প্র্যাকটিসে এটিকে কোচ। বুধবার। -নিজস্ব চিত্র
টুর্নামেন্টের এই মুহূর্তের সর্বোচ্চ গোলদাতা মেন্ডোজা সম্পর্কে একটি শব্দও খরচ করতে নারাজ।
চেন্নাইয়ানের সেটপিস মাস্টার ইলানোর কার্ডের সমস্যায় না থাকাটা নিয়েও কোনও মন্তব্য নারাজ তিনি।
পুণেতে সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে খেলতে যাওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগে কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই বরং অভিষেক বচ্চনের টিমের কোচ মার্কো মাতেরাজ্জির প্রশংসায় পঞ্চমুখ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। বলে দিলেন, ‘‘মাতেরাজ্জি চেন্নাই টিমটাকে ভাল ভাবে তৈরি করে নিয়েছে। আমরা একটা শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে যাচ্ছি। কঠিন ম্যাচ।’’ একটি বিমানে গোটা টিমের টিকিট না মেলায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর এবং সন্ধ্যায় দু’দফায় পুণে যাচ্ছে আটলেটিকো দে কলকাতা। সকালে অনুশীলনের পর। বুধবার দুপুরে বিধাননগর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে হঠাৎ-ই সাংবাদিক সম্মেলন করবেন বলে মঙ্গলবার এটিকে কর্তাদের কাছে ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন রাশভারি, শৃঙ্খলাপরায়ণ কোচ। সেখানেই তিনি বলে দেন, ‘‘আমি কখনও ইতিহাস নিয়ে ভাবতে নারাজ। আমার কাছে পুণের সেমিফাইনাল ম্যাচ-ই এখন ফোকাস।’’
গ্রুপ লিগে দু’বারই মাতেরাজ্জির চেন্নাইকে হারিয়েছে কলকাতা। তা সত্ত্বেও শেষ চারে তাঁদের যথেষ্ঠ গুরুত্ব দিচ্ছেন হিউম-অর্ণব-বোরহাদের কোচ। বলে দিলেন, ‘‘এটা নক আউট পর্যায়। ডিফারেন্ট বল গেম। আগে কী হয়েছে তা নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নই। মাথায় রাখছি পরের পর্বের ম্যাচ জেতার কথা।’’ তাঁর মতে গ্রুপ লিগে সুনীল-সনিদের মুম্বইয়ের কাছে হারটা নাতো-দ্যুতিদের আরও সতর্ক করেছে।
দ্যুতির চোট ছিল। পুরো সুস্থ। গ্যাভিলানের চোট সেরে গিয়েছে। ফলে পুরো টিমই হাতে পাচ্ছেন হাবাস। এ দিন অনুশীলনে দেখা গেল হেল্ডার পস্টিগাও চুটিয়ে খেলছেন। কিন্তু তাতেও হাবাস যে চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাসী তা তার শরীরী ভাষায় একবারও ফুটে ওঠেনি। বরং পস্টিগাকে সেমিফাইনালে খেলাবেন কি না সেই প্রশ্নে বেশ চটেই গিয়েছেন। বলে দিয়েছেন, ‘‘বারবার এই প্রশ্ন করা হচ্ছে কেন বুঝতে পারছি না। পস্টিগার রিকভারি চলছে। তৈরি হচ্ছে। সেরে উঠলে তখন এটা নিয়ে ভাবা যাবে। তবে ও টিমের সঙ্গে পুণে যাচ্ছে।’’
সেমিফাইনাল খেলতে যাওয়ার আগে দ্যুতি। বুধবার। -শঙ্কর নাগ দাস
অভিষেক বচ্চন ও তাঁর সঙ্গীরা তাঁদের হোম ম্যাচ বন্যা বিধ্বস্ত চেন্নাইতে করার জন্য নানা ভাবে চেষ্টা করেছিলেন। মূলত দর্শক সমর্থন পাওয়ার জন্য। কিন্তু সেখানকার রাজ্য সরকার এবং আইএসএল সংগঠকরা সেই ঝুঁকি নেননি। ম্যাচ সরে গিয়েছে পুণেতে। এটা তাদের সুবিধা মানতে নারাজ হাবাস। বলে দিলেন, ‘‘এটা কোনও সুবিধা নয়। আমরা চেন্নাই বা পুণে যেখানেই খেলা হোক তৈরি ছিলাম। আলাদা কোনও পার্থক্য নেই।’’ আগে বাইরের ম্যাচ পরে ঘরের মাঠে খেলা। এটা তো বিরাট সুবিধা? প্রশ্ন শুনে হাসতে হাসতে চ্যাম্পিয়ন কোচের মন্তব্য। ‘‘আরে আমরা তো ১১৭ মিনিটে গোল করেও ম্যাচ জিতেছি।’’
পুণের মাঠ ছোট এবং তাতে কলকাতার অসুবিধা। কারণ কলকাতার অন্যতম শক্তি উইং প্লে করা কঠিন। প্রশ্ন শুনে কিছুটা বিরক্ত হতে দেখা যায় স্প্যানিশ কোচকে। বলে দেন, ‘‘অসুবিধা হলে দু’জনেরই হবে। ওসব ভেবে লাভ নেই।’’ যেমন হাবাস বিরক্ত হন তাঁর কাছে করা অন্য একটি প্রশ্ন নিয়ে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি নাকি সেমিফাইনালে চেন্নাইয়ানকে এড়াতে চেয়েছিলেন। ‘‘কে বলছে এসব কথা। যে সামনে আসত তার সঙ্গেই খেলব এই মানসিকতা নিয়েই চলি আমি।’’
পরপর চারটে ম্যাচ দিতে আইএসএলে নতুন রেকর্ড গড়ে শেষ চারে উঠেছে মাতেরাজ্জির টিম। যা এর আগে কোনও দল পারেনি। কলকাতাও জয়ের হ্যাটট্রিকের পর মুম্বইয়ের কাছে হেরেছে। সে কথা মনে করিয়ে দিতে হাবাস বলে দেন, ‘‘চেন্নাইয়ান যথেষ্ট ব্যালান্সড সাইড। খুব ভাল খেলছে। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ আমাদের সামনে।’’
বার বার ঘড়ি দেখছিলেন। সময় পেরিয়ে যাচ্ছে দেখে অনুশীলনে ঢুকে পড়লেন হাবাস। ততক্ষণে অবশ্য পুরো আটলেটিকো টিম দৌড় শুরু করে দিয়েছে। হাবাস সেখানে গিয়ে শুরু করলেন নির্দেশ। বোঝাই গেল, মিশন চেন্নাই কী ভাবে ঢুকে পড়েছে এটিকে শিবিরে।