শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পরে বাংলাদেশকে সমীহ করছেন রোহিতরা।
আর অঙ্কের হিসেব নিয়ে ভাবনা নয়, এ বার সরাসরি ফাইনালে ওঠার কথা ভাবছে ভারত।
চলতি নিদাহাস ট্রফির তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পরে এই ভাবনা ঢুকে পড়েছে রোহিত শর্মাদের শিবিরে। আজ, বুধবার বাংলাদেশকে হারালে তাঁদের ফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত। প্রকৃতি অবশ্য ম্যাচে বাধ সাধতে পারে। বুধবার সন্ধ্যায় কলম্বোয় বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। তাতে যদি ম্যাচ ভেস্তে গিয়ে দু’দলে পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়, তা হলেও ভারত ফাইনালে যাবে। শুক্রবার বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ তখন কার্যত সেমিফাইনাল হয়ে উঠবে। যারা জিতবে, তারাই ফাইনালে যাবে।
কিন্তু যদি বুধবার ভারতকে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়ে ফেলে বাংলাদেশ? যেমন তারা ঘটিয়েছে দু’দিন আগেই, শ্রীলঙ্কাকে ২১৪ রান তাড়া করে হারিয়ে। তখন আবার অঙ্কের হিসেব কষা শুরু হবে রোহিতদের শিবিরে। অন্যদের ম্যাচের দিকে তখন তাকিয়ে থাকতে হবে। তাই সে পথে না গিয়ে জয়ের কথাই ভাবছে ভারত। সোমবার জেতার পরে ভারত অধিনায়ককে বলতে শোনা যায়, ‘‘তিন দলেরই এখন ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সব দলই চার পয়েন্ট করে পেয়ে শেষ করতে পারে। তাই এই ছন্দ বজায় রেখে এগিয়ে যাওয়াই এখন আমাদের প্রধান কাজ।’’
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে জিতে থাকলে অবশ্য এই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না ভারতীয় দলকে। সোমবারই ফাইনালে উঠে যেত তারা। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ম্যাচ এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠত না। দু’দিন আগে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পরে বাংলাদেশকে এখন অনেকেই সমীহ করছেন। যদিও বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহর গলায় অন্য সুর। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলে একাধিক মারকুটে ব্যাটসম্যান না থাকাটাই সমস্যা। তবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয়টা আমাদের মানসিক ভাবে উদ্দীপিত করেছে। এই আত্মবিশ্বাসটাই পরের ম্যাচে কাজে লাগাতে চাই আমরা।’’ গত ম্যাচে মুশফিকুর দু’শোর ওপর স্ট্রাইক রেট নিয়ে দলকে একা হাতে জেতান। মাহমুদুল্লাহ বলছেন, ‘‘নিজেদের খেলার নির্দিষ্ট একটা স্টাইল তৈরি করতে চাই আমরা। যেটা এই টুর্নামেন্টে আমরা দেখাতে পারছি।’’
কে কোথায় দাঁড়িয়ে
• তিনটি করে ম্যাচ খেলে এখন ভারতের সংগ্রহে ৪ পয়েন্ট। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ২ পয়েন্ট । বাংলাদেশ ২ ম্যাচ খেলেছে।
• বুধবার ভারত জিতলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনালে উঠবে। সেক্ষেত্রে শুক্রবার শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ ম্যাচে জয়ীরা ফাইনালে যাবে।
• বুধবার ম্যাচ টাই হলে বা ভেস্তে গিয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগি হলেও ভারত ফাইনালে যাবে।
• বুধবার ভারত হারলে ও শুক্রবার শ্রীলঙ্কা জিতলে তিন দলেরই চার পয়েন্ট হবে। তখন নেট রান রেটের বিচারে ফাইনালে উঠবে দু’দল।
• পরের দুই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতলে ফাইনালে ভারত-বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে।
বুধবার মুশফিকুরের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা তৈরি করে নামতে হবে ভারতীয় বোলারদের। ভুবনেশ্বর কুমার, যশপ্রীত বুমরারা না থাকলেও নবাগত ওয়াশিংটন সুন্দর বা শার্দূল ঠাকুর কিন্তু বিপক্ষকে চাপে রাখার কাজটা করে যাচ্ছেন। সোমবারই যেমন শার্দূল চার উইকেট নিয়ে দলের জয়ের ভিত তৈরি করেন। আগের ম্যাচে জয়দেব উনাদকাট তিন উইকেট নেন। ভারতীয় পেসারদের রিজার্ভ বেঞ্চও যে শক্তিশালী, তা প্রমাণ করতে মরিয়া তাঁরা। ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়ে শার্দূল যেমন বলেন, ‘‘দলের সিনিয়রদের অভাব পূরণ করাটা আমার কাছে এখন চ্যালেঞ্জ। মুম্বই দলেও একই চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছিল আমাকে। জাহির খান, ধবল কুলকার্নি, অজিত আগারকরদের জায়গায় নেমে সফল হওয়ার চ্যালেঞ্জ ছিল। এটাও অনেকটা সে রকমই।’’
ভুবনেশ্বর কুমারের মতো ‘নাকল বল’ করে সোমবার চমকে দেন শার্দূল। এটা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘গ্রিপটা জানতাম। নিজে নিজেই দু’বছর ধরে অনুশীলন করেছি। ঘরোয়া ক্রিকেটে সাদা বলে বল করার সময়ও চেষ্টা করেছি এই ডেলিভারিটা করার। এ বার সফল হলাম।’’ প্রথম ম্যাচের ব্যর্থতাই যে চোখ খুলে দেয় তাঁদের, তা স্বীকার করে নিয়ে শার্দূল বলেন, ‘‘দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে আমরা দুর্দান্ত ভাবে ফিরে আসতে পেরেছি। পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করেছি। তাতেই সাফল্য এসেছে।’’ বুধবারও সেই সাফল্যের ধারাই বজায় রাখতে হবে ভারতকে।