টমাস কাপ হাতে ভারতীয় দল। ছবি: এএফপি
প্রথম বার হাতে টমাস কাপ। রুপোলি রঙের ট্রফিটা হাতে নিয়ে তার গায়ে কী যেন একটা খুঁজতে শুরু করলেন চিরাগ শেট্টিরা। খুঁজে পেলেন? হ্যাঁ, পেলেন। ট্রফির গায়ে খোদাই করা ২০২২ সালের টমাস কাপ জয়ী দলের নাম। ভারত।
১৯৪৯ সালে শুরু হওয়া একটি ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা। কিন্তু সেই টমাস কাপের সেমিফাইনালেই কোনও দিন উঠতে পারেনি ভারত। কোনও পদকই ছিল না এই প্রতিযোগিতায়। সেই টমাস কাপের ফাইনালে উঠল ভারত। রবিবার হেরে গেলেও রুপো পেয়ে (জিতে নয়) ইতিহাস তৈরি করতে পারতেন লক্ষ্য সেনরা। কিন্তু তাতে লক্ষ্যভেদটাই তো হত না। আর ভারতীয় ব্যাডমিন্টন জানে সোনা হারানোর যন্ত্রণা। অলিম্পিক্সে পিভি সিন্ধুর পদক পেয়েও বিষণ্ণ মুখটা ভোলা সম্ভব নয়।
তাই শ্রীকান্তরা জিততে নেমেছিলেন। হার না মানা লড়াই করতে নেমেছিলেন। সেটাই করলেন। শেষ পয়েন্ট অবধি করলেন। সেই লড়াই জিতে পুরস্কারের মঞ্চে ভারত। এই ট্রফি কোনও এক লক্ষ্য, চিরাগ বা শ্রীকান্তের নয়, এই ট্রফি ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের। তাই এই একক খেলাতেও দল হিসেবে খেলতে নেমে একাত্ম হয়ে যেতে হয় সকলকে। কতটা একাত্ম হয়েছেন, তা বোঝা যায় হাতে পদক নেওয়ার পর যখন লক্ষ্যরা একে অপরকে তা পরিয়ে দেন। কোভিড বিধি মেনে আয়োজক সংস্থার কেউ পদক পরিয়ে দেন না। হাতে তুলে দেওয়া হয় পদক। সেই পদক নিজে না পরে একে অপরের গলায় পরিয়ে দেন শ্রীকান্তরা।
গলায় পদক, উত্তরীয়, হাতে স্মারক, আর ঠোঁটে জাতীয় সঙ্গীত। ভারতের পতাকা সবার উপরে উড়ছে আর গোটা ভারতীয় দল গান করছে। সেই সঙ্গে চোখ ছলছল গোটা দলের। সব লড়াই, হুঙ্কার, চিৎকার, চোখে চোখ রাখা শেষে এক বৃষ্টি ভেজা আনন্দ। সব কিছু শান্ত করে দিয়ে কান্নার জল চোখে। কিন্তু জাতীয় সঙ্গীত শেষ হতেই মুখে কাঠিন্য। ২০ বছরের লক্ষ্য, ২৯ বছরের শ্রীকান্তরা দিন গুনতে শুরু করে দিলেন। আর তো দু’বছর। অলিম্পিক্স রয়েছে, টমাস কাপ রয়েছে, ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের বিশ্বশাসন জারি রাখতে একাধিক ট্রফি যে জিততেই হবে। ইন্দোনেশিয়া ১৪ বার টমাস কাপ জিতেছিল। তাদেরকেই কোর্টের বাইরে পাঠিয়েছেন শ্রীকান্তরা। এ বার যে গোটা বিশ্ব শাসনের সময়। তরুণ ভারতীয় দল টমাস কাপ হাতে সেই প্রতিজ্ঞাই নিয়ে নিল যেন।