প্রথম ইনিংসে কোনও দল যদি ছ’শো-র ওপর রান তোলে, তা হলে আগে থেকেই বোঝা যায় যে সেই টেস্টের রাশ তাদের হাতেই থাকবে। গলে সেটাই হল। বিরাট কোহালির ভারত স্পষ্ট ভাবে চালকের আসনে বসে পড়ে শুরু থেকেই।
শিখর ধবনকে অভিনন্দন জানাতেই হচ্ছে। অভিনন্দনটা যতটা ওর রানের জন্য প্রাপ্য, তার চেয়েও বেশি ও যে পরিস্থিতিতে মাঠে নেমেছে, সেই জন্য। একজন ব্যাটসম্যানের যেখানে প্রথম এগারোয় থাকার কথাই নয়, তাকে যদি হঠাৎ বলা হয়, সে খেলছে। তাও আবার টেস্ট ম্যাচ এবং ওপেনার হিসেবে নামতে হচ্ছে। তখন মানসিক ভাবে নিজেকে তৈরি করে মাঠে নামাটাই বেশ শক্ত। আর এমন একটা বিস্ফোরক ইনিংস খেলা তো আরওই কঠিন। নিজেকে যে মানসিক সক্ষমতারও শিখরে নিয়ে চলে গিয়েছে ধবন, তা প্রমাণ করে দিল ও। কত তাড়াতাড়ি নিজেকে তৈরি করে ফেলল ও! আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটারদের এই গুণই আসল। এর জন্য ওর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত অবশ্যই। ওই টুর্নামেন্টে অত ভাল ব্যাট করার জন্যই এই অসাধারণ ইনিংসটা খেলতে পারল।
শিখরের এই পারফরম্যান্সে ভারতের টপ অর্ডারে জায়গা পাওয়ার প্রতিযোগিতাটা আরও কঠিন হয়ে গেল। কে এল রাহুল আর মুরলী বিজয়কে মাঠের বাইরে রাখাটা বেশ কঠিন হবে। কারণ, কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও ওরা যা রান করেছে, তা ভুলে যাওয়া সোজা নয়। চেতেশ্বর পূজারার কথা অবশ্যই উল্লেখ করা উচিত। ও যদিও সব ফর্ম্যাটে খেলে না। কিন্তু যখনই সুযোগ পায়, তখনই সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে নেয়। এই দুই ব্যাটসম্যানই ভারতীয় দলে দুই বড় সম্পদ।
বিরাট কোহালির পাঁচ বোলার নিয়ে দল নামানোর যুক্তিটাও শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে গেল মনে হচ্ছে। যে কোনও কন্ডিশনেই ভারত পাঁচ বোলারে নামতে পারে। দ্বিতীয় টেস্টে কলম্বোর পরিবেশ গলের চেয়ে অন্যরকম হবে। এখানকার পরিবেশ বোধহয় পেসারদের সাহায্য করবে।
শ্রীলঙ্কাকে সিরিজের বাকি দুটো টেস্ট একটু অন্য ভাবে খেলতে হবে। প্রতি টেস্টে কুড়িটা করে উইকেট নিতে গেলে ওদের উইকেট থেকেও সাহায্য দরকার। আর সে জন্য উইকেট নিয়ে ওদের কিছু ফাটকাও খেলতে হবে। ফাটকা মানে ঝুঁকি নেওয়ার কথা বলছি। এমন উইকেট এমন ভাবে করুক ওরা, যাতে ভারত যেমন ভাল খেলতে পারে, তেমনই শ্রীলঙ্কার বোলাররাও বাইশ গজ থেকে ভরপুর সুবিধা নিতে পারে। ভারতের যা ব্যাটিং লাইন আপ, তাতে পাটা উইকেটে ওদের ফেললে শ্রীলঙ্কার জেতা প্রায় অসম্ভব। দুর্দান্ত পারফম্যান্স দেখাতে না পারলে দ্বিতীয় টেস্ট জেতা শ্রীলঙ্কার পক্ষে মুশকিল।