যা পারলেন না ডোয়েন ব্র্যাভোদের দেশের বোর্ড কর্তারা, তা পারলেন তাঁরা এমনই দাবি ভারতীয় বোর্ড কর্তাদের। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের বিদ্রোহ দমনে নাকি তাঁদের কৃতিত্বই বেশি। পাশাপাশি বোর্ড সূত্রের খবর, স্যামুয়েলস, ব্র্যাভোদের বাগে পেতে আইপিএল-অস্ত্রও নাকি ব্যবহার করা হয়েছে।
বুধবার কোচিতে প্রথম ওয়ান ডে-তে খেলতে নামার আগের দিনই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের বেঁকে বসার খবর পান বিসিসিআই-এর শীর্ষকর্তারা। শেষ পর্যন্ত তাঁরাই ব্র্যাভোদের খেলতে রাজি করান বলে দাবি বোর্ডকর্তাদের। তবে সমস্যা যেহেতু এখনও পুরোপুরি মেটেনি, তাই ভারতীয় বোর্ডের কর্তারাই এ বার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের সমস্যা মেটাতে মাঠে নেমে পড়েছেন। সচিব সঞ্জয় পটেল নিজেই বৃহস্পতিবার বলেন, “চলতি সিরিজ নিয়ে আর কোনও অনিশ্চয়তা নেই। আমরা ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের আশ্বস্ত করেছি যে, ওদের বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে আমরা ওদের সমস্যা মিটিয়ে দেব।” তবে বৃহস্পতিবার দেশের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে কেরল ক্রিকেট সংস্থা বোর্ডের নির্দেশে ব্র্যাভোদের বকেয়া মিটিয়ে দিয়েছে বলে যে খবর প্রচারিত হয়েছিল, তা উড়িয়ে দিয়ে বোর্ড সচিব বলেন, “এটা নেহাতই গুজব। কাউকে কোনও টাকা দেয়নি বোর্ড। আর দেওয়ার পরিকল্পনাও নেই। এটা ওদের ব্যাপার। আমরা শুধু ওদের সমস্যা মেটানোর রাস্তা বাতলে দিতে পারি। এবং সেটাই করার চেষ্টা করব।”
তবে যে অস্ত্র প্রয়োগ করে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারদের বুধবার মাঠে নামতে রাজি করানো হয় বলে বোর্ডের অন্দরমহলের খবর, সেই অস্ত্র হল আইপিএল। কোচিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের যে এগারো জন মাঠে নামে, তাঁদের কয়েক জনকে বাদ দিলে বেশিরভাগই আইপিএলের ক্রিকেটার। স্মিথ ও ব্র্যাভো খেলেন চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে। পোলার্ড মুম্বইয়ে। চলতি সিরিজ ভেস্তে গেলে তাঁদের আইপিএল ভবিষ্যত্ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে, বিসিসিআই কর্তারা নাকি কার্যত এমনই ইঙ্গিত দেন ব্র্যাভোদের। সঙ্গে অবশ্যই ক্যারিবিয়ান বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে বসে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস। বৈঠকে উপস্থিত এক বোর্ডকর্তা জানান, ব্র্যাভোদের নাকি সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজকে নিজেদের দাবি আদায়ের পথ হিসেবে কিছুতেই ব্যবহার করতে দেবে না বিসিসিআই। বোর্ডের এই চালেই মাত হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। এবং এতেই বুধবার সকালে তাঁরা মাঠে যাওয়ার জন্য টিম বাসে উঠতে রাজি হয়ে যান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার খবর, দিল্লিতে পৌঁছে ক্যারিবিয়ান শিবির ফুরফুরে মেজাজে। বিশেষ করে বুধবারের ম্যাচে জয় তাঁদের চাঙ্গা করে দিয়েছে।
অন্যদিকে ভারতীয় শিবির কিছুটা হলেও চাপে। এই ম্যাচে হারের প্রধান কারণ হিসেবে ক্যাপ্টেন ধোনি তাঁর দলের ব্যাটিংকেই দায়ী করছেন। তাঁর বক্তব্য, “এই মাঠে, এই উইকেটে ৩২২ বড় টার্গেট নয়। শুরুটা ভালই করেছিলাম আমরা। কিন্তু রাহানে রান আউট হওয়ার পর থেকে আমাদের ইনিংসে যে ধস নামে, তা বন্ধ করতে পারিনি। আরও ভাল ব্যাট করা উচিত ছিল আমাদের।” ভারতীয় ব্যাটিংয়ের দশা দেখে উদ্বিগ্ন সুনীল গাওস্কর অবশ্য ফর্মে না থাকা বিরাট কোহলিকে চার বা পাঁচ নম্বরে দেখতে চান। এক টিভি চ্যানেলে তিনি বলেন, “ওয়ান ডে ক্রিকেটে সব রাস্তা খোলা রাখতে হয়। শামি, যে বোলিং শুরু করে, তাকে চেঞ্জ বোলার হিসেবে ব্যবহার করা গেলে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদেরও নীচে নামানো যেতে পারে। চার বা পাঁচে নামুক বিরাট।”
ফিরোজ শাহ কোটলায় শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেটে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঘাস দেখা গেলেও ম্যাচের আগে তা ছেঁটে ফেলা হবে বলে জানালেন কিউরেটর অঙ্কিত দত্ত। বললেন, “ওয়ান ডে-র উপযোগী উইকেটই হবে। শুরুতে পেসাররা যেমন সাহায্য পাবে, ব্যাটসম্যানরাও রান পাবে। কাল ও পরশু উইকেটে রোলার চালাব। গত কয়েক দিনে দিল্লির আবহাওয়া অনেকটা বদলেছে। তাই যতটা পারব উইকেট শুকনো রাখার চেষ্টা করব।” তবে কোটলায় এই সময় শিশির বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে বলে জানালেন কিউরেটর।