ছয় ব্যাটসম্যান কি না, চলল সেই জল্পনাই

দক্ষিণ আফ্রিকা শিবির থেকেও পরিষ্কার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, তাঁরা কোনও স্পিনার খেলাবে না। চার পেসার তো তাদের রয়েইছে। কাগিসো রাবাডা, মর্নি মর্কেল, ভার্নন ফিল্যান্ডার এবং লুঙ্গি এনগিডি।

Advertisement
জোহানেসবার্গ শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩৪
Share:

প্রস্তুতি: নেটে অনুশীলনে মগ্ন রোহিত শর্মা। ওয়ান্ডারার্সে। ছবি: বিসিসিআই

ওয়ান্ডারার্সের সবুজ পিচে আদর্শ প্রথম একাদশ কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত ভারতীয় দলে। একটা জিনিস মোটামুটি ভাবে স্থির হয়ে গিয়েছে। ঘাসের পিচে বল স্পিন করার কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই নাটকীয় কোনও পরিবর্তন না হলে বাইরে যেতে হচ্ছে আর. অশ্বিন-কে।

Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকা শিবির থেকেও পরিষ্কার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, তাঁরা কোনও স্পিনার খেলাবে না। চার পেসার তো তাদের রয়েইছে। কাগিসো রাবাডা, মর্নি মর্কেল, ভার্নন ফিল্যান্ডার এবং লুঙ্গি এনগিডি। এর সঙ্গে পঞ্চম পেসারও যোগ করার কথা ভাবছে তাঁরা। অথবা পেস বোলার অলরাউন্ডার। ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঁ হাতি স্পিনার কেশব মহারাজ-কে হয়তো অশ্বিনের মতোই বাইরে
থাকতে হচ্ছে।

ভারতীয় দলের বোলিং লাইন-আপ মোটামুটি ঠিক হয়ে গিয়েছে। অশ্বিনের জায়গা নেবেন ভুবনেশ্বর কুমার। তার মানে চার পেসার হিসেবে থাকছেন ভুবনেশ্বর, মহম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মা এবং যশপ্রীত বুমরা। মত পাল্টা-মতের আদানপ্রদান চলছে, ছয় ব্যাটসম্যানে খেলা হবে নাকি অলরাউন্ডার রাখা হবে? ছয় ব্যাটসম্যানে গেলে অজিঙ্ক রাহানে এবং রোহিত শর্মা দু’জনেই থাকবেন প্রথম একাদশে। সে ক্ষেত্রে হার্দিক পাণ্ড্য-কে বাইরে যেতে হবে।

Advertisement

হার্দিকের জন্য আবার পক্ষে-বিপক্ষে দু’রকম মতই রয়েছে। পক্ষের মত হচ্ছে, কেপ টাউনে তিনিই কাউন্টার অ্যাটাক ইনিংস খেলে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন। তাঁর মতো পাল্টা আক্রমণ করায় দক্ষ কোনও ব্যাটসম্যান থাকলে বিদেশের প্রতিকুল পরিস্থিতিতে অনেক সময় দারুণ কাজে লাগে। আবার বিপক্ষের মত হচ্ছে, হার্দিকের বোলিং খুব বেশি কার্যকরী দেখাচ্ছে না। তা ছাড়া সেঞ্চুরিয়নে দুই ইনিংসেই তিনি বেশ নাবালকের মতো আউট হয়েছেন। তাতে টিমকে বেশ ভুগতে হয়েছে।

যদিও টিম সূত্রে যে রকম ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, সেঞ্চুরিয়নের ভুলের জন্য হার্দিক-কে শাস্তি দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে না। কিংবদন্তি কপিল দেব-কে যেমন দল থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল দলের স্বার্থ বিরোধী বাজে স্ট্রোক নেওয়ার জন্য, তেমন কিছু হার্দিকের ক্ষেত্রে ঘটছে না। তাঁকে দলে না রাখা গেলে বুঝতে হবে ক্রিকেটীয় কারণেই রাখা যায়নি। সমস্যা বেড়ে গিয়েছে, ওয়ান্ডারার্সের নেটে তিন দিন ধরে রোহিতের ব্যাটিং দেখার পরে। এ দিনও কোহালির পাশে নেটে টানা এক ঘণ্টা ব্যাট করলেন রোহিত। আর স্টাম্পের পিছনে দাঁড়িয়ে বার বার হেড কোচ রবি শাস্ত্রীকে বলতে শোনা গেল, ‘ওয়েল প্লেড’, ‘সাবাশ’-জাতীয় প্রশংসাসূচক কথা। চেতেশ্বর পূজারার ঊরুতে দু’দিন আগে প্র্যাক্টিসের সময় বল লেগেছিল। আইসপ্যাক লাগিয়ে ঘুরতে দেখা যাচ্ছিল তাঁকে। এ দিন অবশ্য তিনিও দীর্ঘক্ষণ ব্যাট করলেন। তার পর শাস্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনাও করতে দেখা গেল তাঁকে। উইকেটকিপার হিসেবে সম্ভবত পার্থিব পটেল-ই থেকে যাচ্ছেন।

ওয়ান্ডারার্স-কে হাতের তালুর মতো চেনেন, এমন কয়েক জন স্থানীয় কোচের দেখা পাওয়া গেল ভারতীয়দের নেট প্র্যাক্টিস চলার সময়েই। তাঁদের থেকে পিচ এবং পরিবেশ সম্পর্কে জরুরি কিছু তথ্য পাওয়া গেল। যেমন, ১) শুরুর দিকে পিচ নরম থাকতে পারে। যত রোদ পাবে, যত সময় যাবে তত পেস ও বাউন্স বাড়তে পারে। ২) এখানে বল টার্ন করার কোনও গল্পই নেই। কখনও স্পিনার এ মাঠে অস্ত্র হয়েছে বলে শুনিনি। ৩) দু’প্রান্তে দু’ধরনের সাহায্য থাকতে পারে পেসারদের জন্য। একদিকে বেশি পেস ও মুভমেন্ট থাকার মতো আজগুবি ঘটনাও এখানে ঘটে।

শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল, বেশ আকর্ষণীয় সব চ্যালেঞ্জ কোহালি এবং তাঁর টিমের জন্য অপেক্ষা করছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসও বলছে, ম্যাচ চলাকালীনই মেঘলা আকাশ থাকতে পারে। বৃষ্টি হতে পারে। মানে সব কিছুই বোলারদের অনুকূলে। টেস্ট শুরুর এক দিন আগে ওয়ান্ডারার্সে দাঁড়িয়ে মনে হতে বাধ্য— কেন যে ক্রিকেটকে ব্যাটসম্যানদের খেলা বলা হয়!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement