দেশ তোলপাড় করে ‘রায়না কি শাদি’

বিরাট-অনুষ্কার আবদার রাখতে পারছেন না রায়না পত্নী

বাইশ গজে না হোক, বিয়ের পিঁড়িতে অন্তত বিরাট কোহলিকে জনপ্রিয়তায় আগাম চ্যালেঞ্জ দিয়ে রাখলেন সুরেশ রায়না। শোনা যাচ্ছে, রায়নার বিবাহবাসরে বিরাট-অনুষ্কা জুটির হাজির থাকাটা নাকি রথ দেখার সঙ্গে কলা বেচাও! এ বারই হয়তো দিল্লিতে কোহলি পরিবারের কাছে এক বার যাবেন ‘এনএইচ টেন’-এর নায়িকা। সম্ভবত ভারতীয় ক্রিকেট আর বলিউডের সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে মেগা বৈবাহিক সম্পর্কটাও অচিরেই তৈরি হবে। কিন্তু সে তো পরের কথা।

Advertisement

স্বপন সরকার

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৪
Share:

শুক্রবার গভীর রাতে বিয়ের আসরে প্রিয়ঙ্কা চৌধুরি এবং সুরেশ রায়না।

বাইশ গজে না হোক, বিয়ের পিঁড়িতে অন্তত বিরাট কোহলিকে জনপ্রিয়তায় আগাম চ্যালেঞ্জ দিয়ে রাখলেন সুরেশ রায়না।

Advertisement

শোনা যাচ্ছে, রায়নার বিবাহবাসরে বিরাট-অনুষ্কা জুটির হাজির থাকাটা নাকি রথ দেখার সঙ্গে কলা বেচাও! এ বারই হয়তো দিল্লিতে কোহলি পরিবারের কাছে এক বার যাবেন ‘এনএইচ টেন’-এর নায়িকা। সম্ভবত ভারতীয় ক্রিকেট আর বলিউডের সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে মেগা বৈবাহিক সম্পর্কটাও অচিরেই তৈরি হবে। কিন্তু সে তো পরের কথা।

আজ ভারতীয় মননের লক্ষ্যবস্তু রাজধানীর চাণক্যপুরি অঞ্চলের পাঁচতারা হোটেল দ্য লিলা প্যালেস। সুরেশ রায়না-প্রিয়ঙ্কা চৌধুরির বিয়ের মণ্ডপ। ৩ এপ্রিল ২০১৫, শুক্রবার দিনভর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সবচেয়ে জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগ— রায়না কি শাদি!

Advertisement

টুইটারে এ দিন সর্বোচ্চ পোস্টের তালিকায় গোয়ায় এক বিখ্যাত ডিজাইনার পোশাক কোম্পানির স্টোরের ট্রায়াল রুমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গোপন ক্যামেরার সন্ধান পাওয়ার মতো ঘটনাও দ্বিতীয় স্থানে! তিনে এক বলিউড নায়িকাকে ঘিরে মুচমুচে স্টোরি নিয়ে পোস্ট! দিনের সবচেয়ে আলোড়িত ঘটনাবলীর কোনওটাই কিন্তু জনতার মননে ‘রায়না কি শাদি’র চেয়ে বেশি রেখাপাতে ব্যর্থ।

যে শাদির অনুষ্ঠানে শুক্র-সন্ধ্যেয় সস্ত্রীক ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি থেকে শুরু করে আইসিসি চেয়ারম্যান নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের সামান্য আগু-পিছু তাৎপর্যপূর্ণ উপস্থিতি ঘটল শ্রীনি-ধোনির আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি সিএসকের তিন তারকা বিদেশির— স্টিভন ফ্লেমিং, মাইক হাসি, ডোয়েন ব্র্যাভো। ছিলেন সদ্যসমাপ্ত বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের অন্যতম তারকা শিখর ধবনের পাশাপাশি রায়নার প্রিয় বন্ধু, ভারতীয় দলের প্রাক্তন পেসার আর পি সিংহ। ইশান্ত শর্মা। মহম্মদ শামি। এবং অবশ্যই জুটিতে বিরাট-অনুষ্কা। যে বিয়ের আসরে থাকার জন্য অনুষ্কা গতকালই পৌঁছে গিয়েছিলেন বিরাটের শহরে।

তার পরেও অবশ্য টিম ইন্ডিয়ার অনেক সদস্যই আজকের অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি। মাত্র পাঁচ দিন দূরে থাকা আইপিএল আটের জন্য নিজের-নিজের ফ্র্যাঞ্চাইজির নেটে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকার কারণে। কেউ রায়নারই আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি টিম সিএসকের চেন্নাই নেটে।। কেউ বেঙ্গালুরুতে। কেউ হায়দরাবাদে। কেউ পুণেয়। কেউ বা কলকাতায়।

আগামী মাসদেড়েকের আইপিএল রায়না-প্রিয়ঙ্কার মধুচন্দ্রিমাতেও নাকি থাবা বসাতে চলেছে। যেহেতু বিয়ের মাত্র কয়েক দিন পরেই কোটি টাকার টি-টোয়েন্টি লিগ শুরু হয়ে যাচ্ছে, সে জন্য নববিবাহিত দম্পতি তাঁদের হনিমুনও আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে নিয়ে ফেলেছেন। আইপিএল আটের পর রায়না-দম্পতি হনিমুনে যাবেন মিলান।

যে দেশে বলতে গেলে ক্রিকেটের নামগন্ধ নেই, সেই ইতালি কেন সুপারস্টার ক্রিকেটারের মধুচন্দ্রিমার স্টেশন? হতেই পারে রায়নার স্ত্রী ক্রিকেটের চেয়ে বেশি ফুটবলভক্ত বলে! তবে চার বারের ফুটবল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দেশের কেউ নন, প্রিয়ঙ্কার ফেভারিট ফুটবলার হলেন লিওনেল মেসি এবং রবিন ফান পার্সি। ক্রিকেটে নাকি তেমন আগ্রহই নেই রায়না-পত্নীর! কে বলতে পারে মিলানে মধুচন্দ্রিমার ফাঁকে এসি মিলান কিংবা ইন্টার মিলানের ম‌্যাচে মাইকেল এসিয়েন বা ‘অ্যালপাইন মেসি’ জারদান শাকিরি দেখতে গেলেন প্রিয়ঙ্কা! নিজের বিয়ের ব্যস্ততার মধ্যেও রায়না এ দিন আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘বিরাট-অনুষ্কা তো আমার কাছে এক রকম আবদারই জুড়েছে যে এ বার আইপিএলে স্ট্যান্ড থেকে আমার জন্য গলা ফাটাক প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু সেটা বোধহয় হচ্ছে না। আইপিএলের সময় ও তো নেদারল্যান্ডস ফিরে যাচ্ছে। ওখানকার ব্যাঙ্কে ওর চাকরিতে বেশি দিনের ছুটি পায়নি।”

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।

এ দিন রায়নার বরবেশ ছিল ডিজাইনার শেরওয়ানি। আর প্রিয়ঙ্কার কনের সাজ ডিজাইনার লেহেঙ্গা-চোলি। দু’জনে বাল্যবন্ধু হলেও দেখাসাক্ষাত্‌ প্রায় ছিল না বললেই চলে। আজ থেকে সাত বছর আগে ২০০৮-এ এক বার মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য রায়না-প্রিয়ঙ্কার দেখা হয়েছিল। তাও এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে। প্রিয়ঙ্কা যাচ্ছিলেন নেদারল্যান্ডসে নিজের কর্মস্থলে। আর রায়না চেন্নাইয়ে সিএসকের প্রস্তুতি শিবিরে। এর পর দু’জনের ফের চাক্ষুষ দর্শন এ বছরই। এই সে দিন বিশ্বকাপ শেষে। আধঘন্টার জন্য। তার পর আজ নিজেদের বিয়ের মণ্ডপে!

এত দিনে ক্রিকেটমহল জেনে গিয়েছে রায়নার বিয়ের পুরো ব্যাপারটা দেখভাল করেছেন তাঁর মা। আসলে রায়নার মায়ের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা-পরিবারের বরাবরের ঘনিষ্ঠতা। অস্ট্রেলিয়ায় রায়নার সাম্প্রতিক থাকার এক দিন তাঁর মা সটান মোবাইলে জানিয়ে দেন যে, তোমার বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গিয়েছে। প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে। সেলিব্রিটি ছেলেও কোনও আপত্তি করেননি।

তবে বাইশ গজে তাঁর ব্যাটের মতোই বিয়েতেও রায়না ইম্প্রোভাইজেশন দেখালেন যেন! নিয়ম মত তাঁদের পরিবারের সব বিয়েতে বরের মামা ঘোড়ার পিঠে ভাগ্নেকে চাপিয়ে বিয়ের আসরে নিয়ে আসেন। পারিবারিক সেই প্রথা আজ কিন্তু ভেঙে দিয়ে সুরেশ রায়না ঘোড়ার পিঠে চেপে বিয়ে করতে এলেন না!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement