থিয়েরি অঁরি। ছবি: রয়টার্স।
শহরে তারার হাট। কখনও রিভাল্ডো তো কখনও থিয়েরি অঁরি। আইএসএল-এর হাত ধরে তো ফোরলান, পোস্তিগারা রয়েছেনই। সেই মুকুটে একদিনের জন্য নতুন পালক সংযোজন অঁরির। এসেছেন নিজের ব্র্যান্ডের প্রচারে। তার মধ্যেই ফুটবল নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি। সেই তালিকায় রয়েছে ব্যালন ডি’ওর, রয়েছেন মেসি, রোনাল্ডো থেকে নেইমার, গ্রিজম্যান। মোরিনহো থেকে আর্সেন ওয়েঙ্গার। সঙ্গে কখনও যুক্ত হল ভারতীয় ফুটবলের সাফল্যও।
ভরা আইএসএল বাজারেই ভারতে পা রেখেছেন তারকা এই ফুটবলার। তাও আবার ফুটবলের মক্কায়। সেখানে যে নানা বিষয়ে প্রশ্ন উড়ে আসবে তাঁর দিকে তা বলাই বাহুল্য। যদিও আইএসএল-এর কোনও দল যে তাঁকে এখনও খেলার আবেদন জানায়নি সেটা স্পষ্টই মেনে নিলেন। ডাক পেলে আসবেন কি না সে নিয়েও খোলসা করে বলতে চাইলেন না। বরং জানিয়ে দিলেন, ‘‘আমার কাছে কোনও অফার এখনও নেই।’’ এখানেই থামলেন। বাকিটা বিশ্ব ফুটবল।
ব্যালন ডি’ওর-এ মেসি, রোলান্ডো, নেইমারের সঙ্গে লড়ছেন গ্রিজম্যান। অঁরি কিন্তু ভরসা রাখছেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ডের উপরও। বলে দিলেন, ‘‘যতই মেসি, নেইমার, রোনাল্ডো থাকুক না কেন ওদের সঙ্গে ব্যালন ডি’ওর-এর সমান অংশীদার অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যানও।’’ সম্প্রতি লা লিগার সেরা প্লেয়ারের শিরোপা উঠেছে তাঁর মাথায়। ব্যালন ডি’ওর পেলেও অবাক হবেন না অঁরি। এর মধ্যেই মোরিনহোরও পাশে দাঁড়ালেন ফরাসি স্ট্রাইকার। তাঁর মতে, এখনই তাঁকে অভিযুক্ত করা উচিত নয়। বলেন, ‘‘ওঁকে আরও একটু সময় দেওয়া উচিত। এখনই বলা যাবে না ও ব্যর্থ। বরং প্লেয়ারদের ওঁর টেকনিকের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। ওঁর কোচিংকে চেনা উচিত।’’ ইতিমধ্যেই মোরিনহোর ট্রেনিং পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন তুলছেন দলের ফুটবলাররাই। সে কারণেই হয়তো এই কথা বলছেন অঁরি। শুধু মোরিনহো নন আর্সেন ওয়েঙ্গারের প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ তিনি। যদিও তাঁর অবসরের প্রশ্নে এখনই একমত নন তিনি। বলেন, ‘‘তিনি অবসর নেবেন কি না সেটা তিনিই বলতে পারবেন। কিন্তু সেটা নিয়ে বলার সময় এখনও আসেনি।’’
আইএসএল-এর মাঠে নিতা অম্বানীর সঙ্গে থিয়েরি অঁরি। ছবি: পিটিআই।
বিশ্ব ফুটবল থেকে একটা সময় ফিরেও এসেছেন ভারতীয় ফুটবলে। যদিও ভারতের ফুটবল নিয়ে তেমন কোনও ধারণাই নেই তাঁর। সেটা স্বীকারও করে নিয়েছেন তিনি। তবুও আইএসএল-এর সুবাদে বিশ্ব ফুটবলে ভারত আজ পরিচিত নাম। শুনেছেন বেঙ্গালুরু এফসির এএফসি কাপ ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার কথা। তাতে একটুও উচ্ছ্বসিত নন তিনি। বরং ধারাবাহিকতার পক্ষেই প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বকাপ জয়ী এই স্ট্রাইকার। ‘‘একটা সাফল্য দিয়ে কিছু হবে না। সাফল্যে ধারাবাহিকতা আনতে হবে। এমন কিছু করতে হবে যেটা পুরো বিশ্বে সাড়া ফেলে দেবে।’’
ভারতের কাছ থেকে তেমনই কিছু চাইছেন অঁরি। দেখবেন আইএসএল-এর ম্যাচও। সাংবাদিক সম্মেলন শেষে সরাসরি চলে গেলেন রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে। কলকাতা ও মুম্বই দলের প্লেয়ারদের সঙ্গেও মিলিত হবেন তিনি। তাঁর আগে নিজের দেশের ফুটবল বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন ধেয়ে আসবে না তা আবার হয় নাকি? তাই হয়তো ২০০৬এর সেই মাতেরাজ্জি-জিদান থেকে সম্প্রতি করিম বেঞ্জেমার দল থেকে বাদ পড়া প্রসঙ্গ উঠে এল। সে দিন তিনি ছিলেন মাঠে। দেখেছিলেন মাতেরাজ্জিকে জিদানের ঢুঁসো। যদিও দাঁড়ালেন নিজের সতীর্থর পাশেই। বলেই দিলেন, ‘‘নিশ্চয়ই এমন কিছু বলেছিল যাতে জিজু ওটা করেছিল।’’ তবে বেঞ্জিমার জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। বরং কোচের সিদ্ধান্ত বলেই এড়িয়ে গিয়েছেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার সিটির উঠে আসাতেও উচ্ছ্বসিত তিনি। আশা করাই যায় আইএসএল-এর খেলাও তাঁকে ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যত নিয়ে আশাবাদী করবে। আগামী মরসুমে কোনও দল ডাকলে হয়তো দেখাও যেতে পারে অঁরিকে ভারতের মাটিতে খেলতে।
আরও খবর
যুব বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য যুবভারতীকে সবুজ সঙ্কেত দিল ফিফা