স্মরণীয়: মঙ্গলবার সিডনি ক্রিকেট মাঠের দর্শনীয় প্রেক্ষাপটে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ট্রফি নিয়ে ভারতীয় দল। তৃতীয় ম্যাচের পরে। ছবি: গেটি ইমেজেস।
কী অদ্ভুত এই ক্রিকেট। ওয়ান ডে সিরিজে প্রথম দুটো ম্যাচ জেতার পরে অস্ট্রেলিয়া শেষটা হারে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে আবার ভারত প্রথম দুটো জেতার পরে শেষটা হারল। এ বছরে এটাই ভারতের একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হার। দশটা ম্যাচে ন’টা জিতেছে কোহালিরা।
পরের বছর দেশের মাঠে বিশ্বকাপ। সেই বিশ্বকাপ জেতার ব্যাপারে ভারত বড় দাবিদার। চলতি সফরের সেরা প্রাপ্তি নতুন এক প্রতিভা এবং ফিনিশারের আবির্ভাব। টি নটরাজন এবং হার্দিক পাণ্ড্য। আইপিএল থেকে নটরাজনের উত্থান। কিন্তু এই ক’মাসেই নিজেকে অনেক উন্নত করেছে। শুধু ইয়র্কারই নয়, সঙ্গে মন্থর গতির বাউন্সার, গতি পরিবর্তন— এ সব যুক্ত হয়েছে ওর বোলিংয়ে। মাথাটা খুবই ঠান্ডা। এ রকমই এক জন ভাল বাঁ-হাতি পেসারের সন্ধানে ছিল ভারতীয় ক্রিকেট। পরের বছর বিশ্বকাপের আগে নটরাজন আরও ধারালো হয়ে উঠবে।
হার্দিক পাণ্ড্য বল করতে না পারার আক্ষেপটা দারুণ ভাবে ব্যাট হাতে পুষিয়ে দিচ্ছে। মঙ্গলবার সিডনিতে শেষ ম্যাচে হার্দিক হয়তো জেতাতে পারল না, কিন্তু সব দিন কি রবিবার হয়? বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ক্রমে আরও ধারাবাহিক হয়ে উঠছে হার্দিক। এ দিন অস্ট্রেলিয়ার লেগস্পিনার অ্যাডাম জ়াম্পার বলটা লেগস্টাম্পে পড়ে সামান্য ঘোরায় হার্দিকের (১৩ বলে ২০) ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার ১৮৬-৫ তাড়া করে বিরাট কোহালি (৬১ বলে ৮৫) আর হার্দিক যখন খেলছিল, মনে হচ্ছিল শেষ পাঁচ ওভারে ৭৬ রান ভারত তুলে দেবে। কিন্তু ওদের দু’জনের জুটি ভেঙে যাওয়ার পরে কাজটা কঠিন হয়ে গেল। দারুণ ব্যাট করে যাওয়া কোহালিও পারল না জেতাতে। ভারত থামল ১৭৪-৭ স্কোরে।
আরও পড়ুন: রিভিউ বিতর্ক, ফিল্ডিং ব্যর্থতা, সিরিজের শেষ ম্যাচে প্রাপ্তি শুধুই বিরাট
আরও পড়ুন: কোহালি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন কিনা এখনও ঠিক করেননি
শেষ ম্যাচে কয়েকটা জায়গায় অবশ্য খামতি থেকে গেল। যেমন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে বেশ কয়েক বার জীবন দেওয়া। যুজ়বেন্দ্র চহালের বলে আউট হওয়ার পরে দেখা গেল, ‘নো’ হয়েছে। ছোটবেলায় আমাদের কোচেরা বলতেন, স্পিনারদের ‘নো বল’ করা অপরাধ। সেটাই করল লেগস্পিনার চহাল। ম্যাক্সওয়েল তখন ১৯ রানে। শেষ পর্যন্ত করল ৩৬ বলে ৫৪। ওর সহজ দুটো ক্যাচও পড়ল। ম্যাথু ওয়েডের (৫৩ বলে ৮০) ক্ষেত্রে এক বার রিভিউ নিতে দেরি করল ভারত। ফলে সেটা কার্যকর হল না। পরে রিপ্লেতে দেখা গেল, রিভিউ নিলে নটরাজনের বলে এলবিডব্লিউ ছিল ওয়েড। রান তাড়া করার সময় অস্ট্রেলিয়ার দুই লেগস্পিনার মিচেল সোয়েপসন আর জ়াম্পার সাত ওভারে মাত্র একটা চার হল। তবে শেষ ম্যাচ হারলেও বলব, এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে ভারতকে আধিপত্য নিয়েই খেলতে দেখলাম।এর সঙ্গে বুমরা-জাডেজারা চলে এলে আরওই শক্তিশালী হবে দল। শুধু একটা জিনিস দেখতে চাই না। এই সফরে ‘ব্রেকফাস্ট ক্যাচ’ ফেলেছে ভারতীয় ফিল্ডাররা। মানে যাকে বলে হাতের ক্যাচ। এমনকি কোহালির মতো ফিল্ডারও। আশা করছি, এই ত্রুটি দ্রুত ঢেকে দেবে ভারত।