আইপিএলে তিনটে ম্যাচে গৌতম গম্ভীরের ব্যাটিং দেখলাম। ঘরোয়া ক্রিকেটে ও কেমন করছে না করছে, খোঁজখবর রাখলেও ব্যাটিং দেখার সুযোগ ওখানে থাকে না। কিন্তু তিনটে আইপিএল ম্যাচে যে ব্যাটিংটা করতে দেখলাম গম্ভীরকে, তা চললে কিন্তু ভারতের সীমিত ওভারের টিমে কামব্যাকের দুর্দান্ত সম্ভাবনা তৈরি করে ফেলবে ও।
কেউ কেউ আমার কথা শুনে চমকে উঠতে পারেন। অবিশ্বাস্য শোনাতে পারে। কিন্তু বলুন তো, শিখর ধবন কী খেলছে এমন? টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে দেখছি, ওর ব্যাটে কোনও রান নেই। আইপিএলে দু’টো ম্যাচ খেলল, কিছুই করতে পারল না। তা হলে কেন ওকে দিনের পর দিন টেনে যাওয়া হবে? আমি নির্বাচকদের বলছি না, তিনটে ম্যাচে গম্ভীরের ফর্ম দেখে টিমে নিয়ে নাও। কিন্তু আগামী দশটা ম্যাচেও যদি ও এ ভাবেই খেলতে থাকে, তা হলে অবশ্যই নাও। অজিঙ্ক রাহানে থাকবে, কিন্তু এমন ফর্ম চললে গম্ভীরকেও ফেলে রাখার কোনও মানে হয় না।
আমি নির্বাচক হলে কিন্তু তাই করতাম। আসলে টেকনিক সামান্য পাল্টে গম্ভীর এখন অনেক ম্যাচিওর্ড ব্যাটসম্যান। আগে দেখতাম, অফস্টাম্পের বাইরে ওর একটা দুর্বলতা আছে। মাঝেমধ্যেই অফস্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে চলে যেত। আইপিএলের তিনটে ম্যাচে কিন্তু একবারও সেটা করতে দেখলাম না। ও এখন একটু ওপেন স্টান্সে খেলছে। যে কারণে, মিড উইকেট বা কভার দিয়ে হিট করতে অসুবিধে হচ্ছে না। পুলটা ভাল মারতে পারছে। অন সাইডে ফ্লিকটাও আসছে খুব মসৃণ ভাবে। সবচেয়ে বড় কথা, গৌতম গম্ভীর এখন জানে ওর অফস্টাম্পটা কোথায়। মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে সবাই হিমসম খাচ্ছিল। গত ম্যাচে এবি ডে’ভিলিয়ার্স, বিরাট কোহালিও আক্রমণ করতে পারেনি। গৌতম সেখানে ওকে দারুণ খেলল।
দেখুন, ছেলেটার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের কোনও অভাব কখনও আমি দেখিনি। ভারতীয় টিমের হয়ে যখন খেলত, একটা সময় তো দেখে মনে হত যে ওকে আউট করাই সম্ভব নয়! কিন্তু পরে অফস্টাম্পের বাইরে কিছু সমস্যা বাড়তে থাকায় টিম থেকে বাদ পড়ল। কিন্তু এখন আর সেটা নেই। জানি যে ওর ঘরোয়া মরসুম এ বার তেমন ভাল যায়নি। কিন্তু আইপিএলে যদি একবার ও টানা ভাল খেলতে থাকে, নির্বাচকরা পারবে না ওকে উপেক্ষা করতে। তবে ওটাই। ওকে টানা ভাল খেলতে হবে। অনেককেই বলতে শুনলাম, গম্ভীর এখন পুল শটটা দারুণ মারছে। ঠিক কথা। তবে ওর পুলটা নিয়ে নিজের চূড়ান্ত রায় আমি এখনই দেব না। কারণ তেমন আগুনে পেসার এখনও ও খেলেনি। একটা ডেল স্টেইন বা মিচেল জনসনকেও গম্ভীর একই ভাবে পুল মেরে ফেলে দিতে পারলে, তখন বলব। যা-ই হোক, নিজের মতামত বললাম। এ বার নির্বাচকদের ব্যাপার। জানি না তাঁরা শিখর-সমস্যার সমাধানে কী ভাবছেন। এটাও জানি না যে, তাঁরা সামনে এগোতে চাইবেন নাকি পিছনেও দেখবেন। শুধু এটুকু বলব, যদি ছেলেটা গোটা আইপিএলে এমন খেলে, সত্যিই যদি ওকে আগাগোড়া এতটাই ইমপ্রুভড ক্রিকেটার লাগে, যতটা আজ লাগছে, তা হলে একটু পিছনে হেঁটেও দেখা যেতে পারে। সব সময় পিছনে হাঁটলে যে খারাপ হয় না, তার উদাহরণ তো হাতের সামনেই আছে।
আশিস নেহরা!
আরও পড়ুন:
আইপিএলের সময়সূচি
আইপিএলের পয়েন্ট টেবল