ফেরা: অর্জুন পুরস্কার হাতে সস্ত্রীক চৌরাসিয়া। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় চার ঘণ্টা দেরিতে তিনি কলকাতা বিমানবন্দর থেকে যখন বেরলেন, মুখটা ঝলমল করছে হাসিতে। এতক্ষণ বিমান দেরি করার জন্য সামান্য বিরক্তিও নেই। চব্বিশ ঘণ্টা আগেই পাওয়া অর্জুন পুরস্কার নিয়ে চিত্র সাংবাদিকদের অনুরোধে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন স্ত্রী-কে পাশে নিয়ে। তিনি—শিবশঙ্কর প্রসাদ চৌরাসিয়া।
বিমানবন্দর থেকে বেরোতে বেরোতে আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘এত বছরের একটা স্বপ্ন পূরণ হল। ১৪-১৫ বছর বয়স থেকেই স্বপ্ন ছিল অর্জুন পাওয়ার। এত দিনে অর্জুন পুরস্কার নিয়ে কলকাতায় ফিরলাম। এই অনুভূতির তুলনা হয় না।’’
অর্জুন কি ভারতীয় গল্ফ সার্কিটের প্রিয় ‘এসএসপি’-র দায়িত্ব বাড়িয়ে দিল? চৌরাসিয়া বললেন, ‘‘অর্জুন পাওয়াটা বিরাট বড় একটা উৎসাহ। কোনও নেতিবাচক চিন্তা নেই। আমাকে ভবিষ্যতে আরও বড় লক্ষ্যে পৌঁছতে প্রেরণা দেবে এই সম্মান।’’ ইউরোপীয় ট্যুর (তবে ইউরোপে নয়), এশীয় ও ভারতীয় ট্যুরে ১৬টা খেতাব জেতা চৌরাসিয়া এ বার দেখছেন অন্য স্বপ্ন। ‘‘আমার পরবর্তী লক্ষ্য ইউরোপে খেতাব জেতা। এশিয়ায় জিতেছি, ভারতে জিতেছি কিন্তু ইউরোপের মাটিতে জেতা হয়নি। তাই এটাই এখন আমার সামনে সবচেয়ে বড় লক্ষ্য’’, বলেন চৌরাসিয়া।
আরও পড়ুন: শুরুই হয় একশো সিট আপে
জীবনের অন্যতম সেরা সম্মান পাওয়ার দিনে নিজের পরিবারের সঙ্গে মনে পড়ছে তাঁর গল্ফ পরিবারের কথাও। বললেন, ‘‘এই পুরস্কার আমি নিজের পরিবারকে উৎসর্গ করছি। আর হ্যাঁ অবশ্যই আরসিজিসি পরিবারকেও। আমার পাশে যে ভাবে সব সময় থেকেছে ওঁরা, তার কোনও তুলনা হয় না। আজ আমার এই জায়গায় আসার পিছনে ওঁদের বিরাট আবদান রয়েছে। তাই এই পুরস্কার আরসিজিসি-কেও উৎসর্গ করছি।’’
রিও অলিম্পিক্সে নামলেও পদক জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। খালি হাতে ফিরতে হয়েছে এসএসপি-কে। অর্জুন পুরস্কার পাওয়া অলিম্পিক্সে পদক জয়ের লক্ষ্যে তাঁকে কতটা এগিয়ে দেবে? এসএসপি বললেন, ‘‘আমি ছোট ছোট লক্ষ্য ধরে এগোতে চাই। ২০২০ অলিম্পিক্স এখন অনেক দূরের কথা। আমি ৫০ বছর বয়স অবধি গল্ফ খেলতে চাই। সেই পথে যে লক্ষ্যগুলো সামনে আসবে সেগুলো পূরণ করার চেষ্টা করব।’’
আপাতত কয়েকদিন বিশ্রাম। তার পরে ফের গল্ফ ক্লাব হাতে অভিযান শুরু হচ্ছে চৌরাসিয়ার। নতুন স্বপ্ন ছোঁয়ার। বললেন, ‘‘কলকাতায় কয়েকদিন কাটিয়ে সুইৎজারল্যান্ডে উড়ে যাব ইউরোপীয় মাস্টার্স খেলতে। দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল। আমাকে আরও এগোতে হবে।’’
গল্ফ ক্লাব কোথায়, এ যেন ধনুক হাতে অর্জুন। লক্ষ্যে যিনি অটল।