ফুরফুরে: নিভৃতবাসে এ ভাবেই সময় কাটছে সিডনির হোটেলে। মঙ্গলবার ছবি টুইট করলেন ভারত অধিনায়ক কোহালি।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শুরুতেই ওয়ান ডে সিরিজ খেলতে হবে ভারতকে। কিন্তু বিরাট কোহালিরা এখনই নেমে পড়েছেন টেস্টের প্রস্তুতিতে। লাল বলের পাশাপাশি চলছে গোলাপি বলে অনুশীলনও। কারণ, সিরিজের প্রথম টেস্টই অ্যাডিলেডে দিনরাতের।
মঙ্গলবার ফেসবুকে নিজের অনুশীলনের একটি ভিডিয়ো দিয়েছেন কোহালি। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেটের প্র্যাক্টিস সেশনগুলো দারুণ লাগে।’’ ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে ভারতীয় পেসারদের বিরুদ্ধে নেটে রক্ষনাত্মক ব্যাটিং করে চলেছেন ভারত অধিনায়ক।
ভিডিয়ো দেখে পরিষ্কার, টেস্ট সিরিজের ভাবনা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি চলছে ভারতের। স্লিপ ক্যাচিংয়ে জোর দেওয়া হয়েছে অনুশীলনে। এ দিন দেখা গিয়েছে বিরাট ব্যাট করার সময়ে উল্টো দিকে নন-স্ট্রাইকারও রয়েছে। অর্থাৎ, ম্যাচ পরিস্থিতি তৈরি করে মহড়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
টেস্টের অনুশীলনে নেমে পড়েছেন কে এল রাহুলও। তিনি টুইট করেছেন, ‘‘ভারতের নীল জার্সিতে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে।’’ রাহুলকে গোলাপি বলে অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছে। যা থেকে মনে হতে পারে, অ্যাডিলেডে দিনরাতের টেস্টে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। ওই টেস্ট খেলেই দেশে ফিরে আসবেন কোহালি। সন্তানসম্ভবা স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার পাশে থাকার জন্য।
সিডনিতে পা দেওয়ার পরে এখনও নিভৃতবাসেই রয়েছেন কোহালিরা। তার মধ্যেই চলছে অনুশীলন। এ দিন হোটেলের ঘরে নিজের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে দিয়ে কোহালি লিখেছেন, ‘‘নিভৃতবাসের ডায়েরি। ইস্ত্রি না করা টি-শার্ট, আরামদায়ক বসার জায়গা এবং দেখার জন্য একটা ভাল সিরিজ।’’ বোঝাই যাচ্ছে, অবসর সময়ে এখন ভারত অধিনায়ক কোনও ওয়েব বা টিভি সিরিজে ডুবে আছেন।
কোহালির পাশাপাশি মহম্মদ শামি, মহম্মদ সিরাজরাও অনুশীলনে নেমে পড়েছেন। নেটে এই দুই পেসারের বল করার ভিডিয়ো তুলে দিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে লেখা হয়েছে, ‘‘মাস্টার এবং তার ছাত্র। শামি এবং সিরাজ একসঙ্গে বল করছে ভারতের নেটে। দ্রুত এবং নিখুঁত।’’
ভারতীয় ক্রিকেটারদের মতো অনেক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারও এখন ১৪ দিনের নিভৃতবাসে রয়েছেন। ইংল্যান্ড সফরের পরে আইপিএল খেলে এঁরা দেশে ফিরেছেন। ফলে তিন মাসের উপরে এই সব ক্রিকেটার তাঁদের পরিবার থেকে দূরে রয়েছেন। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারিও। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে ক্যারি জানিয়েছেন, এত দিন জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকলেও ক্রিকেটাররা সবাই ভাল মেজাজেই আছেন।
হোটেলের ঘর থেকে ভিডিয়ো কলে সাংবাদিকদের ক্যারি বলেছেন, ‘‘খুব কড়া নিয়মের মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে। এক বার হোটেলের ঘরে ঢুকে গেলে আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ থাকছে না। এত কড়া নিয়ম এক দিক থেকে ভাল।’’ কী ভাবে তাঁদের দিন কাটছে, তাও জানিয়েছেন ক্যারি। বলেছেন, ‘‘সকাল নটায় আমরা হোটেল থেকে বেরিয়ে প্র্যাক্টিসে যাচ্ছি। সব কিছু কড়া নিয়ম মেনেই হচ্ছে। আমরা জানি, সব কিছু ঠিকঠাক রাখতেই হবে।’’
আইপিএলে রিকি পন্টিংয়ের কোচিংয়ে দিল্লি ক্যাপিটালসে ছিলেন ক্যারি। যদিও তিনটির বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি, তবু এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মনে করছেন, আইপিএলের অভিজ্ঞতা তাঁকে অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ করে দেবে। ক্যারির কথায়, ‘‘গত বিশ্বকাপেও আমি রিকি পন্টিংয়ের সঙ্গে কাজ করেছি। এ বারে আইপিএলে দিল্লির কোচ হিসেবে পেয়েছি। যে রকম দারুণ ক্রিকেটার ছিল, সে রকমই ভাল কোচ পন্টিং। ছোটখাটো জিনিসগুলো খুব ভাল ধরে নেয়।’’
খারাপ ফর্মের জন্য গত সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া দল থেকে বাদ পড়েছিলেন ক্যারি। কিন্তু তিনি আশাবাদী, ভারতের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলে ফিরে আসবেন। ক্যারি বলেছেন, ‘‘আইপিএলে আমি বেশি ম্যাচ খেলিনি ঠিকই, কিন্তু প্রচুর ট্রেনিং করেছি। ছোটখাটো ত্রুটিগুলো ঠিক করার চেষ্টা করেছি। দলে ফেরার জন্য যা করা দরকার, তা করে যাচ্ছি।’’