ICC

আইসিসি বৈঠকে আজই দাবি উঠবে বিশ্বকাপ সিদ্ধান্তের

এত দিন সদস্যরা গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে আইসিসি প্রধান বেছে এসেছেন। এ বার করোনাভাইরাস অতিমারির জেরে লকডাউন চলছে।

Advertisement

সুমিত ঘোষ 

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২০ ০৫:২১
Share:

ছবি সংগৃহীত

জুলাইয়ের আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়ার মনোভাবে অনড় থাকলেও ক্রমশ চাপ বাড়ছে আইসিসি-র উপরে। ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আজ, বৃহস্পতিবার ফের টেলিকনফারেন্সে বোর্ড মিটিং করতে চলেছে। সরকারি ভাবে সেই বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা নয়। বিদায়ী চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহরের উত্তরসূরি কী ভাবে বেছে নেওয়া হবে, সেই মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়েই বৈঠক।

Advertisement

এত দিন সদস্যরা গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে আইসিসি প্রধান বেছে এসেছেন। এ বার করোনাভাইরাস অতিমারির জেরে লকডাউন চলছে। কেউ সশরীরে হাজির হয়ে ভোট দিতে পারবেন না। তা হলে কী ভাবে গোপনীয়তা রক্ষা করা সম্ভব? সে সবের সন্ধান পেতে এই সভার ডাক।

কিন্তু প্রাক-বৈঠক আলোচনায় অনেক দেশই বলতে শুরু করেছে, আর কেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে অপেক্ষা করছি? অস্ট্রেলিয়া আয়োজক দেশ। তারা পর্যন্ত বলে দিয়েছে, অক্টোবর-নভেম্বরে তাদের দেশে বিশ্বকাপ করার ভাবনা ‘অবাস্তব’। অস্ট্রেলীয় সরকার এখনও সীমান্ত খোলার কথা জানায়নি। বাকি সব দেশে লকডাউন চলছে। উড়ান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়নি। আর কত দিন অপেক্ষা করা হবে?

Advertisement

আরও পড়ুন: ফিরব আরও খিদে নিয়ে, বলে দিলেন পুজারা

এর মধ্যেই ক্রীড়াবিশ্বে নতুন করে করোনার স্রোত আছড়ে পড়েছে। নোভাক জোকোভিচের আয়োজিত প্রীতি টেনিস প্রতিযোগিতা এখন হটস্পটে পরিণত। স্বয়ং জোকোভিচ এবং তাঁর স্ত্রী সংক্রমিত। আরও অন্তত ছ’জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট দলে ন’দশ জনের করোনা ধরা পড়েছে। তাই নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, এই আতঙ্কের মধ্যে বিশ্বকাপের মতো মহাযজ্ঞ কী ভাবে আয়োজন হবে?

অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক টিম পেন পর্যন্ত মঙ্গলবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বিরাট কোহালিদের বিরুদ্ধে বক্সিং ডে টেস্ট মেলবোর্নে হবে কি না, তা নিয়ে। মেলবোর্নে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে খবর। বক্সিং ডে টেস্ট সেই ডিসেম্বরের শেষে। অত দূরের টেস্ট ম্যাচ নিয়েই যদি সংশয় তৈরি হয়, তা হলে অক্টোবরে বিশ্বকাপ হবে কী ভাবে? অস্ট্রেলিয়ায় খোঁজ নিয়ে জানা গেল, তাদের দেশের বোর্ডও ধরে রেখেছে, বিশ্বকাপ এ বছরে হচ্ছে না। শুধুই সরকারি সিলমোহর পড়া বাকি। সেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা কি বৃহস্পতিবারের আইসিসি বৈঠকেই হয়ে যেতে পারে? নিশ্চিত করে বলা না-গেলেও সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। বিশ্বকাপের জন্য ১৬টি দেশের অন্তত ২৫ জন সদস্যকে নিয়ে মোট ৪০০ জনকে একত্রিত করার ঝুঁকি কোনও দেশই এই মুহূর্তে নিতে চাইবে না। বিশেষ করে জোকোভিচের প্রীতি টেনিস আয়োজন করার সিদ্ধান্ত যে রকম ব্যুমেরাং হল, তার পরে আরওই উদ্বেগের স্রোত বইছে ক্রীড়াবিশ্বে।

তিন থেকে চারটি দেশের বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, গরিষ্ঠ অংশ চাইছে, আর বিলম্ব না করে বিশ্বকাপ নিয়ে এসপার-ওসপার সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবারেই হয়ে যাক। ‘‘অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফুটবলে ইউরো, কোপা আমেরিকা পিছিয়ে গিয়েছে। তা হলে ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে দেরি করা কেন?’’ প্রশ্ন তুলছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি দেশের প্রভাবশালী কর্তা। অন্য একটি দেশের কর্তার গলাতেও একই সুর— ‘‘অস্ট্রেলিয়াই বলছে, বিশ্বকাপের ভাবনা অবাস্তব। আর কেন অপেক্ষা?’’ ভারতীয় বোর্ডের কেউ মুখ না খুললেও মনে হয় না, সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে কেউ অপ্রসন্ন হবেন!

বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, আইসিসি-র সঙ্গে চুক্তি থাকা এবং বিশ্বকাপের টিভি স্বত্ব কেনা ভারতীয় সংস্থাও এ রকম পরিস্থিতিতে বিশ্বকাপ করে ক্ষতির বোঝা বইতে চায় না। নানা মহলের চাপের মুখে আইসিসি বৃহস্পতিবার কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখার। কথা ছিল, ২০২০-তে অস্ট্রেলিয়ায় এবং ২০২১-এ ভারতে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। যদি সত্যিই এ বছর না হয়, তা হলে ২০২১ ও ২০২২-এ দু’টি বিশ্বকাপ হতে পারে। তখন কোন সালের বিশ্বকাপ কারা পাবে? তা হয়তো পরবর্তী কৌতূহলের বিষয়!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement