সুলে মুসা।
অগ্রজ মজিদ বাসকরকে শ্রদ্ধা অনুজ সুলে মুসার। রবিবার মধ্যরাতে ময়দানের ‘বেতাজ বাদশা’ শহরে পা রেখেছেন। মুসা অবশ্য আরও আগে পুরনো শহরে ফিরে এসেছেন। থাকবেনও মজিদের থেকে বেশি দিন।
রবিবার গোটা শহর যখন মজিদ নিয়ে চর্চায় ব্যস্ত, ঘানার ফুটবলার মুসা তখন বলছেন, ‘‘মজিদের নাম আমি অনেক আগেই শুনেছিলাম।’’ টাইমমেশিনের সাহায্য না নিয়ে মুসা ফিরে যাচ্ছেন ফেলে আসা দিনে। মুসা বলছিলেন, ‘‘মনাদা (মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য) তখন আমাদের কোচ ছিলেন। ওঁর মুখে মজিদ সম্পর্কে অনেক কথা শুনেছি। তা ছাড়া সমর্থকদের মুখেও শুনেছি মজিদের অনেক কথা। খুব বড় মাপের ফুটবলার ছিলেন। ১৩ তারিখ ক্লাবের অনুষ্ঠানে দেখা হবে মজিদের সঙ্গে। তখন ওঁর সঙ্গে অনেক কথা হবে।’’
১৩ তারিখ নেতাজি ইনডোরে তিল ধারনের জায়গা থাকবে না। সে দিন চাঁদের হাট বসবে ইনডোরে। একশো বছরে ক্লাবকে নেতৃত্ব দেওয়া ক্যাপ্টেনরা উপস্থিত থাকবেন। আশিয়ান-জয়ী ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক মুসাও অপেক্ষায় রয়েছে সেদিনের।
আশিয়ান কাপের ফাইনালে চোট নিয়ে খেলে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সকে নিশ্ছিদ্র রেখেছিলেন মুসা। সেই স্মৃতি এখনও টাটকা তাঁর মনে। ফাইনালে বেক তেরো সাসানার মতো দলকে মাটি ধরিয়ে আশিয়ান কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ফাইনালে খেলার মতো পরিস্থিতিই ছিল না মুসার। কোমড়ে চোট।
সেই প্রসঙ্গে লড়াকু ডিফেন্ডার স্মৃতির পাতা উল্টে বলেন, ‘‘আমার সব কথা মনে আছে। শান্তিদা (শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত) দারুণ চিকিৎসক। উনি ছিলেন বলেই আমি সেদিন খেলতে পেরেছিলাম। টিম মিটিংয়ে আমি বলেছিলাম, খেলতে পারব না। কোমড়ে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছি। ঘুরতে পারছিলাম না। সুভাষ ভৌমিক খুব রেগে যান। এমন সময়ে শান্তিদা আমার ঘরে আসেন। আমার চোটের কথা জানতে চান। আমি তখন ব্যথায় কাতরাতে শুরু করে দিয়েছি। শান্তিদাকে বলেই ফেলি আমি নামতে পারব না। শান্তিদা তখন বাইরে থেকে আমার জন্য একটা বেল্ট এনে দেন। সেই বেল্ট পরেই আমি খেলতে নামি। প্রথমার্ধে ব্যথা অনুভব করলেও দ্বিতীয়ার্ধে আর চোট বুঝতেই পারিনি। যতদূর মনে পড়ছে, দ্বিতীয়ার্ধে বেল্ট খুলে খেলেছিলাম। কোমড়ের সেই চোট আর জীবনে অনুভব করিনি।’’
আশিয়ান জয়ের স্মৃতি মুসার কাছে মধুর। তবে সেরা ম্যাচ বললে, মুসার চোখের সামনে ভেসে উঠছে মোহনবাগানকে হারিয়ে ইস্টবেঙ্গলের লিগ জয়। মুসা বলছিলেন, ‘‘ফ্লাড লাইটে ম্যাচটা ছিল। রামন বিজয়ন গোল করেছিল সেদিন।’’ রামন বিজয়ন আবার মুসার কথা শুনে হেসে বলেন, ‘‘১৯৯৮ সালের কলকাতা লিগের ম্যাচের কথাই মনে হয় মুসা বলছে। ওই ম্যাচে গোল্ডেন গোল করেছিলাম আমি। আমার গোলে সে বার মোহনবাগানকে হারিয়ে কলকাতা লিগ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল।’’
শতবর্ষে স্মৃতি রোমন্থন করছেন ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলাররা।