দীপ্তিকুমার ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
সচিন তেন্ডুলকর থেকে ভাইচুং ভুটিয়া—এক সময়ে তাঁদের চাঙ্গা রাখার দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে ক্রিকেট ও ফুটবলে দেশের জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। বর্ধমানের বাড়িতে সে সব স্মৃতি নিয়েই এখন দিন কাটছে বৃদ্ধ দীপ্তিকুমার ঘোষের।
পূর্ব বর্ধমানের রসুলপুরের উলারা গ্রামের বাসিন্দা দীপ্তিবাবু ফিজ়িয়ো হিসেবে ক্রীড়াক্ষেত্রে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। বছর বিরাশির মানুষটি জানান, ভারতীয় ক্রিকেটের ‘এ’ দল, সিনিয়র দল, জাতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে ছিলেন বিভিন্ন সময়ে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর-সহ নানা দেশে সফর করেছেন দলের সঙ্গে। ক্রিকেটে কপিল দেব, সচিন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড়দের পাশাপাশি, ফুটবলে ভাইচুং ভুটিয়া, আইএম বিজয়নদের সঙ্গে কাজ করেছেন। কোনও খেলোয়াড় চোট পেলে তাঁকে দ্রুত সারিয়ে তোলার দায়িত্বে থাকতেন তিনি।
দীপ্তিবাবু জানান, ইউক্রেনের কিয়েভের এক ইনস্টিটিউট থেকে অ্যাথলেটিক্স ও ফুটবলের ফিজ়িয়োথেরাপির প্রশিক্ষণ নিয়ে কর্মজীবনে আসেন। প্রায় ২৫ বছর বিভিন্ন দলে কাজ করেছেন। খেলোয়াড়দের দিনের রুটিন তৈরি করে দেওয়া থেকে তাঁদের স্বাস্থ্যের নজর রাখা, এ সব কাজ করতে গিয়ে অনেক ক্রিকেটার ও ফুটবলারের কাছের মানুষ হয়ে উঠেছিলেন। পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, অমল দত্তের মতো ফুটবল প্রশিক্ষকেরা তাঁর কাজের প্রশংসা করেছেন।
মিলেছে অনেক সম্মানও। ১৯৭১ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ক্রীড়া আধিকারিক নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। দীপ্তিবাবু বলেন, ‘‘ভাইচুং এক বার হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। দ্রুত সেই চোট সারিয়ে তোলায় খুব খুশি হয়েছিলেন।’’ এখন গ্রামের বাড়িতে বাগান পরিচর্যা ও লেখালেখি করে সময় কাটে তাঁর। নিয়মিত সাইকেল চালান। বৃদ্ধের মনে জমেছে কিছু খেদও। তিনি জানান, এখন আর বিশেষ কেউ তাঁর খোঁজখবর রাখেন না। রাহুল দ্রাবিড় আগে চিঠি পাঠাতেন। তবে সৌরভ, ভাইচুং, বিজয়নেরা মাঝে-মাঝে খবর নেন। তিনি বলেন, ‘‘স্মৃতি সব সময় মধুর। তা নিয়েই বাকি জীবন কাটাতে চাই।’’
রসুলপুরেরই বাসিন্দা, প্রাক্তন ফুটবলার তথা রাজ্য সরকারের ফুটবল অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষক অনন্ত ঘোষ বলেন, ‘‘ছোটবেলায় দীপ্তিবাবুর অনুপ্রেরণায় খেলাধুলোয় আগ্রহ পাই। পরেও তাঁর সাহায্য পেয়েছি। তিনি আমাদের কাছে দৃষ্টান্ত।’’