সুনীলের সেঞ্চুরি ম্যাচে আমন্ত্রণ বন্ধু বিরাটকে

সুনীলের হ্যাটট্রিকে চিনা তাইপেকে ৫-০ চূর্ণ করে আন্তঃমহাদেশীয় কাপে দুর্দান্ত শুরু করেছে ভারতীয় দল। সুনীল অবশ্য এই মুহূর্তে অতীত নিয়ে ভাবছেন না।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৮ ০৪:০৪
Share:

প্রত্যয়ী: কিনিয়ার বিরুদ্ধে শততম ম্যাচে গোল করতে মরিয়া সুনীল। ফাইল চিত্র

চব্বিশ ঘণ্টা আগেই সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে গলা মিলিয়ে ক্রীড়াপ্রেমীদের আন্তঃমহাদেশীয় কাপে মাঠে আসার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এ বার তাঁকেই সুনীলের শততম ম্যাচ দেখতে আমন্ত্রণ জানাল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। তিনি— ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহালি।

Advertisement

সুনীলের হ্যাটট্রিকে চিনা তাইপেকে ৫-০ চূর্ণ করে আন্তঃমহাদেশীয় কাপে দুর্দান্ত শুরু করেছে ভারতীয় দল। সুনীল অবশ্য এই মুহূর্তে অতীত নিয়ে ভাবছেন না। কিনিয়ার বিরুদ্ধে গোল করেই দেশের জার্সিতে শততম আন্তর্জাতিক ম্যাচ স্মরণীয় করতে রাখতে চান তিনি।

রবিবার সকালে মুম্বইয়ে অনুশীলনের পরে সাংবাদিক বৈঠকে সুনীল বলেছেন, ‘‘ভারতের হয়ে একশোটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার স্বপ্ন কখনও দেখিনি। আমার কাছে পুরো ব্যাপারটাই অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘বিশ্বাস করুন, শততম ম্যাচের ব্যাপারটা আমার মাথায় ছিল না। কিন্তু রাতে মায়ের সঙ্গে কথা বলার সময় বুঝতে পারলাম, এই ব্যাপারটা নিয়ে প্রচণ্ড আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। আমাকে বুঝিয়েছেন, এই ম্যাচটা আমার ফুটবলজীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’’

Advertisement

ছেলের শততম ম্যাচের সাক্ষী থাকতে সোমবার গ্যালারিতে থাকার পরিকল্পনা রয়েছে সুনীলের বাবা ও মায়ের। দিল্লি থেকে ফোনে ভারতীয় অধিনায়কের বাবা খড়্গ ছেত্রী আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘সোমবার দুপুরের মধ্যে আমাদের মুম্বই পৌঁছে যাওয়ার কথা। দিনটা আমাদের কাছেও তো স্মরণীয়।’’ সুনীল সব সময়ই বলেন, বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণা ছাড়া ফুটবলার হিসেবে কখনওই প্রতিষ্ঠিত হতে পারতেন না। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকেও তিনি বলেছেন, ‘‘আমার অভিভাবক, বন্ধু, কোচ, সতীর্থ, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ফুটবলপ্রেমীদের ধন্যবাদ। ওঁরা পাশে ছিলেন বলেই সফল হতে পেরেছি।’’

সুনীলের শততম ম্যাচ নিয়ে অভিভূত সচিন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড়, সুরেশ রায়না, মিতালি রাজ, মনোজ তিওয়ারি থেকে বলিউড তারকা অনুপম খের, বরুণ ধওয়নও। টুইটারে তাঁরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সুনীলকে। তবে মন খারাপ ভারতীয় অধিনায়কের বোন বন্দনার! ব্যক্তিগত কাজে আটকে পড়ায় মুম্বই যেতে পারছেন না তিনি।

সুনীল উচ্ছ্বসিত ভাইচুং ভুটিয়ার নজির স্পর্শ করা নিয়েও। ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে একমাত্র ভাইচুংই দেশের হয়ে একশোটির বেশি ম্যাচ খেলেছেন। কিনিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে প্রাক্তন ভারত অধিনায়কও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উত্তরসূরিকে। সোমবার মাঠে সুনীলের হাতে বিশেষ স্মারকও তুলে দেবেন তিনি। থাকবেন ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল্ল পটেলও। সুনীল বলছেন, ‘‘ভারতের দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে শততম ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া আমার জীবনের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি। তবে আবেগে ভেসে গেলে চলবে না। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলাই আমার প্রধান লক্ষ্য।’’

কিনিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না সুনীল। বারবারই ফিরে যাচ্ছিলেন অতীতে। শোনালেন, ২০০৪ সালে ভারতীয় দলে অভিষেকের কাহিনি। সুনীল বলেছেন, ‘‘ভারতীয় দলের কোচ তখন ছিলেন সুখবিন্দর সিংহ। আমি আর নবিদা (রহিম নবি) সবে ডাক পেয়েছি জাতীয় দলে। কিন্তু খেলার সুযোগ পাব কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম। ম্যাচের দিন দেখলাম, আমাদের দু’জনকেই প্রথম দলে রেখেছেন সুখি স্যর। অভিষেক ম্যাচেই গোল করেই গ্যালারির দিকে ছুটে গিয়েছিলাম। দেশের হয়ে প্রথম গোল করার উৎসব করেছিলাম পাকিস্তানের দর্শকদের সঙ্গে।’’

ভারতের জার্সিতে টানা চোদ্দো বছর দুরন্ত সাফল্যের রহস্য কী? সুনীলের ব্যাখ্যা, ‘‘পরিশ্রম ও সাফল্যের খিদে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement