আপনি সাংবাদিক? সিএবি কর্তাদের ঘরে যেতে চান?
আর যাওয়া যাবে না। কর্তাদের কাজকর্মে প্রবল অসুবিধে হচ্ছে। প্রেস কর্নার করা হবে। সেখানে থাকতে হবে কর্তাদের বিবৃতির অপেক্ষায়। কেউ আসতেও পারেন, না-ও পারেন। কিন্তু দোতলায় ওঠা নয়।
দীর্ঘ দিনের প্রতিষ্ঠানে যে জিনিস আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি, সেটাই এ বার দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়ছে সিএবি-তে। প্রচারমাধ্যমের উপর ফতোয়া জারির সম্ভাবনা!
ঘটনার সূত্রপাত, সোমবার রাত সাড়ে আটটা। নতুন যুগ্ম-সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া বলে দেন যে, সিএবি খুব তাড়াতাড়ি প্রেস কর্নারের ব্যবস্থা করছে। কাউকে ‘ব্রাত্য’ করার কোনও ইচ্ছে সিএবি-র নেই। কিন্তু মিডিয়ার উপস্থিতি সংস্থার কর্মকর্তাদের কাজকর্মে বাধা-বিঘ্নের সৃষ্টি করছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এত দিন যা হয়নি তা আচমকা আজ হল কেন?
শোনা গেল, অসুবিধেটা আসলে নাকি সৌরভের। তাঁরই নাকি মিডিয়ার দৌরাত্ম্যে কাজ করতে অসুবিধে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, মিডিয়ার জন্য তাই নীচে বসার জায়গার ব্যবস্থা থাকা দরকার। এ দিনের বৈঠকে নাকি সেটা বলেওছেন। সৌরভকে এ ব্যাপারের সত্যতা নিয়ে এসএমএস হলে, তিনি উত্তর পাঠাননি। সিএবি-র কেউ কেউ বললেন, সৌরভের বক্তব্য আংশিক ঠিক। মিডিয়ার একাংশের দৌরাত্ম্যটা বাড়াবাড়ি রকমের। কিন্তু এটাও ঘটনা যে, মিডিয়া সামলেই তাঁর আগে বহু যুগ্ম-সচিব কাজ করে গিয়েছেন। সাংবাদিক আটকানোর কথা তখন সিএবি প্রেসিডেন্টকে বলতে হয়নি।
শুধু তাই নয়, বঙ্গ ক্রিকেটের খবরাখবর নিয়েও ভাল রকমের ঢাক-গুড়গুড় চলছে। অথচ সাম্প্রতিকে বাংলা ক্রিকেটে নানা ঘটনাও ঘটে চলেছে। যেমন, ‘ভিশন ২০২০’-তে ওয়াকার ইউনিসের পরিবর্ত নিয়ে কাজকর্ম শেষ পর্যায়ে। শন পোলক না জাহির খান তা নিয়ে একটা দ্বিমত ছিল। কিন্তু সিএবি আপাতত জাহিরের দিকে ঝুঁকে। ডালমিয়াও নাকি জাহির নিয়ে সম্মতি দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে, এ বার চুক্তি নিয়ে হবে। যেমন, নতুন নির্বাচন কমিটি নিয়ে নিরন্তর জলঘোলা। আগে ঠিক ছিল, অলোক ভট্টাচার্য অসুস্থ বলে তাঁর টার্ম শেষ না করে তাঁর জায়গায় কাউকে আনা হবে। কিন্তু অলোকবাবু নিজে আবার সিএবি-তে দাবি করে এসেছেন, তিনি সুস্থ। অতএব, তাঁর বদলে অন্য কাউকে আনা এখন মুশকিল। যেমন, ইডেনের দেড়শো বছর উপলক্ষ্যে অক্টোবরের শেষে টুর্নামেন্টের প্রস্ততি। মুম্বই সহ আরও দু’একটা টিমকে আনার কথা চলছে। সংস্থার কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বললেন, সৌরভকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে টিমগুলোর সঙ্গে কথা বলার। কিন্তু বাকি ব্যাপার নিয়ে সরকারি বক্তব্য পেশ করার কেউ নেই। যথাসময়ে নাকি জানানো হবে।
অথচ বাংলা ক্রিকেটের অবস্থা অসাধারণ, এমনও নয়। বুচিবাবু ট্রফিতে পারফরম্যান্স জঘন্য। এত দিন ইন্ডোরে নেট করে সোমবার টিমটা মরসুমে প্রথম ইডেনে প্র্যাকটিস পেল। ‘ভিশন ২০২০’ শুরু যতটা ঝকঝকে ছিল, এখন মোটেও ততটা নয়। প্লেয়ার কমাতে হচ্ছে। আর রঞ্জি? গত পাঁচ-সাত বছরে বলার মতো শুধু গত বারের সেমিফাইনাল। সেটাও লক্ষ্মীরতন শুক্ল এবং অশোক দিন্দার একক যুদ্ধে। যা বাদ দিলে থাকে একবার অবনমন, আর বেশির ভাগ সময় গ্রুপ টেবলের তলানির দিকে শেষ করা।
শুধু মিডিয়াকে ‘ব্রাত্য’ করার মতো ভাবনাগুলো ঠিকঠাক আছে!