ইডেন বোঝাল টেস্ট অক্ষত: পুজারা

শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে এসে পুজারা বললেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেট দেখতে যখন এত বিশাল সংখ্যক মানুষ স্টেডিয়ামে আসেন, সেটা ক্রিকেটারদের প্রেরণা জোগায়। আমি মনে করি, টেস্ট ক্রিকেট এখনও অক্ষত এবং ইডেনের পরিবেশ এই বার্তা দিল, টেস্ট ক্রিকেট জনপ্রিয়ই থাকবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০৬
Share:

চেতেশ্বর পুজারা

টেস্ট ক্রিকেট যে এখনও ফুরিয়ে যায়নি তা বুঝিয়ে দিয়েছেন ইডেনের সমর্থকেরা। গত দু’দিনে ভরা গ্যালারির উন্মাদনা আবেগপ্রবণ করে তুলেছে চেতেশ্বর পূজারাকে।

Advertisement

শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে এসে পুজারা বললেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেট দেখতে যখন এত বিশাল সংখ্যক মানুষ স্টেডিয়ামে আসেন, সেটা ক্রিকেটারদের প্রেরণা জোগায়। আমি মনে করি, টেস্ট ক্রিকেট এখনও অক্ষত এবং ইডেনের পরিবেশ এই বার্তা দিল, টেস্ট ক্রিকেট জনপ্রিয়ই থাকবে।’’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমরা ক্রিকেটারেরা এই পরিবেশটা দারুণ উপভোগ করেছি। বিশেষ করে ফিল্ডিং করার সময়। ব্যাটিং করার সময় বলের দিকে চোখ থাকে। ফলে অন্য কিছু দেখার সুযোগ থাকে না। কিন্তু ফিল্ডিং করার সময় সমর্থকদের এই উৎসাহ এবং উন্মাদনা ম্যাচের মেজাজ আমূল পাল্টে দেয়। বিশেষ করে বোলাররা উৎসাহে টগবগ করে ফুটতে থাকে। ইডেনের এই পরিবেশ আমার কাছে নতুন এবং অসাধারণ অভিজ্ঞতা।’’

ভারতের প্রথম দিনরাতের টেস্ট ম্যাচের প্রথম হাফসেঞ্চুরি করেছেন পুজারা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৫৫ রান করে ফিরে গিয়েছেন ড্রেসিংরুমে। গোধূলিতে গোলাপি বলের সঙ্গে মোকাবিলা করার পাশাপাশি নৈশালোকেও তিনি ব্যাট করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে পুজারা জানিয়ে দিলেন, নৈশালোকে গোলাপি বলের বিরুদ্ধে ব্যাট

Advertisement

করা কঠিন।

ভারত-বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে পুজারা বলেন, ‘‘শেষ রাতে নৈশালোকে ব্যাট করার সময় গোলাপি বল দেখতে অসুবিধা হয়েছে। টিভিতে খেলা দেখার সময়ও একই অভিজ্ঞতা। প্রথম সেশনে লাল অথবা গোলাপি বল দেখা অনেক সহজ। কিন্তু আলো কমলেই বল অনেক বেশি সুইং করতে শুরু করে। একজন ব্যাটসম্যানকে যা বড় পরীক্ষায় ফেলে দেয়।’’ পুজারা যোগ করেন, ‘‘দিনের আলোয় টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা ছিল এত দিন। তাই নৈশালোকে খেলার সময় বেশ অসুবিধা হয়েছে।’’

মহম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মা ও উমেশ যাদবকে সামলাতে গিয়ে একাধিক বার পরাস্ত বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানেরা। প্রথম ইনিংসে লিটন দাস ও নইম হাসান মাথায় চোট পেয়ে ম্যাচ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে দ্বিতীয় ইনিংসে আঘাত পান মহম্মদ মিঠুন, মুশফিকুর রহিম ও তাইজুল ইসলাম। শুধুই কি টেকনিকের সমস্যা? না কি গোলাপি বল না দেখতে পাওয়ার কারণেই এই বিপর্যয়? পুজারার উত্তর, ‘‘গোলাপি বল ও নৈশালোকের জন্যও এই সমস্যা হতে পারে। আলো কমে যাওয়ার পরে শর্ট বল দেখতে প্রচণ্ড অসুবিধা হয়েছে। ওদেরও গোলাপি বলে খেলার কোনও অভিজ্ঞতাই নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটেও কখনও খেলেনি।’’

ভারতীয় পেসার ইশান্ত শর্মার দাপটেও মোহিত পুজারা। বলছিলেন, ‘‘ইনদওরে ইনসুইংয়ের সঙ্গে আউটসুইং করাতে শুরু করেছিল ইশান্ত। সেই বৈচিত্রে শান দিয়ে এখন ও আরও ভয়ঙ্কর। সমানে ইনসুইং করানোর পরে একটা বল আউটসুইং করিয়ে প্রচুর উইকেট পেতে শুরু করেছে ও।’’

দিনরাতের টেস্টে কোন সময়টা ব্যাটসম্যানদের পক্ষে আদর্শ? পুজারার ব্যাখ্যা, ‘‘প্রথম সেশনে ব্যাট করতে কোনও সমস্যাই হয়নি। আলো কমার সঙ্গেই বল বেশি নড়াচড়া করতে শুরু করে। শিশির পড়া শুরু হলে সুবিধা পায় ব্যাটসম্যানেরা। প্রথম দু’ঘণ্টা ও শেষের এক ঘণ্টা ব্যাটসম্যানদের আদর্শ সময় বলা যেতে পারে।’’

সামনে নিউজ়িল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সফর। এই অভিজ্ঞতার পরে বিদেশে দিনরাতের টেস্ট খেলতে ভারত রাজি হবে? পুজারা বলছিলেন, ‘‘ভারতীয় বোর্ড যা ঠিক করবে, সেই অনুযায়ী চলতে হবে। যদি দিনরাতের টেস্ট খেলতে হয়, তা হলে নৈশালোকে আরও অনুশীলন করতে হবে। তা হলেই গোলাপি বলের সঙ্গে ‌দ্রুত মানিয়ে নেওয়া যাবে।’’

দলীপ ট্রফির ফাইনালেও গোলাপি বলে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে পুজারার। তবে সেই বল ছিল কোকাবুরার। ভারতে প্রথম বার এস জি-র গোলাপি বল ব্যবহৃত হল। কোকাবুরার সঙ্গে কোনও পার্থক্য আছে? পুজারার উত্তর, ‘‘খুব একটা পার্থক্য নেই। তবে এসজি বল বেশি সুইং করে। স্পিনাররাও সাহায্য পায়। আজ তাইজুলের বল ভাল ঘুরছিল।’’

ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির ইনিংস আরও এক বার জয়ের রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে ভারতের। পুজারা বললেন, ‘‘যে কোনও ফর্ম্যাটে ও ধারাবাহিক। একজন ব্যাটসম্যানের থেকে এটাই আশা করা হয়। গোলাপি বলে প্রথম সেঞ্চুরি করে বিরাট নিজেও হয়তো খুব খুশি হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement