আর্সেন ওয়েঙ্গারের মনে হয়, আমাদের টিম নিয়ে প্রবল সমস্যা আছে। কিছু লোক থাকে যাদের কাজই হল, নিজেদের সব ছেড়েছুড়ে টেলিস্কোপ হাতে অন্যদের পরিবারের উপরে নজরদারি করা। উনিও তাই। কিছুই না, এটা আসলে ওঁর অসুখ! ব্যর্থতার স্পেশ্যালিস্ট তো, তাই।
মোরিনহোর আসলে মাথার ঠিক নেই। কী বলছে, কেন বলছে, ও নিজেই জানে না। বাস্তবের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। আসলে নির্বোধদের হাতে যদি আপনি সাফল্য তুলে দেন, লাভের লাভ কিছু হয় না। বুদ্ধি তার বাড়ে না, উল্টে আরও নির্বোধ হয়ে যায়!
উপরের ভয়ঙ্কর বাগযুদ্ধ কাদের মধ্যে বলার দরকার নেই। আসলে এক-আধ দিন তো নয়, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে এটা ঘটেছে। কখনও প্রথম জন তীব্র বিদ্রূপে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছেন দ্বিতীয়কে। কখনও বা আবার দ্বিতীয় রক্তাক্ত করে ছেড়েছেন প্রথমকে, অতিনাটকীয় পরিহাসে। মজার হল, শুক্রবার থেকে আবার এই জ্বলন্ত বক্তব্যগুলো ঘুরছে নানা কাগজে, ওয়েবসাইটে। শনিবার তো আবার তাঁদের দু’জনের মুখোমুখি দেখা। আজ যে আবার মেগা-যুদ্ধ।
আজ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড বনাম আর্সেনাল। আজ আবার হোসে মোরিনহো বনাম আর্সেন ওয়েঙ্গার!
এমনিতে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড লড়াইয়ের আগে মোরিনহোর ইউনাইটেডের অবস্থা যে দারুণ কিছু, বলা যায় না। টিমের সেরা স্ট্রাইকার জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচকে কার্ড সমস্যার জন্য এই ম্যাচে পাওয়া যাবে না। বিরক্ত ইব্রা এখন ফুটবল মাঠ ছেড়ে স্নো-মোবিলিংয়ে ব্যস্ত। কিন্তু তাতে দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান চুপচাপ থাকবেন, হয় না কি? না, কপির উপরের মল্লযুদ্ধের আদলে ওয়েঙ্গারের বিরুদ্ধে নামেননি মোরিনহো। কিন্তু খোঁচা মেরেছেন। ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে বলে দিয়েছেন, ‘‘মিস্টার ওয়েঙ্গারকে আপনারা খুব সম্মান করেন দেখছি। যা আমাকে করেন না। আমার শেষ লিগ জয় কিন্তু আঠারো মাস আগে, আঠারো বছর আগে নয়!’’ এক ঝটকায় মনে করিয়ে দেওয়া, ওয়েঙ্গারের শেষ প্রিমিয়ার লিগ খেতাব কবে এসেছিল। অর্থাৎ— ২০০৪ সালে!
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড কোচকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, ওয়েঙ্গারের বিরুদ্ধে তাঁর দুর্দান্ত রেকর্ড নিয়ে। এগারোটা প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে মোরিনহোকে হারাতে পারেননি আর্সেনাল কোচ ওয়েঙ্গার। ব্যাপারটা তাঁকে কতটা তাতিয়ে দেবে? শুনে শ্লেষাত্মক ভাবে মোরিনহো বলে দেন, ‘‘আমি কোনও কোচের বিরুদ্ধে খেলি না। আমার টিম খেলে।’’ পাশাপাশি মোরিনহো জানাচ্ছেন, আর্সেনাল ম্যাচের জন্য ওয়েন রুনি ফিট। তাঁর খেলতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে বেশ কিছু ফুটবলারকে চোট-আঘাতের জন্য পাওয়া যাবে না। ‘‘কিন্তু সে সব নিয়ে আমি কাঁদতে বসব না। যারা আছে, তারা খেলবে। এটা তাদের কাছে সুযোগ নিজেদের প্রমাণের,’’ বলে দিয়েছেন মোরিনহো।
ঘটনা হল, ওয়েঙ্গার বনাম মোরিনহো যেখানে মুখোমুখি সেখানে ম্যাচের খবরে আর কার কতটুকু আগ্রহ। এ বারও তাই। প্রচারের পুরো স্পটলাইট দুই মেগা কোচের উপর। আর তা ছাড়া শুধু অতটুকু বলে থেমে তো যাননি মোরিনহো। ‘‘আরে, কোন কোচের টিমের বিরুদ্ধে আমার রেজাল্ট ভাল না খারাপ, তাতে কিছু আসে যায় না। আমার টিম শেষ পর্যন্ত কী করল, ক’টা খেতাব জিতল, সেটাই আসল।’’ বার্তা স্পষ্ট— ওয়েঙ্গারকে মোরিনহো ধর্তব্যের মধ্যেই আনছেন না! আর ওয়েঙ্গার নিজে? মোরিনহোর শ্লেষের জবাবে কিছু বলেননি। অন্তত শুক্রবার রাত পর্যন্ত কিছু বলেননি।
উত্তরটা কি তা হলে আজ মাঠে দেবেন আর্সেনাল কোচ?