হতাশ: এক যুগ পরে এত বিশ্রী হার প্রাক্তন বিশ্বসেরা জকোভিচের। ছবি: রয়টার্স
বিশ্বাসই করতে পারছেন না জন ম্যাকেনরো।
প্রাক্তন বিশ্বসেরার মধ্যে লড়াই করার কোনও লক্ষণই দেখতে পাননি জিম কুরিয়র।
বারো বছরে গ্র্যান্ড স্ল্যামে তাঁর একটাও গেম না পেয়ে সেট খোয়ানো টেনিস দুনিয়া কখনও দেখেনি।
হারের ধাক্কা এতটাই জোরাল ছিল যে, বলা হচ্ছে, তাঁর কি ম্যাচ খেলার কোনও ইচ্ছা ছিল না? তিনি কি প্রতিপক্ষকে ম্যাচ ছেড়ে দিতে নেমেছিলেন?
ফরাসি ওপেনে বুধবারের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে হারের পরে তাঁর টেনিস আকাশটা এখন এ রকমই সন্দেহ, আশঙ্কা আর অনিশ্চয়তার কালো মেঘে ঢেকে গেল। তিনি— নোভাক জকোভিচ।
টেনিস বিশ্বের উঠতি তারকা ডমিনিক থিয়েম যে একটা অঘটন ঘটাতে পারেন, সেই সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বুধবার রোলঁ গ্যারোজে তিনি যে এ ভাবে স্ট্রেট সেটে বিশ্বের দু’নম্বরকে হারিয়ে ভূমিকম্প সৃষ্টি করবেন কে জানত!
৭-৬, ৬-৩, ৬-০!
ঠিক এই স্কোরলাইনটাই এখন টেনিস বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত হয়ে উঠেছে। ডমিনিক থিয়েম যে স্কোরে হারালেন গত বারের চ্যাম্পিয়ন সার্বিয়ান মহাতারকাকে। সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে তৃতীয় সেটে জকোভিচের লড়াই দেখে। মার্কিন কিংবদন্তি জন ম্যাকেনরো তো সরাসরি বলেছেন, ‘‘জকোভিচকে দেখে মনে হচ্ছে কোর্টে আর থাকতে চাইছে না। এটা তো ট্যাঙ্কিং।’’ টেনিসে ট্যাঙ্কিংয়ের অর্থ, ম্যাচ ছেড়ে দেওয়া।
আরও পড়ুন: হেরে ফ্রেঞ্চ ওপেন থেকে ছিটকে গেলে জকোভিচ
উচ্ছ্বাস: ক্লে কোর্টের নতুন তারকা থিয়েম। ছবি: গেটি ইমেজেস
কুড়ি মিনিটের তৃতীয় সেটে জকোভিচ মাত্র আটটা পয়েন্ট পান আর ১২টা আনফোর্সড এরর করেন। গোটা কেরিয়ারে এই নিয়ে তিনি কোনও গেম না পেয়ে সেট খোয়ালেন নবম বার। গ্র্যান্ড স্ল্যামে যা শেষ বার দেখা গিয়েছিল ১২ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে। গেইল মঁফিসের বিরুদ্ধে।
আর এক টেনিস কিংবদন্তি জিম কুরিয়র তো জকোভিচের এই জঘন্য হারের জন্য দায়ী করছেন তাঁর ‘আধ্যাত্মিক গুরু’ পেপে ইমাজকে। দু’বারের ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন কুরিয়র বলেন, ‘‘সমস্যাটা হচ্ছে এক বছরেরও বেশি সময় আপনি এমন এক জনের সঙ্গে আছেন, যে শুধু শান্তি আর প্রেমের কথা প্রচার করে যাচ্ছে। কোণঠাসা হয়ে পড়লে এই মন্ত্রে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘নোভাকের খেলায় লড়াই দেখা যায়নি। হয়তো এটা কোর্টে তখন হাওয়া দিচ্ছিল বলেও হতে পারে। নোভাক হয়তো সেটা সামলাতে পারেনি। এটাও মনে হচ্ছিল হেরে যাওয়ার অনেক আগেই ও হারটা মেনে নিয়েছিল।’’