সিটি-জুভেন্টাস ফাইনাল দেখছেন দেল পিয়েরো
Alessandro Del Piero

লিয়ো এক পায়ে কিন্তু দু’পায়ের কাজ করে দেয়

সেরি আ আগেও জনপ্রিয় ছিল। জুভেন্টাসেরও প্রচুর সমর্থক আছে। কিন্তু রোনাল্ডো আসায় সেই জনপ্রিয়তা অন্য মাত্রা পেয়েছে।

Advertisement

কৌশিক দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৪৪
Share:

অকপট: সুযোগ পেলে আবার ভারতে আসতে চান দেল পিেয়রো।

ইটালীয় ফুটবলে তাঁকে বলা হয় সর্বকালের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড। সেই আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ভিডিয়ো কলে সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজারকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সম্ভাব্য ফাইনালিস্ট থেকে মেসি-রোনাল্ডোর তুলনা— সব কিছু নিয়েই মুখ খুললেন জুভেন্টাসের কিংবদন্তি ফুটবলার।

Advertisement

প্রশ্ন: এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দুই ফাইনালিস্ট দল হিসেবে কাদের বাছবেন?

আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো: খুবই কঠিন প্রশ্ন। বেশ কিছু দলের ফাইনালে ওঠার শক্তি আছে। যে কারণে দুটো দলকে আলাদা করে বেছে নেওয়া খুবই কঠিন কাজ। তার উপরে গত মরসুম থেকে সব কিছু ওলট-পালট হয়ে গিয়েছে। কোনও, কোনও দেশে ফুটবল মরসুম আগে শেষ হয়েছে। কোথাও দেরি করে। সব মিলিয়ে ফুটবলারদের উপরে বড় প্রভাব পড়েছে।

Advertisement

প্র: তবু যদি দুটো দলকে আলাদা করে বেছে নেন।

দেল পিয়েরো: আমি বিশ্বাস করি, ম্যাঞ্চেস্টার সিটি কোনও না কোনও সময় ফাইনাল খেলবেই। সব দেখে মনে হচ্ছে, এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগটা ওদের হতে চলেছে। যথেষ্ট প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দেখাচ্ছে। অন্য দলটা আশা করব, জুভেন্টাস হবে।

প্র: ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আসায় জুভেন্টাসের উপরে কি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার জন্য চাপ বাড়বে?

দেল পিয়েরো: চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার লক্ষ্যেই রোনাল্ডোকে নিয়ে আসা হয়েছে। অনেক বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার অভিজ্ঞতা আছে ওর। যে কারণে রোনাল্ডো এবং ক্লাবের উপরে এ বার প্রত্যাশাটা বেশি থাকবে। এ বার ওরা ট্রফি জিততে মরিয়া।

প্র: রোনাল্ডোকে নেওয়ায় কী প্রভাব পড়েছে সেরি আ-তে?

দেল পিয়েরো: সেরি আ আগেও জনপ্রিয় ছিল। জুভেন্টাসেরও প্রচুর সমর্থক আছে। কিন্তু রোনাল্ডো আসায় সেই জনপ্রিয়তা অন্য মাত্রা পেয়েছে। বিশ্বের নজর ঘুরে গিয়েছে। রোনাল্ডো প্রচুর উদ্দীপনা নিয়ে এসেছে ক্লাবে।

প্র: মেসি বনাম রোনাল্ডো। আপনার বিচারে জিওএটি (গ্রেটেস্ট অব অল টাইম)-কে?

দেল পিয়েরো: আমার কাছে এই প্রশ্নটা অনেকটা এ রকম। আপনি কাকে বেশি ভালবাসেন, মা না বাবাকে? বা, কে বেশি পছন্দ, বড় না ছোট ছেলে! তাই এই ভাবে তুলনা করাটা ঠিক নয়। দু’জনের কিছু গুণ এক রকম, কিছু আলাদা। যেমন, দু’জনেই তিন সেকেন্ডের মধ্যে দলকে জিতিয়ে দিতে পারে। দু’জনেই দলকে নেতৃত্ব দিতে পারে। দু’জনেই সতীর্থদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে।

প্র: পার্থক্যটা কী?

দেল পিয়েরো: রোনাল্ডো জন্মগত ভাবে প্রচণ্ড পরিশ্রম করার ক্ষমতা রাখে। দু’পায়েই অসাধারণ শুটিং দক্ষতা আছে। অবিশ্বাস্য হেড করতে পারে। ও গোল করার জন্য, জেতার জন্য যেন জীবন বাজি রাখতে পারে। কেরিয়ারের শুরু থেকেই এটা ওর রক্তে ঢুকে গিয়েছে। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবে খেলার ফলে চাপ নেওয়ার অভ্যাস আছে।

প্র: আর মেসি সম্পর্কে কী বলবেন?

দেল পিয়েরো: ওহ মেসি (হেসে উঠে)! লিয়ো অবিশ্বাস্য। ওর খেলা দেখলে মনে হয়, এই ছেলেটার ট্রেনিং করার কোনও প্রয়োজনই নেই। যে ভাবে বলটাকে ছোঁয়, ড্রিবল করে, তা মুগ্ধ হয়ে দেখতে হয়। আগের দিন তো দেখলাম, স্রেফ একটা পায়ে খেলছে! তবে মেসি একটা পায়েই কিন্তু দুটো পায়ের কাজ করে দেয়। মেসির বিপক্ষে হয়তো কিছু আছে। যেমন হেডে গোল করে না, ডান পা শক্তিশালী নয়। কিন্তু ও বাঁ-পা দিয়েই জাদু সৃষ্টি করে ফুটবলে।

প্র: মেসিকে নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, সে সম্পর্কে কী বলবেন?

দেল পিয়েরো: গত মরসুমটা বার্সেলোনা খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। মেসিকে নিয়ে যা হল! তবে ওদের নতুন ম্যানেজার রোনাল্ড কোমান ভাল বিবৃতি দিয়েছে মেসিকে নিয়ে। মেসি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলেছে। কোমান স্বাভাবিক ভাবেই চায়, মেসি যেন দলের সঙ্গে মিশে যায়। মেসি আর বার্সেলোনাকে একে অন্যের ঘনিষ্ঠ হতে হবে।

প্র: পিএসজি-র সঙ্গে দুটো ম্যাচে কি ফল হতে পারে?

দেল পিয়েরো: আমার মনে হয়, দুটো ম্যাচের শেষে পিএসজি-ই পরের পর্বে পৌঁছবে। ওদের টিমে ভারসাম্যটা ভাল। নেমার (সাক্ষাৎকারের সময় ব্রাজিলীয় তারকা সুস্থ ছিলেন) ছাড়া অ্যাঙ্খেল দি মারিয়া, কিলিয়ান এমবাপে আছে। আরও কয়েক জন ভাল ফুটবলার রয়েছে। তাই পিএসজি এগিয়ে থাকবে। তবে মেসির মতো ফুটবলার যে কোনও ভবিষ্যদ্বাণীকে ভুল প্রমাণ করতে পারে।

প্র: আপনি ২০১৪ সালে দিল্লি ডায়নামোজের হয়ে আইএসএলে খেলেছেন। সেই স্মৃতি কী রকম?

দেল পিয়েরো: দারুণ স্মৃতি। আইএসএল তখন সবে শুরু হয়েছে। তাই কিছু, কিছু সমস্যা তো ছিলই। কিন্তু কলকাতা থেকে কেরল— সব জায়গায় ভক্তদের ভালবাসা পেয়েছি। এখনও আইএসএল দেখি। আমার বন্ধুরা, যেমন রবি কিন, আমাকে ফোন করে জানতে চায়, ভারতে গেলে কী প্রত্যাশা নিয়ে যাবে!

প্র: সুযোগ পেলে কি আবার ভারতে আসবেন?

দেল পিয়েরো: অবশ্যই। আশা করব, সে রকম সুযোগ আসবে। দিওয়ালি আমি এখনও ভুলিনি।

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ: ১৬ ফেব্রুয়ারি। সরাসরি সোনি টেন টু, টেন থ্রি চ্যানেলে রাত ১.৩০ থেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement