নায়ক: মায়ানমার ম্যাচে সুনীলের গোলে জয়। —নিজস্ব চিত্র
দেশের জার্সিতে ফের জ্বলে উঠলেন সুনীল ছেত্রী। মায়ানমারের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের ম্যাচে শেষ মুহূর্তে করা তাঁর গোলেই জিতল স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের দল।
আউন সাং সুচির দেশে শেষ বার ভারতীয় দল জিতেছিল ১৯৫৩ সালে। এ দিন সুনীলের গোলেই কাটল সেই চৌষট্টি বছরের অভিশাপ।
ম্যাচ জিতিয়ে সুনীল ছেত্রী বলছেন, ‘‘বিদেশের মাটিতে এই তিন পয়েন্টের মূল্য অনেক। নিজেদের মাঠে মায়ানমার বেশ কঠিন প্রতিপক্ষ। আগের বার এখানে খেলতে এসে হেরে ফিরেছিলাম। এই জয় আমাদের মূলপর্বে যেতে অনেকটাই সাহায্য করবে।’’
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের (১৩২) চেয়ে চল্লিশ ধাপ (১৭২) পিছনে থাকলেও এই টুর্নামেন্টের জন্য ভাল রকম প্রস্তুতি নিয়েছে। এ দিন ম্যাচের শুরু থেকেই যার দাপট আছড়ে পড়ছিল ভারতীয় রক্ষণে। সেটা আরও বাড়ে দ্বিতীয়ার্ধে। যা এ দিন দারুণ সামলেছে আনাস-প্রীতমদের রক্ষণ। তবু এরই মাঝে চার লো করে ফেলতে পারত ভারত। কিন্তু জ্যাকিচন্দ, রবিনরা করমর্দনের দূরত্বে দাড়িয়ে সেই গোলের সুযোগ নষ্ট করলে চাপ বেড়ে গিয়েছিল ভারতের।
ম্যাচের একদম অন্তিম লগ্নে নিজেদের রক্ষণ থেকে প্রতি-আক্রমণের সূচনা সুনীলেরই পা থেকেই। ডান প্রান্ত থেকে উদান্তা সিংহ সেই বল ধরে ডান মায়ানমার বক্সে ঢুকে মাইনাস করলে সেই বলে পা ছুইয়ে গোল করে যান সুনীল। গোলের ক্ষেত্রে উদান্তার ক্ষিপ্র গতি এবং সুনীলের সেই বল লক্ষ্য করে দ্রুত বক্সে জায়গা করে নেওয়া এবং ফিনিশিং দেখার মতো।
দুরন্ত গোলের পর সুনীলের ইয়াঙ্গন থেকে তাঁর বেঙ্গালুরু এফসি সতীর্থ উদান্তা সম্পর্কে রসিকতা ভরা উত্তর, ‘‘ও তো শুরু থেকেই ফিফথ গিয়ারে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিল। ভাবছিলাম সেই গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজে বক্সে ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারব কি না।’’
আর তাঁর নিজের গোল? বিনয়ী সুনীল যার উত্তরে বলছেন, ‘‘টিমে রক্ষণের সঙ্গে আক্রমণ সকলে মিলেই করতে হয়। গোল না খাওয়ায় বুঝতে হবে আমাদের রক্ষণের কাজটা সফল। আর আমি গোল করলেও এর পিচে গোটা দলের অবদান রয়েছে। কাজেই উচ্ছ্বসিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। খুশি একটাই যে তিন পয়েন্ট নিয়ে দেশে ফিরতে পারছি।’’
ভারতীয় কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন অবশ্য বলছেন, ‘‘২০১৯ এশিয়ান কাপে খেলতে গেলে আমাদের এখনও ছ’পয়েন্ট পেতে হবে। কাজেই লক্ষ্য থেকে দূরেই রয়েছি আমরা। ছেলেরা সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে আরও গোলে জিততে পারতাম আমরা।’’
এশিয়ান কাপে ভারতের গ্রুপে মায়ানমার ছাড়াও রয়েছে ম্যাকাও ও কিরঘিজস্তান। ভারতের পরবর্তী ম্যাচ ঘরের মাঠে ১৩ জুন। প্রতিপক্ষ কিরঘিজস্তান।
ভারত: গুরপ্রীত সিংহ, প্রীতম কোটাল, আনাস এডাথোডিকা, সন্দেশ ঝিঙ্গন, নারায়ণ দাস, রওলিন বর্জেস (ধনপাল গণেশ), ইউজিনসন লিংডো, জ্যাকিচন্দ সিং (হোলিচরণ নার্জারি), সুনীল ছেত্রী, জেজে লালপেখলুয়া, রবিন সিংহ (উদান্তা সিংহ)।