অপেক্ষা: গোলাপি বলের টেস্ট দেখতে আগ্রহী জোশী। ফাইল চিত্র
ঢাকায় ২০০০ সালে বাংলাদেশের সেই অভিষেক টেস্টে তিনি ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার হয়েছিলেন। দু’বছর ধরে বাংলাদেশের বোলিং কোচও ছিলেন। বিশ্বকাপের পরে আর নেই। কিন্তু এই বাংলাদেশ দলকে খুব ভাল করে চেনেন ভারতের প্রাক্তন বাঁ-হাতি স্পিনার সুনীল জোশী। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগের দিন দুটো নাম করছেন তিনি, যাঁরা কিছুটা হলেও ভারতের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেন।
এই দুই ক্রিকেটার হলেন লিটন দাস এবং আরাফাত সানি। কেন এই দু’জনের কথা আলাদা করে বলছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন স্পিন বোলিং কোচ? শনিবার ফোনে আনন্দবাজারকে জোশী বলছিলেন, ‘‘মুশফিকুর রহিম বা মাহমুদুল্লা তো আছেই। ওরা বড় নাম। কিন্তু যদি সে ভাবে চমকের কথা বলেন, তা হলে আমি এই দু’জনের কথা বলব। লিটন ভারতের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপ ফাইনালে ওপেন করে সেঞ্চুরি করেছে। স্পিনটাও ভাল খেলে।’’
সানি সেই ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পরে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের জন্য সাসপেন্ড হয়েছিলেন। আবার তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে দলে। এই বাঁ-হাতি স্পিনারের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের কাজে লাগবে বলে মনে করেন জোশী।
আরও পড়ুন: বাদ পড়ে ডিন্ডার হুমকি, আর বাংলায় নয়
নিজে যখন বাংলাদেশের স্পিন কোচ ছিলেন, একটা ব্যাপারে জোর দিয়েছিলেন। জোশী বলছিলেন, ‘‘আমাদের ছকটা থাকত, বাঁ-হাতি স্পিনার তৃতীয় বা চতুর্থ স্টাম্পের লাইনে ফেলে বল বাইরে নিয়ে যাবে। শাকিব আল হাসান এই বলটা খুব ভাল করত। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সাফল্য এসেছিল এই স্ট্র্যাটেজিতে। আমরা স্পিনারদের একটু ওয়াইড অব দ্য ক্রিজ গিয়ে এই লাইনে বল করাতাম। ও রকম কোণ থেকে বাইরে যাওয়া বল খেলা একটু কঠিনই হয়ে যায়।’’
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত শাকিব এ বার নেই। তা হলে এখন কে সেই কাজ করবেন? শাকিবের শাস্তি প্রসঙ্গ উঠতেই জোশী বলে দিচ্ছেন, ‘‘আমি এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’’ তবে বাংলাদেশ অধিনায়কের অনুপস্থিতি নিয়ে বলছেন, ‘‘শাকিবের জায়গায় সানিকে এই দায়িত্বটা ওরা দিতে পারে। ওর অভিজ্ঞতা আছে। ওই কোণ থেকে বলটা বাইরে নিয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া তাইজুল ইসলামও রয়েছে। দেখা যাক, ড্যানিয়েল ভেত্তোরি কী স্ট্র্যাটেজি নেয়।’’ জোশীর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে এই সিরিজ থেকে বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচের দায়িত্বে রয়েছেন নিউজ়িল্যান্ডের প্রাক্তন বাঁ-হাতি স্পিনার ভেত্তোরি।
দু’দলের শেষ কয়েকটা ম্যাচে ভারত জিতলেও লড়াইটা বেশ তীব্র হয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে কী ভাবে তৈরি করতেন দলকে? প্রাক্তন বাঁ-হাতি স্পিনার বলছেন, ‘‘আমি যতটা সম্ভব ম্যাচ পরিস্থিতি তৈরি করতাম। ব্যাটসম্যানদের বলা হত, এই ওভারে এত রান না করলে হার। ভারত ম্যাচ মানেই স্নায়ুর পরীক্ষা। সবার আগে সেই পরীক্ষায় পাশ করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: আজ সুনীল বনাম সুব্রত দ্বৈরথ ঘিরে উন্মাদনা
ভারতের রিস্ট স্পিনারদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতিটা কী রকম হত? জোশীর মন্তব্য, ‘‘নেটে রিস্ট স্পিনার এনে বল করাতাম আর ব্যাটসম্যানদের বলতাম, কব্জির মোচড়টা দেখো। এ ছাড়া ভিডিয়োয় খুব কাছ থেকে কুলদীপ, চহালের বোলিং অ্যাকশন দেখানো হত। কব্জির মোচড় কোন দিকে হলে বলটা কোন দিকে ঘুরছে, তা বোঝানোর চেষ্টা করেছি। লিটনের মতো বাংলাদেশের অনেকেই স্পিন ভাল খেলে কারণ ওরা কব্জির মোচড়টা দেখে।’’
জোশী অবশ্য মানছেন, এই দল নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ভাল কিছু করা কঠিন। বিশেষ করে টেস্টে। তবে টি-টোয়েন্টিতে ভাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে অবাক হবেন না তিনি। পাশাপাশি শুনেছেন, ২০০০ সালের সেই টেস্টের দুই দলকে ইডেনে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন নতুন বোর্ড প্রেসি়ডেন্ট। ‘‘সৌরভ দায়িত্ব পাওয়ার পরে দারুণ কাজ করছে। ইডেনে গোলাপি বলের টেস্ট দেখতে পেলে খুব ভাল লাগবে,’’ বলে দিলেন এক সময় সৌরভের দলে খেলা স্পিনার।