ছোট্ট স্নিগ্ধা ঘোষকে হাতেখড়ি দিচ্ছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
এমন ভাগ্যবতী কতজন আর হয়! বেহালা পর্ণশ্রী এলাকার ছোট্ট স্নিগ্ধা ঘোষ সত্যি ভাগ্যবতী। বয়স মাত্র ২ বছর ৬ মাস। এবার যে লেখাপড়া শুরু করতে হবে। তবে ওই ছোট্ট হাতে স্লেট-চক নেওয়ার আগে তো হাতেখড়ি প্রয়োজন। তাই সরস্বতী পুজোর আগে ২/৬ বীরেন রায় রোডের সেই সুবিশাল লাল বাড়ির কর্তাকে অনুরোধ করলেন কোলের মেয়ে স্নিগ্ধার বাবা-মা। তিনি যদি মেয়েটির হাতেখড়ি দিয়ে দেন। যেমন আবদার তেমন কাজ। ওই মিষ্টি মেয়ের মুখ দেখে আবদার ফেরাতে পারেননি মহারাজ।
স্নিগ্ধাকে হাতেখড়ি দিতে রাজি হয়ে গেলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বেশ আদর মিশিয়ে ওর কচি আঙুলে নিজের আঙুল রেখে স্লেটে হাত বুলিয়ে দিলেন সৌরভ। স্বপ্নপুরণ হল স্নিগ্ধার। আজীবনের জন্য সৌরভে সুরভিত হল মেয়েটির পরিবার। কারণ এটা যে আক্ষরিক অর্থে ‘মহারাজকীয় হাতেখড়ি’! স্নিগ্ধাকে হাতেখড়ি দেওয়ার সময় হয়তো একমাত্র কন্যা সানার কথাও ভাবছিলেন বাবা সৌরভ।
প্রতিবারই বেশ জাঁকজমক করে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করেন সৌরভ ঘরণী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর ‘দীক্ষামঞ্জরি’ নামক নাচের স্কুলে। মহারাজের শ্বশুরবাড়ির পুজো বলে কথা। তাই এই পুজোতে প্রতি বছর বেশ ভিড় হয়। তবে এবার কোভিড পরিস্থিতি। তাই বিগত বছর থেকে ভিড় অনেক কম। তবুও স্বাভাবিক ভাবেই আলোচনার বিষয় ছিলেন সেই সৌরভ। বাগদেবীর পুজোয় চিরাচরিত সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরে হাজির।
ছুটির মেজাজে ডোনা ও সানা। ছবি - ফেসবুক।
স্নিগ্ধাকে হাতেখড়ি দিয়ে ঘরণীর ছাত্রীদের সঙ্গে নিজস্বী তুলে বেশ আনন্দে সময় কাটালেন। সৌরভের উপস্থিতি থাকবে, আর ক্রিকেটের কথা উঠবে না সেটা কি হয়! পুজো প্রায় শেষ। এমন সময় বিরাট কোহালির দলের লড়াই নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই বললেন, “ভারতের মাটিতে ভারতকে হারানো খুবই কঠিন। একটা-দুটো টেস্ট হারতে পারে। তবে সিরিজ হারার কোনও সম্ভাবনা নেই।” আর সিরিজ জিতেলই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে সেটা তো সবার জানা।
সৌরভ এই পুজোর মূল আকর্ষণ হলেও সমস্ত কাজ কিন্তু বছরের পর বছর ধরে ডোনাই সারেন। তিনি বললেন, “প্রতি বছর বড় করে পুজো আয়োজন করলেও এবার আমরা কম লোকজনকে ডেকেছি।” তবে ডোনাকে সামনে পেলে সবার মনে এখন যে একটাই প্রশ্ন, ‘দাদা কেমন আছেন?” ডোনার জবাব, “আপনাদের দাদা একদম ফিট।”