তৈরি হচ্ছে কোটলা। ছবি: পিটিআই
তিন দিন না পাঁচ দিন? টার্নার না স্পোর্টিং?
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের শেষ টেস্ট শুরুর দিন তিনেক আগে ফিরোজ শাহ কোটলার বাইশ গজ ঘিরে এখন প্রশ্ন এই দুটোই। রবি শাস্ত্রী পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, তিনি আশা করছেন, নাগপুরের মতোই পিচ হবে দিল্লিতে। এবং এই ধরনের পিচ তৈরির ক্ষেত্রে ‘অন্যায্য’ কিছু দেখছেন না ভারতের টিম ডিরেক্টর।
কিন্তু কোটলার পিচ প্রস্তুতকারকরা কী ভাবছেন? কী বলছেন মাঠের দায়িত্বে থাকা দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট চেতন চৌহান? সোমবার কোটলায় দাঁড়িয়ে ভারতের প্রাক্তন ওপেনার বলছিলেন, ‘‘আমি এটুকু বলতে পারি, এটা একটা ভাল উইকেট হবে। আপনারা এখন ঘাস দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু উইকেট অবশ্যই গ্রিন টপ হবে না।’’
তবে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, উইকেট সেই শুকনো টার্নারই বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। রবিবারের পর আর জল দেওয়া হয়নি পিচে। তা হলে কি আবার তিন দিনের টেস্ট দেখতে হবে? উইকেটে কি জল দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে? চৌহান বলছেন, ‘‘আমি গ্রাউন্ডসম্যানদের সঙ্গে এখনও কথা বলিনি। তাই জল দেওয়ার ব্যাপারটা নিয়ে এখনও কিছু বলতে পারব না।’’
বিসিসিআইয়ের পিচ কমিটির চেয়ারম্যান দলজিৎ সিংহ কোটলায় এসে চৌহানের সঙ্গে এক দফা মিটিং করে গিয়েছেন। তবে শোনা যাচ্ছে, পিচের চেহারা ঠিক কী হবে, সেটার ইঙ্গিত পাওয়া যাবে আগামিকাল ভারতীয় দল প্র্যাকটিসে নামার পর। যখন রবি শাস্ত্রীও প্রথম কোটলার এই পিচটা দেখবেন।
ভারতীয় দল যে ঠিক কী আশা করছে কোটলা থেকে, তা কিন্তু ইতিমধ্যেই অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। একটি ওয়েবসাইটে শাস্ত্রী বলে দিয়েছেন, ‘‘তিন দিনে ম্যাচ শেষ হয়েছে তো কী হয়েছে? এর জন্য পিচের চেয়েও বেশি দায়ী ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা।’’ পিচ নিয়ে শাস্ত্রীর মন্তব্যের অবশ্য কোনও জবাব দেননি চৌহান। তবে আবারও জানিয়ে দেন, ভাল উইকেট হবে।
চলতি রঞ্জি মরসুমে কোটলার পিচে অল্প ঘাস ছেড়ে রাখা হয়েছিল যাতে পেসাররা সুবিধে পান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেটা হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। কিন্তু ঘটনা হল, মোহালি বা নাগপুরের মতো ঘূর্ণি হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আর তার কারণ দিল্লির আবহাওয়া। গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা কুড়ি ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। সকালের দিকটা কুয়াশায় ঢাকা থাকছে। সূর্যের তেজ সে ভাবে নেই। অর্থাৎ টিপিক্যাল দিল্লির শীতের মরসুম। যে কারণে মনে করা হচ্ছে, পিচ একেবারে খটখটে শুকনো করার জন্য যতটা সূর্যের আলো প্রয়োজন, সেটা পাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে এই আবহাওয়ায়। এই অবস্থায় দেখার, পিচে জল দেওয়া একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয় কি না।
আরও একটা ব্যাপার দেখার আছে। ডিডিসিএ চাইছে, অবসর নিয়ে ফেলা বীরেন্দ্র সহবাগকে এই টেস্টটায় বিশেষ সম্মান জানানো হোক। একটা ছোট অনুষ্ঠান করার জন্য ডিডিসিএ এই নিয়ে ভারতীয় বোর্ডের অনুমতিও চেয়ে পাঠিয়েছে। এ দিন চৌহানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিসিসিআইয়ের থেকে এই নিয়ে এখনও কোনও নির্দেশ পাইনি।’’ আবার এও শোনা যাচ্ছে, দিল্লি সরকার নাকি ১৯৮৩ এবং ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী দলকে সংবর্ধনা দিতে চায়।
পিচের মতো সংবর্ধনা-নাটকও চলছে কোটলায়।