আবেগ: লাল-হলুদ সমর্থকদের এই উন্মাদনা ইস্টবেঙ্গলের শক্তি। ছবি শনিবারের নয়, আগে উৎসব পালনের।
ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ পূর্তির উৎসবের মধ্যেও বিতর্ক। আইএসএলের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন প্রাক্তন তারকারা।
করোনা-আতঙ্কে ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে কোনও জাঁকজমক হবে না তা আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষা করেই শনিবার সকালে ময়দানে ইস্টবেঙ্গলের ক্লাব তাঁবুতে হাজির হয়েছিলেন কয়েকশো লাল-হলুদ সমর্থক। ক্লাব তাঁবুতে পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাব ও তাদের সমর্থকদের শতবর্ষ পূরণ করার জন্য অভিনন্দন। আপনাদের উজ্জ্বল ঐতিহ্য সারা বিশ্বের ফুটবল ক্লাবগুলোর কাছেই দৃষ্টান্ত।’’ এখানেই শেষ নয়। শতবর্ষ উপলক্ষে ইস্টবেঙ্গলের বিশেষ গানের লাইনও টুইট করেছেন তিনি। লিখেছেন, ‘‘১০০ বছর ধরে, মাঠ কাঁপাচ্ছে যে দল, লাল-হলুদের ঝড়ের নাম ইস্টবেঙ্গল।’’ রাতের দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও টুইটারে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন প্রজন্মের ফুটবলার, সদস্য এবং অবশ্যই সমর্থকদের শতবর্ষের শুভেচ্ছা। ভারতীয় ক্রীড়ার ইতিহাসে এটি একটি মাইল ফলক। পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ার প্রতি ভালবাসা ও ফুটবল সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আজ এক বিশেষ দিন। ইস্টবেঙ্গলের মশাল যেন এ ভাবেই ময়দানকে আলোকিত করে রাখে।’’
শনিবার সকালে পতাকা উত্তোলনের পরে সংবর্ধনা জানানো হয়, ইস্টবেঙ্গলকে জাতীয় লিগে চ্যাম্পিয়ন করা দুই কোচ সুভাষ ভৌমিক ও মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যকে। এর পরেই সুর কেটে যায়। ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারতীয় ফুটবলে ইস্টবেঙ্গলের অবদান অস্বীকার করা যাবে না। হার-না-মানা মানসিকতা নিয়েই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছে তারা। ইস্টবেঙ্গল না খেললে আইএসএলের আকর্ষণ থাকবে না।’’ আসিয়ানজয়ী কোচ বলেন, ‘‘আইএসএলেরই দরকার ইস্টবেঙ্গলকে।’’ একই মত প্রাক্তন তারকা তরুণ দে ও ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়েরও। বললেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল খেললে তা হবে আইএসএলের সৌভাগ্য।’’ লাল-হলুদ জনতার একাংশ যদিও প্রাক্তন ফুটবলারদের সঙ্গে একমত নন। ইতিমধ্যেই এটিকে-র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আইএসএলে নাম লিখিয়েছে মোহনবাগান। সেখানে শতবর্ষে দেশের এক নম্বর লিগে খেলার সম্ভাবনা ক্রমশ কমছে ইস্টবেঙ্গলের।
আরও পড়ুন: কোচের টোটকায় ব্রডের প্রত্যাবর্তন
আইএসএলে খেলার জন্য যা শর্তপূরণ করতে হবে, তার কিছুই হয়নি এখনও পর্যন্ত। পুরনো বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। এখনও নতুন স্পনসর জোগার করতে পারেননি লাল-হলুদ কর্তারা। লগ্নিকারী থাকার সময় কর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, নানা ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার। তা নিয়েও সতর্ক অনেক সংস্থা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সমর্থকদের একাংশ ঝড় তুলেছেন। পদত্যাগ দাবি করছেন ক্লাব পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্তাদেরও। শতবর্ষে উৎসবের আবহে ফুলের সঙ্গে তাই কাঁটাও থাকছে। চাপে থাকা বর্তমান কর্তারা কি পারবেন পুরনো গৌরব ফেরাতে? সময়ই বলে দেবে।