প্রস্তুতিতে মগ্ন সনি। ছবি: সনির ফেসবুক পেজ থেকে।
মোহনবাগানের নবাগত বিদেশি সালভা চামোরো, ফ্রান মোরান্তেরা বুধবার যখন আইএফএ অফিসে সই করছেন, তখন সনি নর্দে অনেক দূরে। তুরস্কে চলছে তাঁর ক্লাব জিরা এফকে-র প্রি সিজন। প্র্যাকটিশও তত ক্ষণে হয়ে গিয়েছে। লাঞ্চে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন হাইতিয়ান ম্যাজিশিয়ান।
পুরনো ক্লাব মোহনবাগানের প্রসঙ্গ উঠতেই পিছিয়ে গেল সনির লাঞ্চ। এখনও তাঁর প্রিয় রং সবুজ-মেরুন। শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের অনেক স্মৃতি এখনও তাঁর মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। ২৬ তারিখ কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ পিয়ারলেস। নতুন কোচ, নতুন বিদেশি। বাগান সমর্থকরা আশায় বুক বাঁধছেন। চামোরো সালভাদের উদ্দেশে সনি বললেন, ‘‘অনেক শুভেচ্ছা। তোমাদের সেরাটা দিও। সমর্থকদের খুশি রেখো। মনে রাখবে, সমর্থকরা তোমাদের কাছ থেকে জয়ই দেখতে চান।’’
সমর্থকদের আশা-প্রত্যাশা তাঁর থেকে বেশি আর কে জানেন! মোহনবাগান-ভক্তরা এখনও বলেন, সনি এলেন, দেখলেন আর জয় করে নিলেন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের ক্লাব শেখ জামাল ধানমুন্ডি থেকে বাগানে এসেছিলেন তিনি। সে বারই দীর্ঘ ১৩ বছরের খরা কাটিয়ে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মোহনবাগান। সেই সনি এ বার বাকুর ক্লাব জিরা এফকে-তে সই করেছেন। ক্লাবের হয়ে নেমেই প্রস্তুতি ম্যাচে গোল পেয়েছিলেন সনি। ১৪ অগস্ট থেকে লিগ শুরু হচ্ছে বাকুতে। তার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন সনি। তিনি বলছেন, ‘‘আমি ভালই আছি বাকুতে। দল নিয়ে সন্তুষ্ট। ক্লাব খুবই পেশাদার। সময় পেলে নিশ্চয় ডার্বি ম্যাচ দেখব।’’ একসময়ে তিনিই যে ছিলেন ডার্বির মহানায়ক। এ বার হয়তো নতুন কেউ তাঁর জায়গা নেবেন মোহনবাগানে। সনি খুব ভালই জানেন তা। ফুটবলারদের জীবন যে এরকমই হয়। বারবার পরীক্ষায় বসতে হয়।
আরও পড়ুন: সালভাদের প্রথম ম্যাচে খেলাতে পারেন কিবু
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষের বিশেষ ফলক বসছে কুমোরটুলি পার্কে
নতুন মোহনবাগান এখনও পরীক্ষায় বসেনি। পিয়ারলেস ম্যাচই অগ্নিপরীক্ষা কিবুর। এত দিন ধরে যে ভাবে দল তৈরি করলেন স্প্যানিশ কোচ, তার প্রতিফলন যে ঘটবে শুক্রবারই। সনি বলছেন, ‘‘মোহনবাগান আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতেই পারে। এ বার নতুন বিদেশি কোচ, নতুন বিদেশি ফুটবলার নিয়ে দল তৈরি করা হয়েছে। আমার মনে হয়, এ বার আই লিগ জিতবে মোহনবাগানই।’’ আই লিগের অবশ্য ঢের দেরি। তার আগে তো রয়েছে কলকাতা লিগ। কলকাতা লিগের সঙ্গেই চলবে ডুরান্ড কাপ।
সনি অবশ্য কলকাতা লিগে নামেননি। আই লিগেই নিজেকে বারবার তুলে ধরেছেন তিনি। গত বার তাঁকে নিয়ে কম চর্চা হয়নি। চোট সারিয়ে ফিরেছিলেন প্রিয় ক্লাবেই। আইজলের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে নেমেই গোল পেয়েছিলেন। গত বারের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সিটির বিরুদ্ধে তাঁর গোল এখনও ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতিতে জীবন্ত। সনি স্বয়ং বলছেন, ‘‘গত বার চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধেই সেরা ম্যাচটা খেলেছিলাম।’’ তার পরেও চোট তাঁকে ছিটকে দেয় ডার্বি থেকে। মাঠের বাইরে বসে হাইতিয়ান তারকাকে দেখতে হয়েছিল সবুজ-মেরুনের হার। সমালোচিত হয়েছিলেন, মনে মনে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন। এ বার অবশ্য কলকাতা ময়দানের আবেগ তাঁর শরীর ছুঁয়ে যাবে না। বহু দূরের এক শহরে বসেই প্রিয় ক্লাবের দিকে নজর রাখবেন সনি।