রুটরা ঘুরছেন আগ্রা, অ্যাঞ্জেলোদের মন ভিডিওয়

এক দিকে, প্রত্যাশার গন্ধমাদন ঘাড়ে নিয়ে নামা গত বারের চ্যাম্পিয়ন। অন্য দিকে, টুর্নামেন্টের শুরুতে ‘ডার্ক হর্স’ হিসেবে শুরু করা একটা টিম।

Advertisement

প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৬ ০৪:১৩
Share:

তাজ দর্শনে ইংল্যান্ডের ডেভিড উইলি, লিয়াম প্লাঙ্কেট, জস বাটলার ও জো রুট। ছবি: পিটিআই।

এক দিকে, প্রত্যাশার গন্ধমাদন ঘাড়ে নিয়ে নামা গত বারের চ্যাম্পিয়ন। অন্য দিকে, টুর্নামেন্টের শুরুতে ‘ডার্ক হর্স’ হিসেবে শুরু করা একটা টিম।

Advertisement

এক দিকে, ভারতে খেলে খেলে দেশটাকে প্রায় দ্বিতীয় দেশ বানিয়ে ফেলা উপমহাদেশীয় প্লেয়ারের সমষ্টি। অন্য দিকে, এমন ক্রিকেটারে বোঝাই একটা টিম যাদের বেশির ভাগের এটাই প্রথম ভারত দর্শন।

এক দিকে, টি-টোয়েন্টি মুকুট ধরে রাখার হাইওয়ে থেকে অনেকটা বিচ্যুত হয়ে যাওয়া একটা দল। অন্য দিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্য জয় তুলে বিশ্বযুদ্ধে নতুন বিশ্বাস পেয়ে যাওয়া একটা টিম।

Advertisement

শ্রীলঙ্কা এবং ইংল্যান্ড— শনিবার কোটলা যুদ্ধের আগে দু’টো টিমে যতই তফাত থাক, একটা ব্যাপার দু’টো টিমকে কোথাও গিয়ে যেন মিলিয়ে দিচ্ছে। সেটা, সেমিফাইনালের জটিল অঙ্ক।

এক কথায়, গ্রুপ ওয়ান থেকে দ্বিতীয় টিম হিসেবে কারা সেমিফাইনালের দিকে আরও এগিয়ে যাবে, তা শনিবারের যুদ্ধের উপর অনেকটাই নির্ভর করে থাকবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুক্রবার এবি ডে’ভিলিয়ার্সদের হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলল। দ্বিতীয় টিম হিসেবে ওঠার যুদ্ধ এখন অনেকটাই শ্রীলঙ্কা আর ইংল্যান্ডের মধ্যে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে অবশ্যই এখনও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ শ্রীলঙ্কা শনিবার জিতলে এবং গ্রুপের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তারা জিতলে ডে’ভিলিয়াসর্দেরও একটা সম্ভাবনা পড়ে থাকবে সেমিফাইনালের। তবে আপাতত দু’নম্বরে ইংল্যান্ড। তিন ম্যাচে পয়েন্ট তাদের চার। শ্রীলঙ্কাই তাদের শেষ ম্যাচ। আর শ্রীলঙ্কা হাতে পাচ্ছে দুটো ম্যাচ। শনিবারের ইংল্যান্ড আর তার পর সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকা।

যে মরণবাঁচন লড়াইয়ের আগে দুটো টিমের মানসিক অবস্থা কেমন, বুঝে নিতে একটা ছোট তথ্যই যথেষ্ট। কী? না, এমন একটা ম্যাচের আগে টিমের কয়েকজনকে নিয়ে আগ্রা ঘুরতে বেরিয়ে পড়লেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট! রুদ্ধশ্বাস এমন একটা যুদ্ধের আবহে, যেখানে একটা হার যাবতীয় অঙ্ক তছনছ করে দিতে পারে, সেখান থেকে নাকি একটু বিশ্রাম ভীষণ দরকার ছিল তাঁর। ‘‘গাড়িতে মাত্র তিন ঘণ্টা লাগে, এই সুযোগ হাতছাড়া কী করে করি!’’ পরে বলছিলেন ইংরেজ ক্যাপ্টেন।

আর শ্রীলঙ্কা? তাদের কাছে তাজমহলের অপার্থিব সৌন্দর্যে ডুবে থাকাটা আপাতত বিলাসিতা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজদের দৈনিক সূচিতে শুধু ক্রিকেট, ক্রিকেট আর ক্রিকেট। গত রবিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারের পর প্রায় একটা সপ্তাহ বিশ্রাম পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। আর সেটা কেটেছে অনুশীলনে, আত্মানুসন্ধানে এবং শত্রুবধের ছক কষে। দীনেশ চণ্ডীমল যেমন এ দিন বলছিলেন, ‘‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের পর দুটো দিন ক্রিকেট একদম অফ করে দেওয়া হয়েছিল। ব্যাটসম্যানদের তাদের বড় ইনিংসের ভিডিও যেমন দেখানো হয়েছে, তেমনই ভুলগুলোও ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইংল্যান্ড নিয়ে ওই ক’দিন প্রচুর ভাবনাচিন্তা করেছি। নতুন কিছু করব, যাতে ওরা চমকে যাবে।’’

এই ‘নতুন কিছু’টা হয়ে উঠতে পারেন সচিত্র সেনানায়কে। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলা অফস্পিনারের রেকর্ড বিশেষ করে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যথেষ্ট ভাল। তবে টি-টোয়েন্টি নয়, ওয়ান ডে ক্রিকেটে। ইংরেজ মিডল অর্ডারে তিন বাঁ-হাতির কথা মাথায় রেখে তাঁকে খেলিয়ে দিতে পারে শ্রীলঙ্কা। কোটলার পিচও লঙ্কান স্পিনারদের মনে ধরার কথা। সে ভাবে টার্ন না থাকলেও উইকেটটা স্লো। যেটা শুনিয়ে রাখলেন চণ্ডীমলও। বলে দিলেন, ‘‘ইংল্যান্ড তো শেষ দুটো ম্যাচ ওয়াংখেড়ের ব্যাটিং-স্বর্গে খেলেছে। এখানকার পিচ ও রকম হবে না। কোটলায় আমরা সাহায্য পাব।’’

কোটলা শেষ পর্যন্ত কার দিকে যায়, নিশ্চিত নয়। একটা ব্যাপার অবশ্য নিশ্চিত— গ্রীষ্ম-দগ্ধ রাজধানীর আবহাওয়া শনিবার আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement