উইম্বলডনে অক্ষত শুধু ফেডেরার

অঘটনের দিনে বিদায় মারে ও জকোভিচের

কোয়ার্টার ফাইনালে থেমে গেল অ্যান্ডি মারে এবং নোভাক জকোভিচের অভিযান। ব্যাতিক্রম শুধু সুইস মহাতারকা। কেরিয়ারের ৫০তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম কোয়ার্টার ফাইনালে নেমে ১২ নম্বর উইম্বলডন সেমিফাইনালে উঠলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০৪:৫৬
Share:

হতাশ: বুধবার অভিযান থামল মারে ও জকোভিচের। ছবি: এএফপি, গেটি ইমেজেস

উইম্বলডনে ইন্দ্রপতনের দিনে একা কুম্ভ হয়ে উঠলেন রজার ফেডেরার।

Advertisement

কোয়ার্টার ফাইনালে থেমে গেল অ্যান্ডি মারে এবং নোভাক জকোভিচের অভিযান। ব্যাতিক্রম শুধু সুইস মহাতারকা। কেরিয়ারের ৫০তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম কোয়ার্টার ফাইনালে নেমে ১২ নম্বর উইম্বলডন সেমিফাইনালে উঠলেন তিনি। ওপেন যুগে যা রেকর্ড। সেমিফাইনালে উঠতে মিলোস রাওনিচের বিরুদ্ধে ফেডেরার জিতলেন ৬-৪, ৬-২, ৭-৬ (৭-৪)।

এ রকম তারকা পতন যে হবে, দু’দিন আগেও কেউ কল্পনা করতে পারেননি। উইম্বলডনের সেমিফাইনালে ‘বিগ ফোর’-এর তিন জনই নেই। রাফায়েল নাদাল আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন জাইলস মুলারের কাছে হেরে। বুধবার অবশ্য মারে এবং জকোভিচকে হারাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিল র‌্যাকেট হাতে কোনও প্রতিপক্ষ নয়, তাঁর চেয়েও বড় প্রতিদ্বন্দ্বী— চোট।

Advertisement

শুরুটা হয়েছিল অ্যান্ডি মারেকে দিয়ে। মোক্ষম সময়ে কোমরের চোটটা ধোঁকা দিয়ে বসে বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড়কে। যে ধাক্কায় উইম্বলডন অভিযান থেমে গেল গত বারের চ্যাম্পিয়নের। মারে চোটের পুরো ফায়দা তুলে মার্কিন খেলোয়াড় স্যাম কুয়েরি কেরিয়ারে প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমিফাইনালে উঠে গেলেন ভিড়ে ঠাসা সেন্টার কোর্টে। ফল কুয়েরির পক্ষে ৩-৬, ৬-৪, ৬-৭ (৪), ৬-১, ৬-১। মারে বলেন, ‘‘গোটা টুর্নামেন্টেই আমার চোট নিয়ে একটা সমস্যা ছিল। তবে আমি নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছি। অবশ্যই একটা সুযোগ ছিল আমার সামনে। দুঃখের কথা সেটা আর নেই।’’

আরও পড়ুন: আঘাত তো লাগেই ওভাবে সরতে হলে

মারে তবু চোট নিয়েও ম্যাচ শেষ করেছিলেন। জকোভিচ সেটাও পারলেন না। টমাস বার্ডিকের বিরুদ্ধে প্রথম সেট হারার পর দ্বিতীয় সেটের দুটো গেম হতে না হতেই কনুইয়ের চোটে ম্যাচ ছেড়ে দেন তিনি। সার্বিয়ান তারকার যে বিদায় নিয়ে তৈরি হল বিতর্কও। এক নম্বর কোর্টে রাফায়েল নাদালের প্রায় পাঁচ ঘণ্টার লড়াইয়ের জন্য জকোভিচের ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল মঙ্গলবারে। অথচ সেন্টার কোর্টে সোমবারই জকোভিচের খেলা হতে পারত। সেটা না হয়ে মঙ্গলবার প্রি-কোয়ার্টার খেলে কোনও বিশ্রাম না পেয়েই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জকোভিচকে শেষ আটে নামতে হয়। মঙ্গলবারই কনুইয়ে চোটের সমস্যা ভোগাচ্ছিল জকোভিচকে। এক দিন বিশ্রাম পেলে সেটা হয়তো কাটিয়ে উঠতে পারতেন সার্বিয়ান মহাতারকা। তাই জকোভিচের হারের জন্য উইম্বলডন কর্তৃপক্ষের দিকেও আঙুল তুললেন কেউ কেউ। হতাশ জকোভিচ ছিটকে যাওয়ার পরে বলেন, ‘‘এ ভাবে উইম্বলডন থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে দেখে খুব খারাপ লাগছে। চেষ্টা করেছিলাম আজ চোটটা সামলে কোর্টে নামার। কিন্তু হল না।’’

হুঙ্কার: মিলোস রাওনিচকে হারিয়ে উইম্বলডনের সেমিফাইনালে ওঠার পরে রজার ফেডেরার। ছবি: গেটি ইমেজেস

এই সুযোগে ফেরেডারের সামনে অষ্টম উইম্বলডন খেতাব এবং ১৯ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের পথ আরও মসৃণ হয়ে গেল। দুরন্ত ছন্দে থাকা সুইস মহাতারকা ম্যাচের পরে বলেন, ‘‘খুব খুশি সেমিফাইনালে উঠে। এত বছর খেলার পরেও আমার শরীর যে এই ধকলটা নিতে পারছে, সেটা দেখেই দারুণ লাগছে। সেন্টার কোর্টে দেখলাম মেক্সিকান ওয়েভও উঠল। এ রকম দৃশ্য কিন্তু রোজ দেখা যায় না।’’

উইম্বলডনে নিজের ১০০তম ম্যাচে ৮৯ নম্বর জয়ের পরেও নিজের থেকে বেশি পরাজিত তারকাদের কথা তোলেন ফেডেরার। তিনি বলেন ‘‘আমাদের মধ্যে যে কোনও এক জনের চোটটা লাগতে পারত। আশা করি নোভাক ঠিক আছে। ওর বড় কোনও চোট লাগেনি। অ্যান্ডি আর নোভাক ঠিক সময়ে চোট সারিয়ে আমেরিকান গ্রীষ্মের মরসুমের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবে, এটাই আশা করছি।’’ সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘আমি নিশ্চিত রাফা দুরন্ত ভাবে ফিরে আসবে। আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম চিলিচ খুব ভাল খেলতে পারে। আমার কথাটা কিন্তু ও সত্যি করে তুলল।’’

সেমিফাইনালে ফেডেরারের সামনে টমাস বার্ডিক। শেষ চারের প্রতিদ্বন্দ্বী নিয়ে ফেডেরার বলেন, ‘‘বার্ডিক আমার খুব ভাল বন্ধু। এ বার তো সব নতুনদের চ্যালেঞ্জ সামনে। জানি না এই অভিজ্ঞতা কেমন হবে। তবে আমার এই স্বপ্নের দৌড় যে ভাবে চলছে তাতে দারুণ খুশি।’’

অপর সেমিফাইনালে স্যাম কুয়েরির মুখোমুখি মারিন চিলিচ। তিনি এক নম্বর কোর্টে বুধবার হারান রাফায়েল নাদালের ঘাতক জাইলস মুলারকে। চিলিচের পক্ষে ফল ৩-৬, ৭-৬ (৪), ৭-৫, ৫-৭, ৬-১।

সেমিফাইনালের লড়াই

• রজার ফেডেরার - টমাস বার্ডিক

• স্যাম কুয়েরি - মারিন চিলিচ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement