সেরা: চ্যাম্পিয়নের ট্রফি নিয়ে সৌরভ। শুক্রবার লিডসে। নিজস্ব চিত্র
দুরন্ত নজির কলকাতার সৌরভ কোঠারির। ইংল্যান্ডের লিডসে বিশ্ব বিলিয়ার্ডস চ্যাম্পিয়নশিপে বিশ্বসেরার মুকুট পেলেন সৌরভ। ফাইনালে তিনি ১১৩৪-৯৪৪ হারান সিঙ্গাপুরের পিটার গিলক্রিস্টকে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে লিডস থেকে সৌরভ আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘এই বিশ্বখেতাব দেশকে আমার দীপাবলির উপহার।’’
১৯৯০ সালে সৌরভের বাবা মনোজ কোঠারি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হন। ২৮ বছর পরে ছেলের বিশ্বসেরা হওয়ার অনুভূতি কেমন? ‘‘অভিভূত। খবরটা পেয়ে আমি কেঁদে ফেলেছিলাম। এর চেয়ে বড় উপহার বাবার জন্য আর কী হতে পারে,’’ ফোনে বললেন মনোজ। গীত শেঠি, পঙ্কজ আডবাণীর পরে এই প্রতিযোগিতা থেকে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল ভারত। যে জয় দেখে ইংল্যান্ড থেকে গীত শুভেচ্ছা পাঠান মনোজকে, ‘‘নিশ্চয় তোমার বাবা হিসেবে গর্ব হচ্ছে এখন। এক এক জন খেলোয়াড় এক একটা বয়েসে পরিণত হয়। সৌরভ এখন পরিণত হয়েছে। এ বার ও খেলাটা শাসন করবে।অনেক অভিনন্দন।’’
বহু যুদ্ধে পোড় খাওয়া গিলক্রিস্ট তিন বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন (ডব্লিউপিবিএসএ)। বিলিয়ার্ডসে সবার্ধিক ব্রেকের (১৩৪৬) রেকর্ডও তাঁর। কিন্তু সৌরভ এ দিন ৬৩, ৬৫, ১০৫, ৩০৫, ৭৬, ১৬৩, ৫১ ও ৯৩ ব্রেকে অভিজ্ঞ পিটারকে পিছিয়ে দেন। ৩০৫ ব্রেকটাই সৌরভকে খেতাবের আরও কাছে আসতে সাহায্য করে।
এর আগে সেমিফাইনালে সৌরভ হারান ছ’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের ডেভিড কশিয়ারকে। ম্যাচে এক সময় তিনি ডেভিডের থেকে প্রায় ৫০০ পয়েন্ট পিছনে ছিলেন। সেখান থেকে অবিশ্বাস্য ভাবে ম্যাচ দখল করে নেন। সৌরভ বলছিলেন, ‘‘ডেভিডকে পেশাদার সার্কিটে বলা হয় বিস্ট। ও রকম একটা জায়গা থেকে যে আমি এ রকম শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারাতে পারব সেটা অনেকেই ভাবতে পারেনি। এই ম্যাচটা আমার জীবনের সেরা।’’
সেই ধারাবাহিকতা ফাইনালেও পিটারের বিরুদ্ধে ধরে রেখে উচ্ছ্বসিত সৌরভ। ‘‘জানি না দেশে আর কোনও খেলায় এ রকম বাবা আর ছেলের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির আছে কি না। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে আমার সবচেয়ে ভাল লাগছিল বাবার কথা ভেবে। বাবার কেমন অনুভূতি হচ্ছে এখন, সেটা ভাবছিলাম। ভিডিয়ো কল করলাম বাড়িতে। বাবা-মা দু’জনেই আনন্দে কাঁদছিল। এই মুহূর্তগুলো সারা জীবন মনে থাকবে,’’ বলে দেন সৌরভ।