চনমনে: বিরাট, হার্দিকের সঙ্গে এই ছবি পোস্ট করলেন সিরাজ (মাঝে)।
তাঁর সময়কালে অস্ট্রেলিয়া দল এক অন্য উচ্চতায় উঠেছিল। অধিনায়ক হিসেবে ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছেন তিনি। সেই স্টিভ ওয়ের মুখে এখন শোনা যাচ্ছে বর্তমান ক্রিকেটের এক অধিনায়কের কথা। যাঁকে দেখে মুগ্ধ স্টিভও। সেই অধিনায়কের নাম বিরাট কোহালি।
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বজয়ী অধিনায়ক স্টিভ ওয় মনে করেন, কোনও কিছুই অসম্ভব নয়— এই মনোভাবটা ভারতীয় দলের মননে গেঁথে দিতে সফল হয়েছেন কোহালি। ভারত এবং ভারতীয় ক্রিকেটের উপরে এক তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন স্টিভ। সোমবার যে তথ্যচিত্র নিয়ে অনুষ্ঠানে এক বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘কোহালি হল আধুনিক ভারতীয় মানসিকতার প্রতীক। যে মানসিকতা বলে, নিজের কাজটা ঠিক মতো করে যাও, কাউকে ভয় পেয়ো না। সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়াও। দেখবে, কোনও কিছুই আর অধরা থাকবে না, কোনও কিছুই অসম্ভব মনে হবে না। এই মানসিকতার জন্যই ভক্তরা ওকে ভালবাসে। কোহালি হল আধুনিক সময়ের এক নায়ক।’’
এ দিকে, আমদাবাদে চতুর্থ টেস্টের আগে জোরকদমে অনুশীলন সারছে ভারতীয় দল। সোমবার নেটে দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করেন ভারতীয় দলের ব্যাটিংয়ের তিন স্তম্ভ বিরাট কোহালি, রোহিত শর্মা এবং অজিঙ্ক রাহানে।সেই ভিডিয়ো পোস্ট করেছে ভারতীয় বোর্ড নিজেদের টুইটার হ্যান্ডলে। পরে কোহালি এবং রোহিতের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেন ভারতীয় দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী।
ভারতের সঙ্গে স্টিভের ভালবাসার সম্পর্ক অনেক দিনের। যে সম্পর্কের উপরে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে এই তথ্যচিত্র। নাম, ‘ক্যাপচারিং ক্রিকেট: স্টিভ ওয় ইন ইন্ডিয়া।’ যে তথ্যচিত্রে স্টিভ জানিয়েছেন, ১৯৮৬ সালে ভারতে নামার পরে কী রকম ধাক্কা খেয়েছিলেন তিনি। ‘‘ওই সময় বোম্বেতে (তখনও মুম্বই হয়নি) নেমে আমি বিশাল ধাক্কা খেয়েছিলাম। সম্পূর্ণ অন্য একটা সংস্কৃতি। চারদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। যে দিকে তাকাচ্ছি, দেখছি গাড়ি, মোটরবাইক, পশু। ফুটপাথে ইঁদুর-বিড়াল দৌড়ে বেড়াচ্ছে। আমার মনে হয়েছিল, কোথায় এসে পড়লাম।’’
সেই শুরু। তার পরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ক্রমশ নিবিড় হয়েছে স্টিভের। ক্যামেরা হাতে তিনি ভারতের ন’টি শহরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কথা বলেছেন মানুষের সঙ্গে, ক্রিকেটারদের সঙ্গে। দেখেছেন, ক্রিকেট যেখানে ধর্মেরই আর এক নাম হয়ে উঠেছে। দেখেছেন, ক্রিকেটের প্রতি ভারতীয়দের বাঁধনহীন ভালবাসা। আর এ সবই নিজের তথ্যচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন স্টিভ। কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের কথায়, ‘‘সেই ’৮৬ সালে ভারতে পা রাখার পর থেকে আমি এ দেশের মানুষের খেলাটার প্রতি ভালবাসা দেখে মুগ্ধ হয়েছি।’’ তিনি এও বলেছেন, ‘‘আমি ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেছি। তাজমহল যেমন দেখেছি, তেমন দেখেছি হিমাচলপ্রদেশের ক্রিকেট স্টেডিয়াম। দেখেছি, ওভাল ময়দান। ঘুরে বেড়িয়েছি দিল্লি এবং কলকাতার নানা জায়গায়। যা আমার স্মৃতি ভাণ্ডারকে সম্বৃদ্ধ করেছে। আমাকে দিয়েছে অনেক গল্পের রসদ। যে স্মৃতি আজীবন আমার সঙ্গে থেকে যাবে।’’ এই তথ্যচিত্রে দেখানো হয়েছে সচিন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড়, অ্যাডাম গিলক্রিস্টদের সাক্ষাৎকারও। স্টিভের আশা, ভারতের মানুষ নিজেদের মেলাতে পারবেন এই তথ্যচিত্রের সঙ্গে।