নজির: লাঞ্চ বিরতির আগেই সেঞ্চুরি শিখর ধওয়নের। ছবি: পিটিআই
আইপিএলে খেলে যেমন অনেক সুবিধা হয়েছে তাঁর, খ্যাতি অর্জন করেছেন প্রচুর, তেমনই তার অসুবিধা কী, তা বৃহস্পতিবার প্রথম টেস্টে নেমেই টের পান রশিদ খান। আসল ক্রিকেটের মঞ্চে এসে যখন দেখলেন তাঁরই আইপিএল দলের সতীর্থ শিখর ধওয়ন একই সেশনে একটা সেঞ্চুরি করে চলে গেলেন। যা কোনও ভারতীয় কখনও পারেননি। টেস্ট ইতিহাসে আর মাত্র পাঁচজন ছুঁয়েছেন এই মাইলফলক। যে দলে আছেন স্যর ডন ব্র্যাডম্যানও।
অন্য দিকে আইপিএলে এক ঝাঁক উইকেট পাওয়া রশিদ সারা দিনে ২৬ ওভার বল করে পেলেন একটিমাত্র উইকেট। তাঁকে পিটিয়ে টি-টোয়েন্টি মেজাজে ঝোড়ো সেঞ্চুরির (৯৬ বলে ১০৭) পরে ধওয়ন তো বলেই দেন, ‘‘সানরাইজার্স হায়দরাবাদের নেটে রশিদকে এত খেলেছি যে, ওর বিরুদ্ধে ব্যাট করতে অসুবিধাই হয়নি। আইপিএল-কে ধন্যবাদ।’’
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত দিনের শেষে ৩৪৭ রান তুলল ছয় উইকেট খুইয়ে। ধওয়ন-ধমাকার প্রথম সেশনের শেষে ভারতের স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছিল ১৫৮-০। দিনের শেষ সেশনে তাদের ৬৩ রানে পাঁচ উইকেট পড়ে যাওয়াকে আফগানদের ঘুরে দাঁড়ানো বলা যেতেই পারে। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে থাকা ভারতের ব্যাটিংয়ে হঠাৎ এই ধস নামা অল্প হলেও বিস্ময়কর বই কি।
বেঙ্গালুরুতে তাঁদের জীবনের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন আফগান বোলাররা ৫২টি চার ও চারটি ছয় হজম করলেও শেষ সেশনে যে দাপট দেখালেন, তার প্রশংসা করতেই হবে। কিন্তু ভারতের দুই ওপেনারের সেঞ্চুরি হয়ে যাওয়ার পরে তাঁদের পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছোড়া এই টেস্টে শেষ পর্যন্ত কতটা কাজে লাগে, সেটাই দেখার।
ধওয়নের মতো না হলেও এ দিন টেস্ট ওপেনারসুলভ সেঞ্চুরিই দেখা যায় মুরলী বিজয়ের ব্যাটে। যাঁর ১০৫ রানের ইনিংস দলকে ক্রমশ বড় রানের দিকে নিয়ে যায়। সঙ্গ দেন কে এল রাহুল, যিনি ৫৪ রান করে দলকে আরও কিছুটা এগোতে সাহায্য করেন। তিন ওপেনারের দাপটেই ভারত এত দূর এগোতে পারল। পরের ব্যাটসম্যানরা, যাঁদের টেস্ট বিশেষজ্ঞ বলে ডাকা হয়, সেই চেতেশ্বর পূজারা (৩৫), অজিঙ্ক রাহানেরা (১০) হতাশা দিয়েই ফিরে গেলেন মুজিব-উর-রহমান ও রশিদকে উইকেট দিয়ে। তাও শেষ সেশনে একটা ক্যাচ পড়েছে। না হলে ভারত হয়তো আরও একটা উইকেট খুইয়ে দিনের শেষে মাঠ ছাড়ত।
দিনের শেষে সাংবাদিকদের ধওয়ন বলেন, ‘‘রশিদের সঙ্গে দ্বৈরথটা আমি উপভোগ করেছি। তবে শেষ সেশনে ওদের ঘুরে দাঁড়ানোটা অবশ্যই প্রশংসাযোগ্য। ওদের যে মাঠে নেমে অনেক কিছু শেখার ক্ষমতা রয়েছে, তা ওরা শেষ সেশনেই বুঝিয়ে দিল।’’ এক সেশনে সেঞ্চুরির ভারতীয় রেকর্ড যে তিনিই প্রথম করলেন, তা নাকি জানা ছিল না ধওয়নের। ড্রেসিংরুমে গিয়ে তা জানতে পারেন।
আফগান পেসার ইয়ামিন আহমদজাই, যিনি এ দিন ধওয়ন ও রাহুলকে ফেরান, তিনি বলেন, ‘‘স্বপ্ন সত্যি হল ঠিকই, তবে শুরুটা খুব উদ্বেগের মধ্যে কাটছিল। খুব মানসিক চাপে ছিলাম। কিন্তু শেষ সেশনে সেই চাপটা কেটে যায়। উইকেটে বল ঘুরতে শুরু করার পরে আমাদের স্পিনাররা যখন উইকেট পেতে শুরু করে।’’