স্টিভ স্মিথ।
সিরিজ শুরু হওয়ার আগে ভারতের বড় চিন্তার কারণ ছিলেন স্টিভ স্মিথ। সিরিজের প্রথম ম্যাচের পরে দেখা যাচ্ছে, চিন্তার কারণটা আরও বড় হয়ে গিয়েছে। প্রথম ওয়ান ডে-তে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি করে স্মিথ জানিয়েছেন, তিনি ভাল ছন্দেই আছেন। যা আজ, রবিবার দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচের আগে উদ্বেগে রাখবে ভারতকে।
অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার বড় রান যোগ করার পরে তিন নম্বরে নেমে শুক্রবার সেঞ্চুরি করেন স্মিথ। তার পরে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘ছন্দটা আবার ফিরে পেয়েছি। আমি বল দেখেছি আর মেরেছি। অবশ্য তার আগে ওপেনাররা একটা ভাল মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিল।’’ প্রথম ওয়ান ডে-তে স্মিথের ব্যাট থেকে এসেছে ৬৬ বলে ১০৫ রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওয়ান ডে-তে তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি করেন তিনি।
দিন কয়েক আগেই স্মিথ জানিয়েছিলেন, অনুশীলনেই তিনি বুঝতে পারছেন, পুরনো ছন্দটা ফিরে পাচ্ছেন। ম্যাচে সেটাই বোঝা গেল। স্মিথের কথায়, ‘‘আমি ঠিক করে নিয়েছিলাম, কোন বোলারকে কোথায় মারব। নিজের শক্তি অনুযায়ী শট খেলেছি।’’
রবিবার সিডনিতেই দ্বিতীয় ওয়ান ডে। ভারতকে এই ম্যাচে হারাতে পারলেই ওয়ান ডে সিরিজ জিতে নেবে অস্ট্রেলিয়া। বিরাট কোহালির সব চেয়ে বড় সমস্যা, হাতে ষষ্ঠ বোলার না থাকা। অধিনায়ক কোহালি জানিয়েছেন, হার্দিক পাণ্ড্য এখনও বল করার মতো অবস্থায় আসেননি এবং তাঁদের হাতে এমন কোনও ক্রিকেটার নেই, যাঁকে অলরাউন্ডার হিসেবে খেলানো যেতে পারে। শুক্রবার ম্যাচের পরে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শেন ওয়ার্ন তো মজা করে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘বিরাট, তুমি কয়েক ওভার বল করার কথা ভেবেছিলে নাকি?’’ কোহালির জবাব, ‘‘হ্যা, নেটে বল করাই যেতে পারে।’’
মাইকেল ভনের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটার মনে করেন, এ রকম খেললে অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতকে তিনটি সিরিজেই হারতে হবে। ওয়ান ডে, টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট। প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ভনের বক্তব্য, পাঁচ বোলারে খেললে ভারতের পক্ষে ভাল কিছু করা খুবই কঠিন।
এই সিরিজের আগে আইপিএলে খুব একটা রান পাননি স্মিথ। অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানের ধারণা, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য অতি আগ্রাসী হতে গিয়েই ব্যর্থ হন তিনি। স্মিথের মন্তব্য, ‘‘কিছু দিন ধরে মনে হচ্ছিল, কোথাও একটু সমস্যা হয়েছে। খুব সম্ভবত তার জন্য দায়ী টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। অতিরিক্ত আগ্রাসী হতে গিয়ে নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারছিলাম না। তার পরে নিজের ব্যাটিং গ্রিপটা বদলাই। আগে যে ভাবে ব্যাটটা ধরতাম, এখন সে ভাবেই ধরছি। সব ঠিকই লাগছে।’’
দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতীয় দলে কোনও পরিবর্তন হবে কি না, বলা না গেলেও অস্ট্রেলিয়ায় একটা হতে চলেছে। আগের ম্যাচে বল করতে গিয়ে চোট পান মার্কাস স্টোয়নিস। জানা গিয়েছে, তিনি পাঁজরে যন্ত্রণা অনুভব করেন। রবিবারের ম্যাচে অনিশ্চিত অস্ট্রেলিয়ার এই অলরাউন্ডার। তাঁর জায়গায় খেলতে পারেন ক্যামেরন গ্রিন। যাঁকে নতুন প্রতিভা হিসেবে দেখছে অস্ট্রেলিয়া।
স্মিথও ইঙ্গিত দিয়েছেন, সুযোগ পেতে পারেন ক্যামেরন। প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘শেফিল্ড শিল্ডে খুব ভাল খেলেছে ক্যামেরন। নেটে আমি ওর কয়েকটা বল খেলেছি। বেশ গতি আছে। স্টোয়নিসের বিকল্প হিসেবে সম্ভবত এমন কাউকে বাছা হবে, যে বলটা করতে পারে। সে দিক দিয়ে দেখলে ওর সম্ভাবনা আছে।’’ কিংবদন্তি স্পিনার ওয়ার্নের মুখেও শোনা গিয়েছে ক্যামেরনের প্রশংসা। ওয়ার্ন বলেছেন, ‘‘ক্যামেরনকে দেখে মনে হয়েছে ছন্দেই আছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওর সুযোগ পাওয়া উচিত।’’
প্রথম ম্যাচে ভারতের সর্বোচ্চ স্কোরার হার্দিক পাণ্ড্য স্বীকার করেছেন, ষষ্ঠ বোলারের অভাবটা তাঁদের ভোগাচ্ছে। তিনি নিজে বল করতে পারছেন না। তা হলে অলরাউন্ডার হিসেবে কাকে ভাবা যেতে পারে? হার্দিক জানিয়েছেন, বাড়িতে এক জন বসে আছে। তাঁর ইঙ্গিত, দাদা ক্রুণাল পাণ্ড্যের দিকে। বাঁ-হাতি স্পিনার-অলরাউন্ডার ক্রুণাল আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। এই মুহূর্তে অবশ্য ভারতীয় দলে বাঁ-হাতি স্পিনার এবং অলরাউন্ডারের কাজটা আপাতত করছেন রবীন্দ্র জাডেজা।