে ১৪ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। ৬ বার রানার্স। ঘটনাচক্রে তাদের বিরুদ্ধেই ফাইনাল খেলতে হবে শ্রীকান্তদের। এর পর রয়েছে চিন। তারা ১০ বারের বিজয়ী। মালয়েশিয়া ৫ বারের চ্যাম্পিয়ন। ডেনমার্ক ও জাপান এক বার করে বিজয়ী হয়েছে। ভারত এর আগে কোনও দিন টমাস কাপের ফাইনালে ওঠেনি। প্রতিযোগিতার ৭৩তম বছরে এসে সেই খরা অবশেষে মিটল। ইতিহাস তৈরি হয়েই গিয়েছে। এ বার শ্রীকান্তদের সামনে সেই ইতিহাস আরও গৌরবান্বিত করার সুযোগ।