প্রত্যাশা মতোই রঞ্জি ট্রফিতে নিরপেক্ষ কেন্দ্রে খেলার বিরুদ্ধে মত দিলেন ঘরোয়া ক্রিকেটের অধিকাংশ কোচ ও অধিনায়ক। মঙ্গলবার মুম্বইতে গত বারের রঞ্জি অধিনায়ক ও কোচেদের নিয়ে ‘কনক্লেভ’ ছিল। সেখানে নিরপেক্ষ কেন্দ্র নিয়ে অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে অনেকেই পক্ষে মত দিতে পারেননি।
ক্রিকেটীয় দিক তো ছিলই, পরিবার ছেড়ে অনেক দিন বাইরে বাইরে ঘোরার ব্যাপারেও অনুযোগ করেন একাধিক ক্রিকেটার। তাঁদের বক্তব্যের যা ধরন, তাতে ধরে নেওয়া যায় সামনের বার থেকেই নিরপেক্ষ কেন্দ্রে রঞ্জির নিয়ম বদলে যাচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ডের টেকনিক্যাল কমিটি। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যে কমিটির প্রধান।
বিকল্প নিয়ম হিসেবে সভায় গরিষ্ঠরা পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার কথা বলেছেন। যেটাকে বলা হয় ‘হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে’। তবে আইপিএলের মতো একই মরসুমে একবার নিজের মাঠে, অন্যবার বাইরে খেলার নিয়ম এটা নয়। রঞ্জির ক্ষেত্রে প্রথা হচ্ছে, গত বার যদি মুম্বই খেলে গিয়ে থাকে ইডেনে তা হলে এ বার বাংলা যাবে মুম্বইয়ে খেলতে।
সেই নিয়মেই ফিরে যাওয়ার কথা বলেছেন অধিনায়ক-কোচেরা। বোর্ড এবং বিভিন্ন রাজ্য সংস্থার একাধিক কর্তাও এই প্রথার পক্ষে। তাতে খরচ কমবে এবং ঘরের মাঠে নিজেদের দলের খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শকরা। অনেকেই বলছেন, এমনিতেই রঞ্জি ট্রফির খেলা দেখতে ভিড় হচ্ছে না। তার উপর অন্য দলের খেলা পড়লে আর কার আগ্রহ থাকবে মাঠে যাওয়ার? তার চেয়ে বাংলা যদি ইডেনে খেলে বা মুম্বই খেলে ওয়াংখেড়েতে, অল্প সংখ্যক দর্শক মাঠে খেলা দেখতে এলেও আসবে।
আরও পড়ুন: আইপিএল থাকলে আগেই বিশ্বকাপ জিততাম: সচিন
সভায় কথা ওঠে ঘরের মাঠে কিছু কিছু দলের অতিরিক্ত সুবিধে নেওয়া নিয়ে। অনেক জায়গাতেই দেখা যায় ঘূর্ণি পিচ বানিয়ে স্পিনারে দল বোঝাই করে ঘরের মাঠে খেলার অন্যায় সুবিধে তুলছে দলগুলি। সেটা কী ভাবে আটকানো হবে? এ বারে রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন গুজরাতের অধিনায়ক পার্থিব পটেল প্রস্তাব দেন, বোর্ডের পিচ প্রস্তুতকারকদের হাতে সব কেন্দ্রের পিচের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হোক। তা হলেই স্থানীয় কিউরেটর দিয়ে আর পিচকে বিকৃত করতে পারবে না ‘হোম’ টিম। অন্যান্য কয়েকটি দল প্রস্তাব দিয়েছে, টস তুলে দেওয়া হোক। অতিথি দল ঠিক করবে তারা প্রথমে ব্যাটিং করবে না বোলিং। এই প্রস্তাবকেও অনেকে সমর্থন করেছেন।
সভায় ছিলেন বোর্ডের সচিব অমিতাভ চৌধুরী। তাঁর কথা মতো ঠিক হয়েছে, টস তুলে দেওয়া এবং বোর্ডের অনুমোদিত নিরপেক্ষ পিচ প্রস্তুতকারকের হাতে সব কেন্দ্রের পিচের দায়িত্ব তুলে দেওয়া— এই দু’টি প্রস্তাবই সৌরভদের টেকনিক্যাল কমিটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সৌরভ-রা।
সভায় ঘরোয়া ক্রিকেটে টাকা বাড়ানোর কথা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। উপস্থিত অনেক ক্রিকেটার এ নিয়ে সওয়াল করে বলেছেন, বোর্ডের আয় বাড়লেও ঘরোয়া ক্রিকেটারদের টাকা বাড়ানো হয়নি বহু বছর ধরে। যা পরিস্থিতি, ক্রিকেটারদের বেতন নিয়ে বোর্ড এখন পুরোপুরি চাপে। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাসি ঘরোয়া ক্রিকেটাররাও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিলেন।